আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ রোববার শেষ হলো ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার এবারের আসর। মাঠে জায়গা না হওয়ায় আশপাশের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন অনেক মুসল্লি। টঙ্গীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, ময়দানের আশপাশ এলাকার বিভিন্ন বাসার ছাদে মুসল্লিরা অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে মাওলানা সাদের বড় ছেলে ইউসুফ বিন সাদ আখেরি মোনাজাত শুরু করেন। আরবি, হিন্দি ও উর্দুতে মোনাজাত পরিচালনা করেন তিনি। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ৩০ মিনিটের এই মোনাজাতে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা, আত্মশুদ্ধি ও নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দেশের কল্যাণ, দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি কামনা, মুসলমানদের ইমানি শক্তি বৃদ্ধিসহ বিশ্ব ইজতেমাকে কবুলের জন্য দোয়া করা হয়। মুসল্লিদের কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমিন-আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে ময়দান ও আশপাশের এলাকায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজতেমার মাঠে জায়গা না থাকায় বিভিন্ন সড়কে বসে পড়েন মুসল্লিরা। টঙ্গীর মন্নু গেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী বাজার থেকে স্টেশন রোড, আব্দুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া সড়কে মুসল্লিরা অবস্থান নেন। তাঁরা জায়নামাজ, চাদর ও পাটি বিছিয়ে সড়কে বসে পড়েন। এ ছাড়া টঙ্গীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, ময়দানের আশপাশের এলাকায়, বাসার ছাদে মুসল্লিরা অবস্থান করে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
ফজরের নামাজের পর বয়ান করেন ভারতের মুরুব্বি মুরসালিন। পরে বেলা ১০টার দিকে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ হেদায়েতি বয়ান শুরু করেন। বয়ান অনুবাদ করেন মাওলানা আব্দুল্লাহ মনসুর।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়কারী মো. সায়েম বলেন, ‘আজ আখেরি মোনাজাতে ১২ থেকে ১৩ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটেছে। স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে ময়দান থেকে দুই-তিন কিলোমিটার দূরত্বে মাইকের ব্যবস্থা করেন।’
সাভার এলাকা থেকে ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে কামারপাড়া এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন কামরুজ্জামান সেলিম। তিনি বলেন, ‘দুই বছর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই বন্ধুদের নিয়ে সকালেই এসেছি মোনাজাতে। পেপার বিছিয়ে বসেছি। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তিনি নিশ্চয়ই আমাদের ক্ষমা করে দেবেন।’
আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে গত ২০ জানুয়ারি শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের সমাপ্তি ঘটল। তবে আগামী বছর বিশ্ব ইজতেমার ৫৭তম আসরের তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।
বার্তা কক্ষ, ২২ জানুয়ারি ২০২৩