চাঁদপুরে অশ্লীল ভিডিও ধারণকারী চক্রের নারীসহ আটক ৬

চাঁদপুর শহরের এসি ও ফ্রিজের ব্যবসায়ী মো. মাইনুল ইসলাম (৩৩) কে কৌশলে বাসায় নিয়ে নষ্ট ফ্রিজ মেরামতের জন্য ডেকে জোরপূর্বক অশ্লীল ছবি ধারণ করে নগদ অর্থ আদায় করার অভিযোগে ৪জন নারীসহ প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।

১১ মে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে চাঁদপুর মডেল থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকার প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।

এর আগে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেন মডেল থানা পুলিশ।

প্রেস ব্রিফিং-এ চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রশিদ, ওসি তদন্ত সুজন কান্তি বড়ুয়া, ওসি (অপারেশন) সনোয়ার হোসেন, (ইন্টিলিজেন্স) এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।

আটক প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন- চাঁদপুর শহরের তাসলিমা আক্তার জেরিন (২০), চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানার বাঙ্গালখালীয়া এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের মেয়ে সাদিয়া বেগম (২৭), ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদি রামপুর বেপারী বাড়ী মিন্টু বেপারীর স্ত্রী হাসিনা বেগম মুন্নি (৩৫), উপজেলার শোভান মিজি বাড়ীর মৃত ছেলামত মিজির ছেলে মোস্তফা (৪৫) ও একই উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুর ইউনিয়নের খান বাড়ীর আরিফ খানের ছেলে কাজল খান (২২), হাজীগঞ্জ রাজারগাঁও প্রধানিয়া বাড়ীর সিরাজুল মোস্তফার মেয়ে আয়েশা আক্তার নিপা (১৯)।

এই ঘটনায় প্রতারণার শিকার মো. মাইনুল ইসলাম আজ চাঁদপুর মডেল থানায় বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকার বলেন, অভিযোগকারীর বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাই। তাকে নষ্ট ফ্রিজ মেরামতের জন্য তাসলিমা আক্তার জেরিন ড্রিম হাউস নামে বাসায় নিয়ে মাইনুল ইসলামের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

এই চক্রের সদস্যরা সক্রিয় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পুরুষ মানুষের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রেমের সম্পর্ক করে। শহরের বিভিন্ন বাসা ভাড়া করে লোকদের ছবি তুলে প্রতারণা করে এবং টাকা আদায় করে ছবিগুলো রেখে দেয় পরবর্তীতে আবারও টাকা আদায় করার জন্য।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ উল্লেখ করেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন লোকজনদেরকে কৌশলে বাসায় ডেকে এনে অশ্লীল ছবি ধারন করে অবৈধভাবে টাকা আদায় করে। এই ধরনের একটি অপরাধের ভিত্তিতে প্রতারণার শিকার মোঃ মাইনুল ইসলাম অভিযোগে বলেন, তাহার দোকানের পাশে ৪নং বিবাদী মোস্তফার হার্ডওয়ার দোকান আছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাথে তাহার মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। যার ফলে মোস্তফা প্রতারক চক্রের প্রধান জেরিনের সাথে যোগসাজসে মাইনুলের ক্ষতিসাধনের অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে।

গত ৭ মে সকাল অনুমান ১০ টার দিকে মাইনুল শহরের সেবা সিটি সেন্টারে এসির কাজ করাকালীন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৮৩৩-৬৪৬২১৯তে মোবাইল নম্বর ০১৯৫১-৬২৭২৪৮ হতে প্রতারক জেরিন ফোন করে কোথায় আছে জিজ্ঞাসা করে। মাইনুল তাকে সেবা সিটি সেন্টারে আছে বলে জানায়।

জেরিনের অনুরোধে দুপুরে মাইনুল প্রতারক চক্রের অপর সদস্য সাদিয়ার আলিম পাড়াস্থ ড্রিম হাউজ নামে বাসার নষ্ট ফ্রিজ মেরামত করার জন্য গেলে তাকে ঘরে ডুকিয়ে গায়ের শার্ট ও কোমরের বেল্ট খুলে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। যদি টাকা না দেয় তাহলে তার স্ত্রীর কাছে ভিডিও বার্তা পাঠবে। পরে মাইনুল তার সাথে থাকা ১০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট

Share