চাঁদপুর

চাঁদপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদিত সেমাইয়ের উপর পড়ে আছে তেলাপোঁকা

বিএসটিআইসহ কোন ধরণের অনুমতি ছাড়াই চাঁদপুরে বেশ কয়েকটি সেমাই কারখানায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সেমাই তৈরী করে আসছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিলেও কোনভাবেই তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসকরা বলছেন এই ধরণের খাদ্য গ্রহনে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী কেন্দ্র পুরান বাজার ও সদর এলাকায় বহু বছর আগ থেকেই বেকারী ব্যবসায়ীরা দুই ঈদ উপলক্ষ্যে সেমাই উৎপাদন করেন। কিন্তু তাদের এসব সেমাই উৎপাদনে বিএসটিআইসহ খাদ্যের গুনগত মান যাচাই ছাড়াই এখন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যস্ত সময় পার করছে। কারখানাগুলোতে উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত ময়দা, চিনি, ডালটা, ভোজ্য তেল, এরারুট ও লবন ইত্যাদি খুবই নিম্নমানের। বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা সেমাইগুলোর অধিকাংশ নোংড়া ও পোকা মাকড় পড়ে আছে।

১৯ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সরেজমিন শহরের পুরান বাজার রয়েজ রোড পাঁচতারা, আলম বেকারী, নিতাইগঞ্জ রোডে রূপালী সেমাই, ভুঁইয়ার ঘাটে প্রাইম, মৈশাদী হারুন বেকারীসহ বেশ কয়েকটি সেমাই কারখানার শ্রমিকরা কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দিন ও রাতে কাজ করে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের হাতে গ্লাবস, মুখে মাস্ক ও পায়ে প্লাস্টিক গামবুট থাকার কথা থাকলেও কোন কিছুই নেই। অধিকাংশ কারখানায় শ্রমিকরা ঝড়ো হয়ে উৎপাদন কাজ করতে হচ্ছে। আর এসব উৎপাদিত সেমাই চাঁদপুর জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে মার্কেটে বাজারত হচ্ছে। নোংড়া পরিবেশের বিষয়ে কারখানার মালিক ও শ্রমিক কথা বলতে নারাজ।

বাস্তবে সেমাই কারখানাগুলোতে অস্থাস্থ্যকর ও নোংড়া পরিবেশ থাকলে তা স্বীকার করছে না মালিক পক্ষ। পুরান বাজারের কারখানার শ্রমিক সেলিম, মাসুদ ও বিল্লাল বলেন, তারা সারাদিন কাজ করার পরে কারখানাগুলো পরিস্কার করে রাখেন। লকডাউনের কারণে আগের চাইতে এখন সেমাইর চাহিদা কমে আসছে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাইসহ যে কোন খাদ্য উৎপাদন হয়। কারণ এসব কারখানায় পোড়া তেলসহ নিম্নমানের উৎপাদন সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। যেগুলো খেলে গ্যাস্টিক, আলসার, আমাশয়, পাতলা পায়খানাসহ ক্যান্সারও হতে পারে। তাই এই ধরণের খাদ্য বর্জন করাই উত্তম।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরী হচ্ছে এমন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষনিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট,১৯ এপ্রিল ২০২১

Share