পাখিটির নাম রেড-ব্রেস্টেড বার্ড। এরা তাদের লাল বুকটি অদ্ভুতভাবে ফুলিয়ে রাখে। আরো অদ্ভুত তাদের স্বভাব। এরা দীর্ঘ পথ ওড়ার সময় আকাশে ভাসতে ভাসতে দিব্যি ঘুমিয়ে পড়ে। নিজেদের এই ‘অটোপাইলট মোড’-এ ছেড়ে দিয়ে তাদের উড়তে কোনো সমস্যাই হয় না।
বিজ্ঞানীরা জানান, রেড-ব্রেস্টেড টানা দুই মাস পর্যন্ত উড়তে পারে। প্রতিদিন গড়ে ৪১ মিনিট ঘুমিয়ে নেয় তারা। প্রায় ১৪টি রেড-ব্রেস্টেড বার্ড পরীক্ষা করে তারা এসব তথ্য দেন।
তন্দ্রাচ্ছন্নতায় তারা ডুবে যায় খুব অল্প সময়ের জন্য, প্রতিবারে ১২ সেকেন্ড করে। সাধারণত মস্তিষ্কের অর্ধেকটা তারা এ কাজে ব্যয় করে। অনেক সময় অবশ্য মস্তিষ্কের উভয় অংশ ব্যবহার করে তারা।
জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর অর্নিথোলজিস্ট নিলস র্যাটেনবর্গ জানান, অনেকের মতে তাদের ঘুম অর্ধেক মস্তিষ্কের ব্যবহারে ঘটে। নয়তো তারা আকাশ থেকে সোজা মাটিতে পড়বে। আসলে তা ঘটে না। তারা পুরোপুরি ঘুমিয়ে যায় এবং এ ঘুম নিরবচ্ছিন্ন থাকে।
বাতাসের তরঙ্গের সঙ্গে মানিয়ে নিজেদের গুছিয়ে ওড়ার সময় স্বল্প পরিসরের এই ঘুম ঘুমিয়ে নেয় পাখিগুলো। কারণ তখন পাখার ব্যবহার তেমনটা ঘটে না।
চোখের সঙ্গে জুড়ে থাকা মস্তিষ্ক তাদের ওড়ার পথ নির্দিষ্ট রাখে। এর ব্যবহারেই তারা সজাগ থাকে। তবে সব সময় এই মস্তিষ্ক জাগিয়ে রাখার প্রয়োজন পড়ে না।
র্যাটেনবার্গ আরো জানান, এই পদ্ধতিতে ঘুমানোর কারণে তাদের একসঙ্গে ওড়ার সময় নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ লাগে না। ঘুমানোর সময় নিজেদের নিরাপদ রাখার বিষয়ে এই পাখির বিশেষ বৈশিষ্ট্য আরো বেশি গবেষণা করতে হবে।
এর মাধ্যমে হয়তো মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর ঘুম সংক্রান্ত জটিলতাগুলো আরো পরিষ্কার করা যাবে। তবে সমুদ্রের ওপর দিয়ে ওড়ার সময় তারা এ কাজ করতে পারে না। কারণ তাদের পাখনা পানি প্রতিরোধী না। তবে স্থলে থাকাকালীন তারা দিনে ১২ ঘণ্টা ঘুমায়।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:০০ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ