নির্বাচনের আগে কোন্দল মেটানোর উদ্যোগ আ’লীগের
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে ফেলার ওপর জোর দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে যে সব জেলা-উপজেলায় কোন্দল রয়েছে সেসব জেলা-উপজেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনের জন্য দলকে প্রস্তুত করতে দলের নীতি-নির্ধারকরা এই মুহূর্তে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সারা দেশে বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল, গ্রুপিং রয়েছে। এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল দ্রুত মিটিয়ে ফেলা সম্ভব না হলে আগামী নির্বাচনে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে আওয়ামী লীগের জন্য সমস্যা হতে পারে বলে দলের ওই নীতি-নির্ধারকরা মনে করছেন। এ কারণেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে বৈঠক করেছেন। জেলার পাশাপাশি তিনি যে সব উপজেলায় সমস্যা রয়েছে সে সব উপজেলার নেতাদেরও ডেকে বৈঠক করবেন। দলের সাধারণ সম্পাদকের চেষ্টায় সমস্যা সমাধান না হলে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাদের ডেকে বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে।
গত মাসে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের পর অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোয় মনোযোগী হয় ক্ষমতাসীন দলটি। ওই নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরাজমান কোন্দলের কারণেই দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন বলে দলের মূল্যায়ন। নির্বাচনের সময় দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামানোর চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই সারা দেশে যে সব জায়গায় দলের অভ্যন্তরে কোন্দল, গ্রুপিং রয়েছে তার কারণগুলো চিহ্নিত করে কোন্দল মিটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।মাহবুব উল আলম হানিফ ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (পুরনো ছবি)আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের যে সব জেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে ওই সব জেলার নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছেন। গত ২৩ এপ্রিল থেকে তিনি দলের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জেলার নেতাদের ডেকে কথা বলছেন ও কোন্দলের কারণ চিহ্নিত করছেন।
ইতোমধ্যে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, সাতক্ষীরা, নীলফামারী জেলার নেতাদের ডেকে বৈঠক করেছেন। শুধু জেলা নয়, জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে যে সব উপজেলায় কোন্দলের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সেখানকার নেতাদেরও ঢাকায় ডেকে বৈঠক করবেন ওবায়দুল কাদের। যশোরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ওই জেলার ৯টি উজেলায় সমস্যা চিত্র উঠে আসে। আগামী ৭ ও ৮ মে ওই উপজেলাগুলোর নেতাদের ঢাকায় ডেকেছেন তিনি। এর মধ্যে ঝিকরগাছা, র্শাশা, চৌগাছা, কেশবপুর উপজেলার নেতাদের সঙ্গে ৭ মে এবং যশোর সদর, পৌরসভা, অভয়নগর, মনিরামপুর ও বাঘারপাড়া উজেলার নেতাদের সঙ্গে আগামী ৮ মে বৈঠকে বসবেন সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিরোধপূর্ণ এলাকার নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। এ লক্ষ্যে তিনি আগামী নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরুর আগেই জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নেতাদের ডেকে বৈঠক করে কোন্দল মিটিয়ে ফেলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, যেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে সেগুলো মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। নেতাদের ঢাকায় ডেকে কথা বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা এলাকাগুলোতে গিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।
সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যেখানে সমস্যা আছে সেটা মিটিয়ে ফেলার জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কর্মীসভা, বর্ধিত সভা, সমাবেশ করা হচ্ছে। এগুলো আরও বাড়ানো হবে। এর উদ্দেশ্য হলো নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকে নিয়ে যাওয়া।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময়০৯:৫৫ এ.এম, ৩০ এপ্রিল ২০১৭,রবিবার
ই.জু
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur