Saturday, 25 July, 2015 05:16:15 AM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
‘এ দেড় ফুটিয়া’, ‘বাসের হ্যান্ডেল ধরবি কি করে, আয় আমার হাতটা ধর’, এমন না জানি আরও কত কি শুনতে শুনতে বড় হয়েছেন হিমাংশু। তবে মানুষের বহিরঙ্গ দেখে সেই ব্যক্তির সম্পর্কে মন্তব্য করা বা ধারণা করে নেওয়ার যে বদ অভ্যাস তার মুখে ঝাঁটা মেরেছেন ইনি।
আজ হিমাংশু বক্সির পরিচয় একজন আইনজ্ঞ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, একজন জাতীয় স্তরের তার্কিক এবং বিভিন্ন নামী সংবাদপত্রের কলামিস্ট। হিমাংশুর মতো মানুষ যে কত লাখো মানুষের বাঁচার প্রেরণা জোগাতে পারে তা ওঁর জীবনের ঘটনা শুনলেই বুঝতে পারবেন। হিমাংশু বলেন, ‘এখনও বাড়ি থেকে বেরলে অনেক মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন। এই তো সে দিন এক শিক্ষিত মহিলা আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে তাঁর ছেলেকে বলছিলেন ঠিক করে না খেলে সেও আমার মত হয়ে যাবে।
এগুলো শুনে এখন আর আলাদা করে কষ্ট হয় না। শুধু ভাবি শিক্ষাটা খালি মার্কশিট নাকি তার অন্য কোনও সংজ্ঞা আছে!’ হিমাংশু বামনত্ব রোগে আক্রান্ত। এ দেশে প্রতি ২৫ হাজার লোকের মধ্যে একজন এই রোগের শিকার। তবে এর জন্য তিনি কোনও দিনই নিজেকে ছোট মনে করেননি। মহাত্মা গান্ধীর একটি কথা সব সময় মনে রাখতেন হিমাংশু— শক্তি কখনও শরীর থেকে আসে না, এটা আসে অদম্য ইচ্ছাশক্তি থেকে।
এই কথাকে হাতিয়ার করে একের পর এক পরীক্ষায় অত্যন্ত ভালো রেজাল্টের সঙ্গে পাশ করেন তিনি। হিমাংশুর কথায়, ‘বাবার খুব ইচ্ছা ছিল আমায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে দেখবেন, কিন্তু সেটা আর পূরণ হল না। কিছু দিন আগেই তাঁকে হারিয়েছি। তবে মা আমার জীবনের সব থেকে বড় ভরসা। চিরকাল আমায় সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন, যে কোনও অবস্থায় আমার পাশে থেকেছেন।’ কথায় আছে ঈশ্বর যদি একহাতে কিছু নিয়ে নেন, অন্য হাতে ফেরতও দেন। যেমনটা দিয়েছেন হিমাংশুকে।
এ মুহূর্তে হিমাংশু দেশের সেরা চার সংস্থার অ্যাকাউন্ট সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন। দেশের প্রচুর সেলিব্রিটির কাছ থেকে অনেক পুরস্কার নিয়েছেন। তার মধ্যে প্রয়াত গায়ক জগজিত্ সিং-ও রয়েছেন। অনেক এনজিও এবং মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা হিমাংশুকে ডাকেন তাঁর জীবনের কাহিনি শোনানোর জন্য। আজ বহু মানুষকে বাঁচার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে হিমাংশুর কাহিনি। (কলকাতা 71)
চাঁদপুর টাইমস : ডিএইচ/২০১৫।
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।