Home / উপজেলা সংবাদ / হাইমচর / করোনা প্রতিরোধে ব্যাস্ত প্রশাসন মেঘনায় সুযোগ নিচ্ছে অসাধু জেলেরা
jatka

করোনা প্রতিরোধে ব্যাস্ত প্রশাসন মেঘনায় সুযোগ নিচ্ছে অসাধু জেলেরা

প্রতিদিন বিকেল ৪ টা হতে রাত ১২ পর্যন্ত হাইমচরের মেঘনা নদীতে মহাউৎসবে চলছে জাটকা নিধন। হাইমচরে দায়িত্বরত কোস্টগার্ড জানায়, প্রতিদিন চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর, মুন্সীগঞ্জ, রাজরাজেশ্বর, কাছিঘাটার কয়েক হাজার জেলে নৌকা বহর নিয়ে হাইমচর মেঘনায় চর দখলেরমত উৎসব করে জাটকা নিধন চলাচ্ছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ লাখ কেজী জাটকা নিধন হচ্ছে বলে তারা জানান।

স্থানীয়রা জানান, জাটকা নিধনকারীরা যখন আসে সমগ্র নদী এলাকা টর্চ লাইটের আলোয় আলোকিত করে চারদিকে আতংক তৈরি, এ সময় সাধারন মানুষও চলাচল করতে পারে না।

মাছ শিকার থেকে বিরত থাকা সাধারণ জেলেরা বিষয়টিকে মৎস্য বিভাগ, নৌ- পুলিশ ও কোস্টগার্ডের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন। হাইমচরের তেলির মোড় এলাকার জেলে মফিজ মাদবর, নেছার খাঁ, হুমায়ুন হাওলাদার জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যায় উত্তর দিক থেকে দল বেঁধে কয়েকশত নৌকায় কয়েক হাজার জেলে সংঘবদ্ধ নৌকায় এসে জাটকা ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তারা শুধু চেয়েথাকি, কোষ্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, মৎস্য বিভাগ শুধু নদীর পাড়ে অভিযান করে। উত্তরের জেলেরা নদীতে নিরাপদে মাছ ধরে নিয়ে গেলেও কোন ব্যাবস্থা নেয় না।

২৯ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় তেলীর মোড় এলাকায় দেখা যায়, কয়েকশত নৌকা জাটকা শিকার করছে, নিয়ন্ত্রনে কোন অভিযান নেই। প্রত্যক্ষদর্শী বাদশা পেদা বলেন, প্রতিদিন একইচিত্র, কোষ্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সামনে প্রকাশ্য মাছ ধরে তাহলে তাদের কাজটা কি বলে প্রশ্ন রাখেন।

এ বিষয়ে কোষ্টগার্ড হাইমচর কমান্ডার এমদাদ মোবাইলে জানান, ‘প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ লাখ কেজি জাটকা নিধন করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার জেলে নৌকা একযোগে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত হাইমচর মেঘনা জাটকা শিকার করে, আমরা নিয়মিত অভিযান করি, ধাওয়া দেই, গ্রেফতারও করি, আমাদের বোট একটা, ওরা কয়েক হাজার কি ভাবে সম্ভব জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা।’

এ বিষয়ে নীলকমল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক আ. জলিল জানায়. আমরা নিয়মিত অভিযান করছি, সমন্বিত অভিযান করে এদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চরভৈরবীতে মাছ কেনা বেচা বন্ধ করতে অভিযান চলছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলায় কররণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনা ভাইরাস সামলাতে প্রশাসনের সবাই ব্যস্ত থাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে ও মৎস্য বিভাগ করোনা ভাইরাস এর ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে স্থানীয় জেলেদের সাথে নিয়ে নদীতে জাটকা রক্ষার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে সাথে নিয়ে মৎস্য বিভাগ হাইমচর জাটকা রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২ থেকে আড়াইশ’ জেলে বহরের কাছে আমরা অনেক সময় অসহায়। লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধি করাসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ কয়েকটি টীম নিয়ে নদীতে নামতে পারলে এদের তাণ্ডব থামানো সম্ভব।

হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বহিরাগত জেলেরা আমার এলাকায় মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, এদের নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশকে সমন্বিতভাবে কঠোর অভিযানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, জাতীয় সম্পদ রক্ষায় কোন ছাড় নয়।

প্রতিবেদক : বিএম ইসমাইল, ৩১ মার্চ ২০২০