হাজীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা পণ্ড

হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা পন্ড হয়ে গেছে।

২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শুরু হয়। সভা শুরুতে উপস্থিত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা সম্প্রতি ঘোষিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূণাঙ্গ কমিটির তালিকা দেখতে চায়।

এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তাহের এবং সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন মিয়াজী পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে।

এরপর স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলামকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় কটাক্ষ করায় বর্ধিত সভায় আবু তাহের মিয়াকে সভাপতিত্ব করার বিষয়ে আপত্তি জানায় ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধারা এবং তৃণমুল নেতাকর্মীরা।

এতে হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। সভার শুরুতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে সভাস্থলে প্রবেশ করলে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এর পর জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্ত করার চেষ্টা করে।

এক পর্যায়ে বর্ধিত সভা স্থগিত করে সভাস্থল ত্যাগ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দিন।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তবদীল হোসেন বলেন, এই কবির জাতীয় পার্টি থেকে এসেছে। সে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে আসার পর প্রকৃত মজিব প্রেমী, ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং মুকিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করে। বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের ভাড়া করে এনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। তাহের কবির কিভাবে একজন সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে আজে-বাজে মন্তব্য করার সাহস পায়। তাকে এর জবাব দিতে হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন একজন লোক ইউপি চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগের দলীয় পদে থেকে এমপি মহোদয়কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। সে আওয়ামী লীগের কমিটিতে কাদের রেখেছে কেউ জানে না। বড়কুল ইউনিয়নের জনগণ তারমত একজন জনপ্রতিনিধি বার বার প্রত্যাখান করেছে।’

বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা দিতে হবে। বর্ধিত সভা না দিয়ে যদি কোন ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে তা নেতাকর্মীরা মেনে নিবে না।

হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হাজী জসিম উদ্দিন বলেন, এ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের একাধিক মামলার আসামী, সে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে থানার দালালি করে। ইউপি চেয়ারম্যান কবির আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সে ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ করে। ভাতার বই পেতে দেওয়া টাকা ফেরৎ চাওয়ার প্রতিবন্ধীকে হত্যা করে তার সহযোগীর কাউছার। এ কাউছার প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে হত্যা করার পর বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দিনের বাসায় আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । সে এমপি মহোদয়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা ও নেতাকর্মীরা তাকে প্রত্যাখান করেছে।

হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহম্মদ খসরু বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কারণে তা তৃণমূল নেতাকর্মীরা মেনে নেয়নি। তারা সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে বর্ধিত সভা শুরু করার কথা বলেন। এ বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আমলে না নিয়ে বর্ধিত সভা স্থগিত করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ রোটা. আহসান হাবীব অরুন বলেন, সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপিকে নিয়ে মন্তব্য করায় সভাপতি তাহের এবং সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কবিরকে নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারেনি।

স্টাফ করেসপন্ডেট

Share