অস্ট্রেলিয়াকে মোকাবেলায় অন্য এক অনুপ্রেরণা কাজ করছে এখন টিম বাংলাদেশে। টেস্ট স্কোয়াডে যারা রয়েছেন, তাদের কেউই টেস্ট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে মোকাবেলার সুযোগ পাননি। বিগত দুই সিরিজে যারা খেলেছিলেন তাদের মধ্যে মাশরাফি বিন মর্তুজা রয়েছেন। মোহাম্মদ আশরাফুল ও শাহাদাত হোসেন রাজিব রয়েছেন, যারা এখনো খেলার সাথে যুক্ত। বাকিরা ছেড়ে দিয়েছেন ক্রিকেট। ফলে মুশফিকুর রহীমের দলের যেন তর সইছে না।
তা ছাড়া হোমে এর আগে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সিরিজটা ১-১ ড্র হলেও আরেক ম্যাচেও ফ্রন্টফুটেই ছিল বাংলাদেশ। ফলে এবারো সে আমেজটা কাজে লাগাতে চান তারা।
টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘প্রথমত আমি বলব, অস্ট্রেলিয়া তাদের অভ্যন্তরীণ ঝামেলা মিটিয়ে আসছে- এ খবর পাওয়ার পর থেকেই অন্যরকম এক অনুভূতি জেগেছে। দলের সবাই রোমাঞ্চিত। অস্ট্রেলিয়াই তো বাকি। ওদের সাথে আমরা টেস্ট ম্যাচ খেলব এটা বড় একটা ব্যাপার। সবাই জানে অস্ট্রেলিয়াকে মোকাবেলা কঠিন। তবে আমরাও তাদের অনেক চাপে রাখতে পারব, যেমনটা ইংল্যান্ডকেও রেখেছিলাম। তা ছাড়া সবাই শক্তিশালী ওই দলটির বিপক্ষে বড় চ্যালেঞ্জটা নিতে প্রস্তুত।’
হোমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল টার্নিং উইকেট। কারণ হোম অ্যাডভান্টেজটা সব দলই নেয়। বাংলাদেশও এখন নিতে শিখেছে। এ সিরিজেও তেমন উইকেটই চান তিনি। কারণ হোমে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে মোকাবেলার করার জন্য যথেষ্ট হাতিয়ারও রয়েছে। ফলে টার্নিং উইকেটটা তিনি অবশ্যই চাইবেন!
তিনি বলেন, ‘দেশের মাটিতে যখন খেলছি। এর আগেও একটু আধটু সহায়তা পেয়েছি। তবে সেগুলো সেভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ ছিল না। এখন আমরা কন্ডিশন ব্যবহারে বেশ সতর্ক। গত দুই-তিন বছর কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে সফলতা আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের এ আত্মবিশ্বাসটা রয়েছে যে, আমাদের দিনে অস্ট্রেলিয়া কেন যেকোনো পরাশক্তিকেও আমরা সুযোগ দেই না।’
নিজেদের শক্তিমত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলে এখন প্রতিভাবান বোলার রয়েছে, কিছু ব্যাটসম্যান, অলরাউন্ডার আছে। যেটা অস্ট্রেলিয়াকে মোকাবেলার জন্য খুবই প্রয়োজন। অভিজ্ঞতাও রয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের দলের যে অবস্থা, তাতে অস্ট্রেলিয়াকে মোকাবেলার জন্য এখনই পারফেক্ট সময়। প্রয়োজন একটাই, সেটা সূচনা ভালো করা। আর সেটা হলে দলের আত্মবিশ্বাসটা তুঙ্গে থাকে। আমার প্রত্যাশা সিরিজ পর্যন্ত সবাই যেন সুস্থ থাকেন।’
বসে নেই অস্ট্রেলিয়াও। তাদের দলেও নেয়া হয়েছে তিন স্পিনার। সর্বশেষ নেয়া হয়েছে মিচেল সোয়েপসনকে। মুশফিক বলেন, ‘ওরা স্পিনার বেশি নিয়েছে, কারণ হয়তো শেষ সিরিজে দেখেছে কেমন উইকেটে আমরা খেলেছিলাম। ফলে এতে আমরা বিস্মিত নই। একজন ছাড়া অন্য সবাইকে আমরা মোটামুটি চিনি। প্রস্তুতিটা আমাদের সেভাবেই হচ্ছে। খুব ভালো প্রস্তুতি হচ্ছে আমাদের। আমরাও সেটা কাজে লাগাচ্ছি।’
মুশফিকের কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ওদের সাথে না খেলতে পারার যে আক্ষেপ তা আমরা ঘুচাতে চাই জয়ের মধ্য দিয়ে। আমরা মনেপ্রাণে চাচ্ছি সুযোগ কাজে লাগানোর। জানি না, আর অস্ট্রেলিয়া কবে আসবে। গত ১২ বছরে অনেক কিছুই শিখেছি টেস্ট ক্রিকেটে। চেষ্টা করব সব কিছু কাজে লাগিয়ে ফল আমাদের পক্ষে নিতে।’
অস্ট্রেলিয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরো জানান, ‘তারা (অস্ট্রেলিয়া) টেস্ট ক্রিকেটের শীর্ষে থাকা এক দল। শুধু দেশের মাটিতেই নয়। উপমহাদেশসহ সব স্থানেই তাদের ভালো খেলার রেকর্ড রয়েছে। এমন একটি পেশাদার দলের সাথে খেলায় ব্যক্তিগতভাবেও অনেক টার্গেট থাকে অনেকের। আমারও আছে। তবে আমি জিম্বাবুয়ে হোক আর অস্ট্রেলিয়া। সবাইকে একভাবেই দেখি।’
শুধু দলই নয়, মুশফিক বলেছেন দর্শকদের কথা। দেশের মাটিতে অনেক দিন পর খেলা। ফলে দর্শকরাও বেশ আগ্রহ নিয়ে রয়েছেন ভালো কিছু দেখার জন্য। আমরাও চেষ্টা করব তাদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য। (নয়াদিগন্ত)
নিউজ ডেস্ক:
আপডেট, বাংলাদেশ ৩:৩০ পি.এম, ৮আগস্ট ২০১৭,মঙ্গলবার।
এ.এস