কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের কৃষি খাতকে টেকসই ও আধুনিক রূপে গড়ে তুলতে “Transforming Bangladesh Agriculture: Outlook 2050” বা “বাংলাদেশের কৃষির রূপান্তর: ২০৫০ সালের পূর্বাভাস” শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালা।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) আন্তর্জাতিক হলরুমে দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথির ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদা উল্লাহ।
এসময় বক্তব্যকালে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কৃষিকেই গুরুত্ব দিতে হবে। গার্মেন্টস শিল্প গত প্রায় ৪০ বছর ধরে অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে এ খাতটি নানা প্রতিকূলতার মধ্যে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় খাদ্য ও অর্থনীতি সয়ংসম্পূর্ণ রাখতে কৃষির কোন বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কাজের জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। ব্যাক্তি জীবন, সামাজিক জীবন, কর্মজীবন সবক্ষেত্রেই পরিকল্পনার দরকার রয়েছে। তেমনিভাবে কৃষি রূপান্তরের জন্যও সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। আজকের কর্মশালায় ‘আউটলুক ২০৫০’ নামের একটি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগামী ২৫ বছরের দীর্ঘমেয়াদি একটি পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কৃষি ক্ষেত্রে ক্রিটিক্যাল বিষয়গুলো এড্রেস করতে হবে, এবং এসবের সমাধান দ্রুত কাজ করতে হবে। বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৃষি বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন (Gates Foundation) এর সার্বিক সহায়তায় জাতিসংঘের ‘খাদ্য ও কৃষি সংস্থা’ (FAO) এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কৃষিমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বার্ডের মহাপরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এর টেকনিক্যাল এডভাইজার মার্টিন মাওগুস্টিনি এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কৃষি উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। সমন্বিত মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে ২০৫০ সালকে সামনে রেখে আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রনয়ণ করবো। যার মাধ্যমে কৃষির সাথে সহ খাতসমূহকে একীভূত করে কাজ করবে। যেমন প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, মৎস অধিদপ্তর কৃষির সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
কর্মশালায় অন্যান্য বক্তারা বাংলাদেশের কৃষি খাতে টেকসই ও স্থিতিস্থাপক বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, “Agriculture Sector Transformation Project (ASTP)” বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের কৃষি ব্যবস্থা হবে আরও আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও জলবায়ু-সহনশীল।
বক্তারা আরও বলেন, স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি, সৌরশক্তি, ড্রোনভিত্তিক চাষাবাদ এবং তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, কৃষি বিশেষজ্ঞ, গবেষক, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, ও স্থানীয় কৃষক নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,
১৩ নভেম্বর ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur