কুমিল্লায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক নির্যাতনসহ অশ্লীল ভিডিও রেকর্ড করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে কথিত প্রেমিকাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি।
জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের বেকারি ব্যবসায়ীর অভিযোগে কথিত প্রেমিকা পারভীন আক্তার, সহযোগী সুমাইয়া আক্তার ও তার ভাই অভিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার তাদেরকে আদালতের হাজির করা হলে প্রতারক অভি ও পারভীন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাদের জামিন নামঞ্জুর করে বিকেলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুলাই উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের বেকারি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। ওইদিন রাতে তার স্ত্রী সেলিনা বেগম দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরির সূত্র ধরেই তদন্তে নামে পুলিশ। এরই মধ্যে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বেকারি মালিকের ম্যানেজারের কাছে ফোন আসে। ওই ফোন কলের সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাঠে নামে পুলিশ। এরই মধ্যে অপহরণকারীদের সঙ্গে বিকাশে কিছু টাকার লেনদেন করা হয়। তবে পুলিশি তৎপরতার বিষয়টি জানতে পেরে অপহরণকারীরা পরদিন রাতে ছেড়ে দেয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেনকে। ছাড়া পেয়েই তিনি দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
ব্যবসায়ী জাকির জানান, পারভীন আক্তার প্রিয়ার সঙ্গে রং নাম্বারে পরিচয়ের সূত্র ধরে দেখা করতে আসেন গৌরীপুরে। পরে পারভীন আক্তার তাকে নিয়ে গেীরীপুর ছাগল বাজারের আরজু মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া কুহিনুর বেগমের বাসায় যান। সেখানে কুহিনুর বেগমের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার ও ছেলে শফিকুর রহমান অভিসহ কয়েকজন জাকির হোসেনকে মারধর করে পারভীন আক্তারের সঙ্গে অশ্লীল ভঙ্গিতে ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করতে বাধ্য করে। এরপরই তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। না দিলে এই ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন।
পুলিশ কুহিনুর বেগমের মেয়ে সুমাইয়া ও ছেলে অভিকে রোববার রাতে আটক করলে তাদের দেয়া তথ্য মতে গৌরীপুর ভুলিরপাড়ের মোতালেব মিয়ার বাড়ি থেকে পরে পারভীন আক্তার প্রিয়াকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। পারভীন আক্তার প্রিয়া লক্ষীপুর জেলার রামনগর থানার আইয়ানগর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। সুমাইয়া ও অভি চান্দিনা উপজেলার দলপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী সফিউল্লার ছেলে ও মেয়ে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করেছে।
দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম জানান, এ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ প্রেমের ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতো। ভুক্তভোগীরা মান-সম্মানের ভয়ে থানায় অভিযোগ করতো না।