চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নে সক্রিয় অবৈধ মিনি ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্রটি আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। চক্রটি যেন মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতে উঠেছে। প্রতিনিয়ত মাটি কেটে ধ্বংশ করছে শতশত একর ফসলী ঊর্ব্বর কৃষিজমি। অন্যদিকে এই ঊর্বর কৃষি জমি রক্ষায়, অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিমূলে নিয়মিত অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ভূমি অফিস। এসব অভিযানে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অসংখ্য অবৈধ মিনি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা, ধ্বংস করাসহ অসাধু ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। তারপরও থামছেনা চক্রটি! একদিকে অভিযান শেষ অন্যদিকে আবারও শুরু হয় মাটিকাটা!। এ যেন চোর-পুলিশ খেলায় মেতে উঠেছে চক্রটি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা তাদের মিনি ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেই!
তবে, সচেতন মহল মনে করছেন এই চক্রটিকে নির্মূল করতে হলে আরোও কঠিন ভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে। বাড়াতে হবে জরিমানার অংক এবং দিতে হবে কারাদণ্ডও! তা না হলে চক্ররি চোর-পুলিশ খেলা কোনো মতেই থামানো যাবে না। এর অন্যতম কারন হচ্ছে, এ পদ্ধতিতে মাটি কেটে বিক্রিতে অনেক লাভ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের স্থানীয় টিপু ও সানাউল্লাহ গংরা এই অবৈধ মিনি ড্রেজারে মাটি বিক্রির ব্যাবসার সাথে জড়িত।গত ২০ অক্টোবর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুমতাহিনা পৃথুলা ওই এলাকায় মিনি ড্রেজার বন্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ড্রেজার মালিক না পেয়ে একটি ড্রেজার মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করে। এর আগে একই অপরাধের ওই মাসের ৯ তারিখে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মালিক সানাউল্লাহকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন…. মতলব দক্ষিণে দুবার এক ড্রেজার মালিককে জরিমানা ও মেশিন জব্দ
=> মতলব দক্ষিণে ড্রেজার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
অভিযানের বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুমতাহিনা পৃথুলা বলেন, এ ড্রেজার মালিককে গত ২০ দিন পূর্বে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং শতর্ক করে দেয়া হয়েছিল।নির্দেশনা অমান্য করে আবারও ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়ায় সরেজমিনে এসে তাকে না পাওয়ায় মেশিনগুলো জব্দ করেন। তিনি আরো বলেন, আইন লঙ্ঘন করে যারা ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে সম্প্রতি ওই চক্রটি ওই এলাকায় নতুন করে আরও একটি ড্রেজার মেশিন নিয়েছেন। তারা তারা নতুন করে ওই এলাকার ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার চেষ্টা করছেন। টিপু ও সানাউল্লাহ গংরা ক্ষমতাসীন হওয়ায় ভয়ে এলাকার মানুষ কোন প্রতিবাদ করতে পারছে না।
সচেতন মহল মনে করেন, একেকটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিমাশে যে পরিমাণ আয় হয়, সেতুলনায় ড্রেজার ব্যাবসায়ীকে জরিমানা কিংবা মেশিন জব্ধ করে যে ক্ষতি হয় তা অতি সামান্য। যার জন্যে মোবাইলকোর্ট করে চলে গেলে ওই ব্যাবসায়ীরা আবাও নতুন মেশিন কিনে মাটিকাটায় মরিয়া হয়ে উঠে। এক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন রাজনৈতিক ছত্রছায়াও থাকে ড্রেজার ব্যাবসায়ীদের পক্ষে। ড্রেজার বন্ধ না হওয়ার এটিও একটি বড় কারন। তবে উপজেলা প্রশাস ও উপজেলা ভূমি অফিসের অভিযান অব্যাহত না থাকলে মাটি খেকো এই ড্রেজার চক্রচক্রটি গোটা ইউনিয়নের ফসলী জমি গিলে খেতো। এই চক্রকে স্বনির্মূল করতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানান ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম/
২৮ অক্টোবর ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur