হাজীগঞ্জ

হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিতে তরুণদের ওপর নির্ভর করছে নৌকা-ধানের শীষের জয়

চাঁদপুর-৫ হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি আসনে এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী পুরুষসহ মোট ভোটার ৪ লাখ ৮ হাজার ৩’শ ৫০ জন। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ ৫ হাজার তরুণ প্রজন্মের ভোটারের উপর আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র প্রার্থীদের জয় পরাজয়ের ভাগ্যে নির্ধারনের আবাস পাওয়া যায়।

নতুন ভোটারদের চাওয়া পাওয়ার দাবি মিঠাতে যে দল সমর্থন পাবে সে দল নির্বাচিত হবে বলে আবাস পাওয়া যায়। তবে গত ১০ বছরে বিএনপির তুলনায় নতুন প্রজম্মের ভোটের পাল্লা ভারি দেখা যাচ্ছে নৌকা প্রতীকের।

সৃত্রে জানা যায়, এই আসনের দুই উপজেলায় মোট ২২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮হাজার ৩ শত ৫০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫ হাজার ১শত ৩১ জন, মহিলা ২ লাখ ৩ হাজার ২শত ১৯ জন। এবার উভয় উপজেলায় ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার নতুন ভোটার। এর মধ্যে নতুন প্রজম্মের ভোটার সংখ্যা বেশি। তবে কত বেশি তা কোন দলের কাছে র্নিদিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নাই।

গভীর পর্যবেক্ষণ করছে নতুন ভোটাররা। নতুন প্রজন্মের ভোটাররা বলছেন যে ক্লীন ইমেজের ব্যক্তি, যার দ্বারায় এলাকার উন্নয়ন হবে, আইন শৃঙ্খলা স্থিতিশীল থাকবে, বেকারত্ব দূরীকরণে শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের কর্মস্থান হবে, উপজেলাকে বাণিজ্যিক ও শিল্পয়ানে রূপান্তর, নারীদের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করা এবং বিভিন্ন কর্মমুখী প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ জনশিক্ত গড়ে তোলবে যে সেই নতুন প্রজম্মের ভোটারদের সমর্থন পাবে।

নিরব ভোটাররা বলছেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বিএনপি জামায়াত ও কিছু বিপথগামী পুলিশ সদস্যের হামলা মামলার শিকার হয়ে ভয়ে ঘরে থাকতে পারে নাই। উভয় উপজেলার কিছু কিছু এলাকার আওয়ামী সমর্থক ও নিরব ভোটাররা আজও ভুলতে পারে নাই সেই নির্যাতনের কথা।’

অপরদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য বলেন, ‘২০০১ সালে যুদ্ধাপরাধি জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসে আমার নির্বাচনী এলাকায় যে হীন কর্মকান্ড চালিয়েছে তা জনগণ আজও ভুলে নাই। মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে নতুন প্রজন্মের হাতে একটি লাল সবুজের পতাকা তুলে দিয়ে ছিলাম। সেই পতাকা যুদ্ধাপরাধিদের গাড়িতে উড়াতে দেখে সে দিন আমরা বাঙ্গালি হিসেবে পরিচয় দিতে সাহস পাইনি। আমার আসনে স্বাধীনতার পর যা উন্নয়ন হয়নি তা গত ১০ বছরে চারগুন উন্নয়নমুলক কাজ করেছি।’

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন মেজর রফিক। সেই সাথে এই আসনে আওয়ামীলীগ শতভাগ জয়ের নিশ্চিত বলে অনেকে ধারণা করছেন।

অপর দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপির ধানের শীর্ষ প্রার্থী লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক সম্প্রতি হাজীগঞ্জে তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার দলের ৬০/৬৫ জন নেতাকর্মী পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দড়পাকড়ের কারণে থমকে গেছে আমার গণসংযোগ। আমার নেতাকর্মীদের গণসংযোগ করতে দিচ্ছে না। নেতাকর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে দিক-বেদিক পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমাকে নেতাকর্মী শূণ্য করে খোলা মাঠে গোল দিতে চায় প্রতিপক্ষ। তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আর কারাবন্দী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ধানের শীর্ষ প্রতীকে ভোট চাইছেন।’

গত ১০ বছরে মামলা হামলার ঘটনা ঘটলেও বিএনপি এ আসনে জয়ের জন্য গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানায়।

অপর দিকে এ আসনে অওয়ামীলীগ ১৯৭৩, ৮৬, ৯৬, ২০০৮, ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলো এবং বিএনপি ১৯৭৯, ১৯৯১, ২০০১ ও ২০০৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী নির্বাচনে ১৬দিন জন্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলো।

এছাড়া ১৯৮৭ সালে জাতীয় পার্টি একবার সংসদ সদস্যর সাধ পেয়ে ছিলো। স্বাধীনতার পর এ আসনে আওয়ামীলীগ ৫ বার, বিএনপি ৪ বার জাতীয় পার্টি ১বারসহ মোট দশটি সংসদীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বেশী সময় ছিলো।

প্রতিবেদক:জহিরুল ইসলাম জয়
২৬ ডিসেম্বর,২০১৮

Share