জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, অফিস সময় কমানোর সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। অবস্থা বুঝে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। প্রয়োজন না হলে সব কাজ আগের মতো স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
২১ জুলাই বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, আমরা ধীরে ধীরে ম্যানেজের দিকে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আলোচনা-পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। যদি দেখি যে বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করে পুরো সময় অফিস করতে পারছি, তাহলে কিন্তু অফিসের সময় কমানোর দরকার নেই। জ্বালানি সাশ্রয়ে অন্যান্য সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সরকারি অফিসের সময় দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার বিষয়ে প্রস্তাব থাকলেও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যালোচনার মধ্যে আছি যে কোনটা করলে ভালো হয়। এটি নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা করা হবে। তবে এখন আমাদের ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলেই চলছে। সরকার সব কর্মকাণ্ডকে স্বাভাবিক গতিতে রেখেই সব কাজ চালিয়ে নিতে চায়। তাই প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
তবে আলাপে জমির উদ্দিন সরকার জানান, সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচন নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন গিয়েছিলাম তো, সৌজন্য বিনিময়ই বেশি সময় গেছে। কার্টেসি ভিজিট।’
১০ জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান গুলশানের ‘ফিরোজা’য় যান। দেড় ঘণ্টা সাক্ষাৎ শেষে সেদিন রাত ১০টায় তারা বেরিয়ে আসেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান যুক্তরাষ্ট্র, ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নিজ নির্বাচনি এলাকায় থাকায় সাক্ষাতে তারা অনুপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষ গত রমজানের ঈদে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব উল্লেখ করেন, ‘খালেদা জিয়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনায় বন্যার্তদের খবর আমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তোমরা যেভাবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছ ঠিক সেভাবেই তোমরা বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে থাকবে তাদের কষ্ট লাঘব না হওয়া পর্যন্ত। তিনি মনে করেন বন্যার্তদের সেবা করা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করা এবং এটাই রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, সম্প্রতি সরকার দলীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ব্যক্তির পক্ষ থেকে বিএনপির নেতৃত্ব কার হাতে বা ক্ষমতায় এলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, এসব প্রশ্নে বেগম জিয়ার কথাই তুলে ধরেছেন বিএনপির নেতারা। নেতারা মনে করছেন, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার পাশাপাশি ‘শর্তসাপেক্ষ জীবনযাপনের’ কারণে তিনি ঘরবন্দি হলেও আদতে তাকে সামনে রেখেই রাজনৈতিক অবস্থান বিএনপির। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমান সক্রিয় থাকলেও মূল নেতৃত্ব বেগম জিয়ার হাতেই।
জানতে চাইলে বুধবার (২০ জুলাই) স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আমাদের দলের চেয়ারপারসন, তার ভাবাদর্শই আমাদের আদর্শ। তিনি বন্দি থাকার কারণে দলের দৈনন্দিন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন না। সেটা আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সারাদেশে সংগঠনের সাংগঠনিক তৎপরতা সরাসরি তত্বাবধান করছেন।’
বার্তা কক্ষ, ২১ জুলাই ২০২২