সারাদেশ

স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ৭০ ভাগ রোগীই মারা যায়

অসচেতনতা ও  লোকলজ্জায় দেশে প্রতি বছর নতুন করে ২২ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৭০ % রোগী বিনা চিকিত্সায় মারা যাচ্ছেন। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তদের ৮৯ % বিবাহিত। যাদের গড় বয়স ৪১ বছর।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,স্তন ক্যান্সারের বিভিন্ন ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং রোগী শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়াসহ এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পারলে ৯৯ % রোগীকেই সুস্থ করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন একটি জাতীয় নীতিমালা ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে সম্পৃক্ত করা। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর ) ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উপলক্ষে পালিত হয় নানা কর্মসূচি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, কেবল সচেতনতার অভাবেই দেশে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা বাড়ছে। যখন চিকিত্সায় সুস্থ হওয়ার আর তেমন কোনো সম্ভাবনা থাকে না । তখন তারা চিকিত্সকের কাছে আসেন। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগটি নির্ণয় করতে পারলে ৯০% নিরাময় করা সম্ভব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সাবেরা খাতুন বলেন, ‘ গ্রামের নারীরা সচেতন হয়েছে কি-না, এটা দেখার বিষয়। আমাদের দেশে স্তন ক্যান্সার রোগীদের গবেষণা নেই, গবেষণা করে জানতে হবে ।আমাদের চিকিত্সায় রোগী শতকরা কতজন সুস্থ হচ্ছে । ২০১৩ সাল থেকে সচেতনতা বিষয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু এটা কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে।  সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমকে ছোট ছোট গল্পের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন করার পরামর্শ দেন।’

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এহেতাসামুল হক বলেন,‘ ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, লজ্জা ও সচেতনতার অভাবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া খাদ্যাভাস, বয়স, ওজনাধিক্য, দীর্ঘদিন ধরে হরমোনের ওষুধ সেবনও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।’

তিনি বলেন, ‘স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণে নারীরা নিজেই বড় পরীক্ষক। প্রতিবার ঋতস্রাবের ৩ থেকে ৪ দিন পরই নারীরা নিজ স্তন পরীক্ষা করে এ সম্পর্কে অবগত হতে পারেন। কোনো সমস্যা মনে হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে, স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।’

বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম প্রধান সমন্বয়কারী ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ‘আমাদের দেশে সচেতনতার অভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেক দেরিতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এ কারণে চিকিত্সায় রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এ রোগের বিভিন্ন ঝুঁকির বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে পারলে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।’

নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:১০ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০১৭,মঙ্গরবার
এজি

Share