অর্থমন্ত্রীর প্রতি বিএনপি নেতার এ কেমন প্রেম?

দেশের রাজনীতি, দলাদলির মাঠ যতই সরগরম থাকুক না কেন, সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। পুণ্যভূমি সিলেটে দলীয় কর্মসূচি পালনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমঝোতা রয়েছে। এই সম্প্রতির বন্ধনকে আরো মজবুত করলেন সিলেটের রাজনীতির অভিভাবক অর্থমন্ত্রী আবুল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার একটি অনুষ্ঠানে দুই মেরুর দুই নেতার ভালোবাসার গল্প প্রকাশ পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৫০ হাজার বই নিয়ে শুরু হওয়া দক্ষিণ সুরমা গণগ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে সদরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মখন মিয়া।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ নেতা আর বিশেষ অতিথি বিএনপি নেতার একে-অন্যের প্রতি ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হন উপস্থিত সবাই।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই অনুষ্ঠানস্থলে এসে উপস্থিত হন বিএনপি নেতা মখন মিয়া। একপর্যায়ে অর্থমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে এলে তাকে অভ্যর্থনা জানান তিনি। এ সময় অর্থমন্ত্রীকে হাত ধরে মঞ্চে নিয়ে আসেন বিএনপির ওই নেতা।

অর্থমন্ত্রী মঞ্চে ওঠার পর অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শামছুল ইসলাম ও যুবনেতা অরুণ দেবনাথ সাগর।

দক্ষিণ সুরমা গণগ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বাংলা একাডেমির ফেলো নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা হক, সিলেট জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আব্দুল আজিজ, মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. মখন মিয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবন্তী রায় প্রমুখ।

বিএনপি নেতা মখন মিয়ার পুরো বক্তব্যেই অর্থমন্ত্রীর গুণগান ছিল। তার বক্তব্যে অবাকও হয়েছেন অনেকে।

মখন মিয়া বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত হলেন সিলেট তথা সারা বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার। তিনি সফল অর্থমন্ত্রী। তিনি যেখানে পা রাখেন সেখানেই সোনা ফলে।’

সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা সাইফুর রহমানের আমলে শুরু হওয়া সুরমা নদীর ওপর নবনির্মিত কাজির বাজার সেতু প্রসঙ্গে মখন মিয়া বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কাজির বাজার সেতু করেছেন। এতে দু’পাড়ের মানুষের যথেষ্ট উপকার হয়েছে। তবে দক্ষিণ সুরমা মানুষের দাবি ওই ব্রিজের সঙ্গে একটি লিংক তৈরি করা। যাতে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মানুষের এই ব্রিজটি কাজে লাগে।’

একপর্যায়ে মখন মিয়া যে স্কুল মাঠে সমাবেশ হচ্ছে সেই স্কুল প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, ‘সদরখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি অল্প বৃষ্টিতে হাঁটুপানি জমে যায়। তাই এই স্কুলটি সংস্কার করা খুব প্রয়োজন।’

মখন মিয়ার কথা শুনে বিষয়টি নিয়ে মঞ্চে উপস্থিত থাকা সিলেট জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। এ ছাড়াও ওই স্কুলটি দ্রুত সংস্কার করার নির্দেশ দেন তিনি।

পরে জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন তার বক্তব্যে বলেন, ‘মখন মিয়ার বক্তব্য শুনে মঞ্চেই আমাকে সদরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী মহোদয়। বিদ্যালয়টি সংস্কার হবে।’

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক: ।। আপডেট ১১:৩০ এএম ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ শুক্রবার
প্রতিনিধি/ডিএইচ

Share