মেঘনা নদীতে চার দিন ধরে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ মাছ। অসময়ে ইলিশ ধরা পড়ায় লক্ষ্মীপুরের জেলেরা মহাখুশি। এ কারণে বাজারের ইলিশের দাম আগের চেয়ে কমেছে। এখন এক হালি ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ খানেই আগেই এ মাপের এক হালি ইলিশের দাম দ্বিগুণ ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন, গত চার দিনে আড়াই’শ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । তবে চূড়ান্ত হিসাব করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
তিন যুগ ধরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রায়পুর উপজেলার চরবংশী গ্রামের জেলে আবদুল আজিজ। তিনি বলছিলেন, শীত মৌসুমে নদীতে ইলিশ মাছ কম ধরা পড়ে। গত সোমবার রাতে মেঘনা নদীর কাটাখালী এলাকায় জাল ফেলেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর দেখতে পান পুরো জালে ইলিশ ভর্তি। পরে মাছগুলো কাটাখালী আড়তে এনে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। গত পাঁচ বছরে শীত মৌসুমে এত ইলিশ ধরা পড়তে দেখেননি তিনি।
জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৫০ হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। তাঁরা মেঘনা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। মাছ ধরা ও বিক্রি করাই তাঁদের পেশা। কিন্তু ছয় থেকে সাত বছর ধরে নদীতে মাছ কম পাওয়ার কারণে পেশাদার ওই জেলেদের হারিয়ে গেছে সুদিন। অসময়ে এসে নদীতে ইলিশ ধরা পড়ায় তাঁদের পরিবারের লোকজন মহাখুশি।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার হাজির হাটবাজারের মাছের আড়তের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, আড়তে (মাছ বেচাকেনার জায়গা) আগে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ কেজি ইলিশ বিক্রি হতো। কিন্তু গত রোববার থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত প্রায় দুই টন করে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। দামও আগের চেয়ে একটু কম। এতে ক্রেতা-বিক্রেতারা খুশি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মেঘনা নদী এলাকার মজু চৌধুরীর ঘাটের ব্যবসায়ী মাছ ব্যবসায়ী মো.জহির মিয়া জানান, আজ প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের হালি এক হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। অথচ এ মাছগুলো আগে দুই হাজার টাকা ছিল। আর এক কেজির ইলিশের প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘জেলার তিনটি উপজেলার কয়েকটি মাছঘাট ঘুরে দেখেছি, মেঘনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। গত কয়েক বছর মৌসুমে জাটকা নিধন বন্ধ ছিল। মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছেড়েছে। এ কারণে অসময়ে ইলিশ ধরা পড়ছে। চার দিন ধরে আমরাও খুশি।’
চাঁদপুর টাইমস রিপোট
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur