চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা জুড়ে ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মিনি ড্রেজার দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করে জমজমাট বাণিজ্য করে আসছে একটি মহল। এতে আশপাশের জমি ও সড়ক ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া কাছাকাছি থাকা কয়েকটি বসতঘরও হুমকির মধ্যে রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন প্রায় ২ শতাধিক অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবাদি জমি গর্ত করে বালু উত্তোলন করে আসছে প্রভাবশালী মহল। এতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই প্রভাবশালী মহলটি।
এদের বারবার মাটি উত্তোলন না করার জন্য প্রশাসন থেকে নিষেধ করা হলেও কর্ণপাত করছে না বরং আবাদি জমিতে মাটি উত্তোলন করে বিশাল সুড়ঙ্গ করে ফেলছে তারা। সেই সঙ্গে আশপাশের বসতঘরও হুমকির মুখে পড়েছে।
এই মুহূর্তে এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে কচুয়ায় এক সময় আবাদি জমি খুঁজে পাওয়া যাবে না। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে ফসল উৎপাদন। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় দেখা দেবে চরম খাদ্য সংকট।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি, এমনকি খোদ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতেও আলোচনা হয়েছে। তারপরও ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন বন্ধ করা হয়নি। চাঁদপুরের বৃহৎ উপজেলা কচুয়ায় ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে। এ উপজেলার সর্বত্র ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে অবাধে চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন। কতিপয় ড্রেজার ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কচুয়া উপজেলায় প্রায় ২ শতাধিক ড্রেজার মেশিন রয়েছে। আর এসব ড্রেজার দিয়ে প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কৃষি আবাদি জমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করে কৃষিজমি ধ্বংস করে দিচ্ছে।
বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় একটি প্রভাবশালী মহল উপজেলার সাচার,শুয়ারুল, আটোমোড়, বারৈয়ারা,রাগদৈল, বায়েক, ঘুগড়ার বিল,বড়দৈল,শিলাস্থান,তেগুরিয়া,বিতারা,খলাগাঁও,যুগিচাপড়,মাঝিগাছা,সৈয়দপুর,নন্দনপুর,মালচোয়া,কাদিরখিল, বাতাপুকুরিয়া, দুর্গাপুর, চাংপুর, পালাখাল, আইনপুর, শংকরপুর, দোয়াটি,তিলকিয়াভিটা,এনায়েতপুর,গুলাবাহার,সিংআড্ডা, নিশ্চিন্তপুর, মধুপুর, কাদলা,মনপুরা, তুলপাই,প্রসন্নকাপ,উত্তরনয়াকান্দি,আশারকোটা,তেতৈয়া,নাহারা,উজানী,বরুচর,দারচর,খিড্ডা সহ কচুয়ার বিভিন্ন স্থানে অবাধে মাসের পর মাস মিনি ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে।
স্থানীয়রা জানান,কোনো অভিজ্ঞতা নেই, শুধুমাত্র দু-একদিন ড্রেজারে কাজ করেছে এমন ব্যক্তিও এখন ৩/৪টি ড্রেজারের মালিক। অন্যদিকে পূর্বে সিএনজি চালক,পিকআপ চালক কিংবা পূর্বে কোনো কাজকর্ম করতে দেখা যায়নি এমন লোকেরা ও ড্রেজার ক্রয় করে এখন লক্ষ লক্ষ টাকা মালিক হয়েছে। নব্য এসব ড্রেজার ব্যবসায়ীদের দাপটে রীতিমতো দিশেহারা স্থানীয় সচেতন মানুষ।
এদিকে নব্য এসব ড্রেজার মালিকদের হাত থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ বলেন, ড্রেজারে অবৈধ বালু উত্তোলনের অনুমতি নেই। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজার উচ্ছেদ ও জরিমানা আদায় করছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কচুয়া প্রতিনিধি,১১ জুলাই ২০২১