ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইনে শাস্তির বিধানের সুপারিশ

নাগরিক ও অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শাস্তির বিধান রেখে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন,২০২২-এর খসড়া মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের জন্য পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

এ সুপারিশের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন,‘মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের দ্রুত আইনি প্রতিকার বা ন্যায়সঙ্গত সমাধানের ব্যবস্থা করা সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য।’

বুধবার ১৩ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবিত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২২’-এর খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আলোচনায় অনেকগুলো সুপারিশের সঙ্গে এ সুপারিশও উঠে আসে। ভূমি সচিব মো.মোস্তাফিজুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সভায় বলেন,‘প্রকৃত মালিকদের স্বত্ব ও দখলভোগ নিশ্চিত করা, অবৈধভাবে ভূমির দখল রোধ ও সংশ্লিষ্ট অপরাধ প্রতিরোধ ও দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিত করা ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য।’

ভূমিমন্ত্রী বলেন,‘নাগরিকের কল্যাণের জন্যই আইন তৈরি করা হয়। আমাদের মূল্যবান ভূ-সম্পদের রক্ষা করার প্রথম দায়িত্ব আমাদের নিজেদের। এজন্য সংশ্লিষ্ট আইন সম্পর্কেও আমাদের সবার স্বচ্ছ ধারণা থাকা উচিত। দেশের নাগরিকরা যেন আইন-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির তথ্য সঠিকভাবে পান সেজন্যও কাজ করে যেতে হবে।’

সভায় সংশ্লিষ্ট আইনের উপর নাগরিক ও অংশীজন থেকে পাওয়া মতামতের উপর ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। আলোচনার মাধ্যমে পাওয়া সুপারিশগুলোর ভিত্তিতে প্রাথমিক খসড়াটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংশোধিত খসড়া প্রথমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পরবর্তীতে খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর মধ্যে দিয়ে আইন প্রণয়নের পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।

উল্লেখ্য, এ বছরের জানুয়ারির ১৯ তারিখে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে এর প্রাথমিক খসড়া (বিল) ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সবার মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয়েছিল।

সভায় জানানো হয়, মতামতের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে দেশের নাগরিক ও অংশীজন থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায় হতে আড়াইশর বেশি সুস্পষ্ট শ্রেণিগত মতামত পাওয়া গেছে। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাপ্ত সংক্ষিপ্ত মতামত হাজারেরও অধিক।

এসব মতামতের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়,তার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তি জমি,খাসজমি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমি দখল সংশ্লিষ্ট অপরাধ ও এর প্রতিকার, প্রতিরোধ,শাস্তির বিভিন্ন দিক। ভূমির অবৈধ ও যথেচ্ছ ব্যবহারে আর্থসামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব।

লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক,ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খান,ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ড.অমিতাভ সরকার, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.মোয়াজ্জেম হোসেন,ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (আইন) মো.খলিলুর রহমানসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ,জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়,জননিরাপত্তা বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ,অর্থ বিভাগ,পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়,গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ,লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়,শিক্ষা মন্ত্রণালয়,পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়,সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ,প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়,বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়,মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়,সেতু বিভাগ,শিল্প মন্ত্রণালয়,রেলপথ বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

১৪ এপ্রিল ২০২২
এজি

Share