‘আগামী দুই বছর পর দেশে বিড়ির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সিগারেট তুলে দিতে পারব না। এটা বিশ্বের সব দেশেই আছে। কিন্তু বিড়ি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’-অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বিড়ি ধুমপানের উপকরণের মাঝে খুবই নিম্ন শ্রেণীর। এর ব্যবহারকারীরাও সমাজের উচ্চ স্তরের কেউ না, বরং দরিদ্র শ্রেণীর; ক্ষেত্র বিশেষে হত দরিদ্র ও প্রান্তিক। এর উৎপাদনের সাথে যারা জড়িত তারাও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দরিদ্র অসহায় মহিলা, বিধবা কিংবা স্বামী পরিত্যক্তা; যাদের অনেকেই নদী ভাঙনের কবলে পড়ে একেবারে নি:স্ব। এদের বেশীর ভাগেরই বিকল্প রোজগারের কোন পথ নেই।
তাই অর্থমন্ত্রীর এই অবহেলিত, নি:স্ব, হত দরিদ্র, নিম্ন শ্রেণীর জনগণ ও প্রজার বিরুদ্ধে এহেন যুদ্ধ ঘোষণা বেশ আতংকের। তাহলে বাংলাদেশ কোন জনগণ আর প্রজাদের দেশ? সমাজের উচ্চ শ্রেণীর হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক লুটেরাদের টিকি স্পর্শ করার সাহস না থাকলেও নিচু পর্যায়ের মানুষের টিকে থাকার শেষ অবলম্বন বিড়িকে ধ্বংস করার তাঁর এই প্রয়াস নতুন কিছু নয়। ধারাবাহিকভাবে বিড়িকে ধ্বংস করে সিগারেটকে সেই বাজার দখলের অনুকুল্য প্রদানের অব্যাহত প্রচেষ্টায় নতুন মাত্রা এটি।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে গ্রামীণ কুটির শিল্প বিড়ি এখন বিদেশি বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানির আগ্রাসন আর শোষণের শিকার। বিড়িকে বঞ্চিত করা হচ্ছে সিগারেটের সাথে ন্যয্য প্রতিযোগিতার অধিকার থেকে।
ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটি সর্বজনস্বীকৃত। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ ধারায় জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধের কথা বলা হলেও সেই সংবিধান সমুন্নত রাখার শপথ গ্রহণকারী অর্থমন্ত্রী বলছেন, সিগারেট তুলে দিতে পারব না।
অথচ বলছেন, আগামী দুইবছর পর দেশে বিড়ির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। কোন প্রাপ্তির প্রত্যাশায় তিনি সিগারেট তোষণ করছেন, আর বিড়িকে ধ্বংসের অঙ্গীকার করছেন। এটি কি দেশি কুটির শিল্প ধ্বংস করে বিদেশি বহুজাতিক প্রভুদের ব্যবসা করে পুঁজি পাচারে সহযোগিতা করার জন্য? তিনি যখন বলেন, বিড়ি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর আর সিগারেটের ব্যাপারে থাকেন নিশ্চুপ, তখন তাকে সুবিধাভোগী ছাড়া কিছুই মনে হয় না। (বাংলানিউজ)
নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১ : ২০ পিএম, ২৩ মে ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur