সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার জন্য চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা প্রদানের সময় জনগণের সক্ষমতা বিবেচনায় রাখতে হবে, কোনো রোগী অর্থাভাবে যেন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।’
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
হাসপাতালে চিকিৎসকের আচরণে রোগী যাতে কষ্ট না পায়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘বাংলার মানুষ চিরকালই অতিথিপরায়ণ। মনে রাখবেন রোগীরা হাসপাতালের অতিথি। ফলে আপনাদের কোনো আচরণে তারা যেন মনে কষ্ট না পান সেদিকে বিশেষ নজর দেবেন। মনে রাখতে হবে, মানুষ অসুস্থ হলে চিকিৎসকের কাছে আসে। সঙ্গে থাকে অনেক আশা আর ভরসা। তাই রোগীরা যাতে হতাশ হয়ে ফিরে না যায় সে চেষ্টা সর্বান্তকরণে করতে হবে।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘আজকাল প্রায়ই পত্রপত্রিকায় দেখা যায়, ভুল চিকিৎসা বা অপচিকিৎসার ফলে রোগীরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছে। অনেক সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে রোগীদের অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। অনেক রোগীর পক্ষেই এসব ব্যয় মেটানো সম্ভব হয় না। ফলে তারা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই অল্প কিছু লোকের অসাধুতার জন্য যাতে চিকিৎসার মতো মহান পেশার সুনাম নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি চিকিৎসকের তুলনায় আনুপাতিক হারে আমাদের দেশে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তার পরও চেষ্টা করতে হবে কেউ যাতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।’
রাষ্ট্রপতি দেশে ওষুধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি দিন দিন আধুনিক হওয়ার কথা উল্লেখ করে স্থানীয় চিকিৎসক ও চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা অর্জনে সর্বশেষ আবিষ্কার ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো জ্ঞান অর্জনের জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুবিধা পৌঁছে দিতে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ই-সার্ভিস চালু করারও পরামর্শ দেন। বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ থেকে রপ্তানি আয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি দেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করতে এ ক্ষেত্রে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালানোর জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানী, চিকিৎসক এবং গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি চিকিৎসাক্ষেত্রে নার্সদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাঁরা যাতে আরো ভালো সেবা দিতে পারেন, এ জন্য বিএসএমএমইউতে তাঁদের প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর ডিগ্রি লাভের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সাতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে চিকিৎসাক্ষেত্রে তাঁদের অবদানের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছয়জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বক্তব্য দেন। (বাসস)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:০০ এ.এম ২০ ফেব্রুয়ারি২০১৮,মঙ্গলবার।
এএস.