অবশেষে মুক্তি পেলেন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা। বহুল আলোচিত মামলার আসামী বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বেগমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। ২০০৮ সালে কুমিল্লা কেন্দ্রিয় কারাগারে ফাঁসির আদেশ কার্যকরের মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধা রোববার স্থায়ী ভাবে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের কেন্দ্রিয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবীর, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তারিকুরর রহমান জুয়েল, সাংবাদিক ও সংগঠক আবদুল্লাহ আল মামুনসহ রাখাল চন্দ্র নাহার পরিবারের সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা জেলগেটে রাখাল চন্দ্র নাহাকে পুষ্পমাল্য দিয়ে বরণ করেন।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের কেন্দ্রিয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, ১৯৯৯ সালে দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় নিরপরাধ রাখাল চন্দ্র নাহাকে আসামী করা হয়। এ মামলায় ২০০৮ সালে তার ফাঁসির আদেশ হয়। এ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় তার মামলা পরিচালনায় উপযুক্ত আইনজীবী নিযুক্ত করতে পারেননি। ফলে ফাঁসির দন্ড সর্বাবস্থায় বহাল থাকে এবং ২০০৮ সালেরে ৭ এপ্রিল রাত ১১ টায় রায় কার্যকরের সময় নির্ধারণ করা হয়।
মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তারদের সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ এর পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসি দন্ড রহিত করার দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। পরদিন এ খবরটি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বের সাথে প্রকাশ হয়। প্রকাশিত খবরটি দৃষ্টি গোচর হয় তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর। তারা এ মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসির দণ্ড মওকুফ করার জন্য অনুরোধ করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে। রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসি কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্ট আগে রাষ্ট্রপতির আদেশে এসে পৌঁছায় কুমিল্লা কেন্দ্রিয় কারাগারে, রহিত করা হয় ফাঁসির আদেশ। পরবর্তীতে বিচারিক আদালত তাকে যাবজ্জীবন দন্ড প্রদান করে।দীর্ঘ সাড়ে ২৪ বছর পর রোববার তিনি স্থায়ী মুক্তি লাভ করেন।
জেল গেটে এসে রাখাল চন্দ্র নাহা বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ যারা তার মুক্তির জন্যে আন্দোলন করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের কেন্দ্রিয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহার কারামুক্তিতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।
এব্যপারে দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম আতিকুর রহমান বাশার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসির আদেশের সংবাদটি সেদিন তাঁর জন্মস্থান দেবীদ্বার প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা গুরুত্বের সাথে করেছিলাম তারই ধারাবাহিকতায় তাঁর ফাঁসির আদেশ রহিত করা হয় এবং অবশেষে তিনি কারামুক্তি লাভ করেছেন। ব্যাপারটা রাখাল চন্দ্র নাহার পরিবারে পাশাপাশি দেবীদ্বারের সাংবাদিকদের জন্যেও আনন্দের।
প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ০৩ জুলাই ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur