চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :
মন্ত্রিসভার আকার বাড়ছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের কেউ কেউ বলছেন, মঙ্গলবার বিকেলে নতুন সদস্যরা শপথ নিতে যাচ্ছেন।
সূত্র বলছে, অনেক দূর প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সূত্রটি আরো বলছে, নতুনদের শপথের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদের সরকারের বর্তমান মন্ত্রিসভায় কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। রদবদল হতে পারে দায়িত্ব।
মন্ত্রিসভায় রদবদলের দায়িত্বটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তাই এ ব্যাপারে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, পরিবর্তন আসছে। আপনাদের প্রেস রিলিজ দিয়ে জানানো হবে এবং আমাদের ওয়েব সাইটেও থাকবে।
অন্য একটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে নতুন যারা স্থান পাবেন তাদের তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছেন।
সম্ভাব্য ছয় মন্ত্রীর তালিকায় আছেন, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, নুরুল ইসলাম বিএসসি, ডা. দীপু মনি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অভিনেত্রী তারানা হালিম ও আলাউদ্দিন নাসিম।
এর বাইরে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়াও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং ফজলে নূর তাপসও শেষ পর্যন্ত স্থান পেতে পারেন কেবিনেটে।
মন্ত্রিপরিষদের তালিকায় নামের সম্ভাবনা থাকায় সোমবার সন্ধ্যায় নুরুল ইসলাম বিএসসি চট্টগ্রামের স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন।
বর্তমান মন্ত্রিসভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ, স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রি নেই। এছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সরকারের নির্ভরযোগ্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মন্ত্রিসভার বর্তমান সদস্যদের কারো কারো দায়িত্ব পুনঃবন্টনও হতে পারে। বর্তমানে কয়েকজন মন্ত্রিকে নিয়ে বিতর্ক থাকার পরও প্রধানমন্ত্রী এখনই তাদেরকে বাদ দিতে চান না বলে শোনা গেছে। আরো কিছু দিন তিনি দেখতে চান। তবে দক্ষতা বিবেচনায় যে কোনো সময় বড় পরিবর্তন আসতে পারে মন্ত্রিসভায়।
টানা দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়। তখন অধিকাংশ পুরনোদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুন ও আগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মন্ত্রিসভায় আনা হয়।
একই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী আরেক দফা মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেন। ওই সময় এ এইচ মাহমুদ আলীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নজরুল ইসলামকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া ওই সময় আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী করা হয়।
এদিকে পবিত্র হজ নিয়ে মন্তেব্যের জন্য গত বছরের ১২ অক্টোবর আবদুল লতিফ সিদ্দিকিকে অপসারণ করা হয়। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সৈয়দ আশরাফকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দফতরবিহীন করা হয়।
বর্তমানে কেবিনেটে ২৯ জন মন্ত্রী, মন্ত্রীর পদর্মযাদায় প্রধানমন্ত্রীর একজন বিশেষ দূত, মন্ত্রী পদর্মযাদায় প্রধানমন্ত্রীর পাঁচজন উপদেষ্টা, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুজন উপমন্ত্রী রয়েছেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি ও তারানা হালিম রাত সোয়া ৯টার দিকে জানান, নতুন মন্ত্রীর তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। বঙ্গভবন থেকে তাদের ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। মঙ্গলবার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্যও তাদের বলা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, আলাউদ্দিন নাসিমকে মন্ত্রী করার ব্যাপারে জ্যেষ্ঠ সচিবদের আপত্তি রয়েছে।
কর্নেল (অব.) ফারুক খান সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের টিকিটে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ৩ সিটি নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। একাধিকবার আওয়মী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আলাউদ্দিন আহম্মেদ নাসিম সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। নিয়মিত দলীয় ফোরামের বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় দলীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য পদ হারান। ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দীর্ঘদিন প্রশাসনে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ সহকারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এ্যাডভোকেট তারানা হালিম পেশায় আইনজীবী হলেও অভিনেত্রী হিসেবেই জনপ্রিয় বেশি তিনি। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এই অভিনেত্রী। সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে নবম সংসদ ও দশম সংসদেও প্রশংসনীয় ভুমিকা রাখছেন।
ডা. দীপু মনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। পেশায় চিকিৎসক হলেও এক-এগারর সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। ২০০৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নবম সংসদের পুরো সময়।
ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর রাজনীতির হাতে খড়ি। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে উঠে আসেন জাতীয় রাজনীতিতে। দিনাজপুরের আসন থেকে একাধিকবার আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ১১:০৫ অপরাহ্ন, ২৮ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, সোমবার ১৩ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি