চাঁদপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আতোয়ার রহমান বলেছেন, অসহায় পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ না দিলে সক্ষম এবং সামর্থ্যবান সন্তানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
শনিবার (২৬ আগস্ট) পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসী সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, পিতামাতাকে দেখাশুনা করা প্রত্যেক সন্তানের জন্য শুধু নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব নয়; সরকার কর্তৃক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এই দায়িত্ব এখন আইনগত দায়িত্বে পরিণত হয়েছে । পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩ কার্যকর হওয়ার ফলে প্রত্যেক সামর্থ্যবান এবং সক্ষম সন্তানের আইনগত দায়িত্ব হলো পিতামাতার ভরণপোষণ দেয়া, তাঁদের নিয়মিত দেখাশুনা করা। ছেলে বা মেয়ে উভয়কেই তাদের পিতামাতার ভরণপোষণ এবং সঙ্গ দেয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে। ব্যর্থতায় উহা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে যা আমলযোগ্য। ’
এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকে আইন মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর আলোচনায় চাঁদপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীর মাসিক নিষ্পত্তির পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত জুলাই মাসে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে ১৮৯৮টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং মোট ৫৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে যা পূর্বের তুলনায় অধিক।
এ ক্ষেত্রে তিনি পুলিশ প্রশাসন এবং সরকারি কৌশুলী ও বিজ্ঞ আইনজীবীগণকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস ফৌজদারী মামলায় তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে আইনী বিধান তুলে ধরে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং তদন্তে কোনরকম ভুলত্রুটি হলে তা মামলার ফলাফলে প্রভাব পড়ে বিধায় মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাদেরকে যতœশীল হওয়ার জন্য আহবান করেন।
সম্মেলনে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩ এর গুরুত্ব ও তৎসংক্রান্ত পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসীর করণীয় বিষয়ে বর্ণিত আইনের বিধান তুলে ধরেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী রহমান। এ নতুন আইনের বিষয়ে সংশিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য তিনি গুরুত্বারোপ করেন। আলোচকগণ আইনের বিধান সম্পর্কে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান।
তিনি বক্তব্যে মামলা সুষ্ঠু তদন্ত ও সাক্ষী হাজির করার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাতœক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ আমান উল্লাহ সাক্ষী গ্রহণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারী কৌশুলীগণের আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য দিক নির্দেশনা প্রদান করবেন মর্মে আশ্বস্ত করেন। এ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কফিল উদ্দিন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আফজাল হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মনজিল হোসেন এবং চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। উল্লেখ্য যে, ক্রিমিনাল রুলস্ এন্ড অর্ডারস এর বিধান অনুসারে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব আতোয়ার রহমান প্রতি মাসেই এ সম্মেলনের আয়োজন করে থাকেন। ফলে চাঁদপুরের বিচারপ্রার্থী জনগণ ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সুফল পাচ্ছে।
করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১ : ০০ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ