সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের দেওয়া রায়টি যে অবৈধ ছিল, তা বর্তমান প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের মাধ্যমে আরো স্পষ্ট হয়েছে। তাই সংবিধান সংশোধন করে পুনরায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করতে হবে।’
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন খন্দকার মাহবুব।
খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর প্রধান বিচারপতি হিসেবে বর্ষপূতি উপলক্ষে এক বাণী দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘অবসরের পর রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থী’। ইতোপূর্বে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে আমরা বলে আসছিলাম, এখন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এর বক্তব্যর মাধ্যমে এটি আরো স্পষ্ট হয়েছে।’
আইনজীবী সমিতির সভাপতি আরা বলেন, ‘সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতিসহ সব বিচারপতিগণের নিয়োগপ্রাপ্তির পর সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শপথ গ্রহণ পূর্বক তাঁর দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হয়। বিচারক হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধান, আইননের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের যে শপথ বিচারক হিসেবে গ্রহণ অবসরের পর তিনি আর ঐ শপথের আওতায় থাকে না।’
খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের পরিপন্থী বলে যে রায়টি দিয়েছিলেন উহা তিনি সাক্ষর করেন তাঁর অবসরে যাওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর। তাই ঐ রায়ের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নাই এবং তা অবৈধ। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার উক্ত অবৈধ রায়ের সুযোগে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী দ্বারা নির্দলীয় তত্ত্ববাধায় সরকারের বিধান বিলুপ্তি করেন। বাংলাদেশ আজকে রাজনৈতিকি অঙ্গনে সুষ্ঠ নির্বাচনের অভাবে যে সংকট অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক হানাহানি চলছে তার একমাত্র কারণ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন পদ্ধতি বাতিল করে ক্ষমতাসীন দলের অধীনে নির্বাচন। আর এই বাতিলের পিছনে এবিএম খায়রুল হক এর সংবিধান পরিপন্থী অবৈধ উক্ত রায়।
তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পূনর্বহাল করে একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট নিরসন করার জন্য ক্ষমতাসীন দলের নিকট আমরা দাবী জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মির্জা-আল মাহমুদ, অ্যাডভোকটে ওয়ালীউর রহমানসহ আইনজীবী সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।