যুবককে প্রথমে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো একটি বাড়িতে। এরপর আগে থেকেই সাজানো বিয়ের মঞ্চে বসিয়ে তার দিকে তাক করা হলো পিস্তল। জোর করে তাকে পড়ানো হতে থাকলো বিয়ে। জোরপূর্বক এ বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে শুরু হলো মারধর। কেঁদে-কেটে মূর্চ্ছা যাওয়ার অবস্থা হলেও মিললো না রেহাই তার। বিয়ে করতেই হলো।
একেবারে ফিল্মি কায়দায় জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানোর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। এই ‘জোরপূর্বক বিয়ের শিকার’ বিনোদ কুমার নামে ২৯ বছর বয়সী এক প্রকৌশলী। গত মাসের ঘটনাটি ভিডিও আকারে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) আলোচনার ঝড় তুলেছে সংবাদমাধ্যমে।
বিহারের রাজধানী পাটনার পাঁদারাক এলাকার ঘটনাটির বিষয়ে সংবাদমাধ্যম বলছে, জোর করে বিয়ে পড়ানোর সময় ওই প্রকৌশলী কান্নাকাটি করে তাকে ছেড়ে দিতে বললেও ‘কনেপক্ষের’ লোকজন তাকে মারপিট করে। কনের একজন নিকটাত্মীয় সেসময় পিস্তল তাক করে রাখে বিনোদের দিকে। ভিডিওতে কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা তো তোমাকে ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছি না, বিয়ে দিচ্ছি।’
৩ ডিসেম্বর বিনোদ বাড়ি ফিরছিলেন না বলে দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যান তার ভাই সঞ্জয়। পরে একটি ফোন থেকে কল দিয়ে বলা হয়, বিনোদ বিয়ে করছেন।
সঞ্জয় জানান, পাটনার কাছে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল বিনোদের। কিন্তু ওই কনের ভাই বিনোদকে জোর করে মোকামা নামে একটি এলাকায় নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় পাঁদারাকে।
এ নিয়ে পাঁদারাক থানায় ফোন দিলে তারা জানান, ঘটনা যেহেতু মোকামা থানা এলাকায় ঘটেছে, সেহেতু সেখানে যোগাযোগ করতে হবে। পরে সঞ্জয় সরাসরি পাটনা পুলিশের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার নির্দেশনায় স্থানীয় পুলিশ বিনোদকে একটি বদ্ধঘর থেকে ছাড়িয়ে আনে।
পাটনা পুলিশের প্রধান (এসপি) অমরকেশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করছি।’
অবশ্য কিছু সংবাদমাধ্যম কনেপক্ষের লোকজনের বরাত দিয়ে বলছে, বিনোদ আগে থেকেই কনেপক্ষের কেঁদে-কেটে মূর্চ্ছা যাওয়ার অবস্থা হলেও বিয়ে থেকে রেহাই মিললো না বিনোদের পরিচিত। কিন্তু বিয়েতে প্রথমে মত দিলেও পরে তিনি মত পাল্টে ফেলেন।
ভারতে জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা বিরল নয়। ২০১৬ সালে দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার পাত্র অপহরণ করে বিয়ে পড়ানোর ঘটনা রেকর্ড করা হয়।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:৩৩ পিএম, ৫ জানুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার
ডিএইচ