সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে অবসরে যাচ্ছেন এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে লন্ডনে। চিকিৎসার জন্য এক মাসের বেশি সময় দেশের বাইরে অবস্থান করছেন তিনি। এরই মধ্যে তার দেশে ফেরার কয়েকটি তারিখের কথা শোনা গেছে। যদিও ফেরা নিয়ে এখনো নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না শীর্ষ নেতারাও। তবে ফেরার খবর না জানলেও খালেদা জিয়া অবসরে যাচ্ছেন এমন খবর লন্ডনে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এবিষয়ে নিয়ে কেউ সরাসরি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। কোন দায়িত্বশীল সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
তবে লন্ডন বিএনপি তৃণমূল নেতারা বলছে, বেগম জিয়া এখন আর আগের মত শারীরিকভাবে সুস্থ নন। তাই তিনি এখন দলের পদে সরাসরি না থেকে নতুনদের দিয়ে পুনর্গঠনের মাধ্যমে দলকে এগিয়ে নিতে চান।
এদিকে লন্ডন যাওয়ার পর থেকে চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয় তারেক রহমান নিজেই দেখভাল করছেন বলে জানা গেছে। তাকে সহায়তা করছেন স্ত্রী ডা.জোবায়দা রহমান। এছাড়া খালেদা জিয়ার অন্যান্য কর্মসূচিতেও কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া কোনো নেতা চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন না।
অন্যদিকে জোবায়দা রহমান বিএনপির নতুন চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পেতে পারেন বলে শুনা যাচ্ছে। কারণ তারেক রহমানকে সরকার বিভিন্ন মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে রেখেছে। তাই বিএনপির রাজনীতিতে অভিষেক হচ্ছে জোবায়দা রহমানের এমনটাই মনে করছে বিএনপি মধ্য সারির নেতারা। তবে এনিয়ে দায়িত্বশীলদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করত তাইলে সিলেটের একটি আসনে জোবায়দা রহমানকে দলীয় প্রার্থী করার চিন্তা ভাবনাও দলের ভিতর ছিল। এর মধ্যদিয়েই জোবায়দা রহমানের রাজনীতিতে অভিষেক ঘটত।
জানা যায়, প্রয়োজন বিবেচনায় খালেদা জিয়াই পুত্রবধূ জোবায়দা রহমানকে রাজনীতিতে আনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিশ্বস্ত কয়েকজন নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শও করেছেন তিনি। পুত্র ও পুত্রবধূর প্রতি আস্থাশীল বেগম জিয়ার মানসিক এ প্রস্তুতি আরো আগের। মায়ের আগ্রহে তারেক রহমান ইতিবাচক সম্মতি প্রকাশ করেন।
সূত্রটি জানায়, এর আগেও খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্য সফরকালে ডা. জোবায়দা রহমানের রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে আলোচনায় ওঠে। ওই সময়ই জোবায়দাকে রাজনীতিতে আসার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।
সূত্রমতে, বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানকারী ডা. জোবায়দা রহমান সেখানে চিকিৎসাধীন স্বামী তারেক রহমানকে সঙ্গ দেওয়ার পাশাপাশি রাজনীতিতে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। লন্ডনে যাওয়ার আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা হিসেবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এমডি কার্ডিওলজি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন জোবাইদা রহমান।
১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির। ১৯৮১ সালের ৩০শে মে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর থেকে বেগম জিয়া একই সঙ্গে সামলে আসছেন সংসার আর রাজনীতির মাঠ। বড় ছেলে তারেক রহমান ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকেই স্বপরিবারে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।
দেশের চলমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে জোবাইদা রহমানের রাজনীতিতে অভিষেককে খালেদা জিয়ার সঠিক সিদ্ধান্তই মনে করছেন লন্ডনে বিএনপির মধ্য সারির নেতারা।
এদিকে লন্ডন যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে নানা ধরণের কথা শোনা যায়। কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও। খালেদা জিয়া আর দেশে ফিরবেন না আওয়ামী শিবির থেকে এমন বক্তব্যও দেয়া হচ্ছে।
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক: ।। আপডেট ০৯:৪০ এএম ২৬ অক্টোবর, ২০১৫ সোমবার
/ডিএইচ