নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী নৌযানে ইদানীং কালে সবচেয়ে বেশি অসামাজিক কার্যকলাপের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর এ অসামাজিক কার্যকলাপে বেশীর ভাগই জড়িত হচ্ছে তরুণ-তরুণী ও প্রবাসীদের স্ত্রীরা।
দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলার চোক ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে কিছু বিক্রিত মানসিকতার লোক এ অসামাজিক কাজের জন্য নিরাপদ বাহন হিসেবে বেছে নিয়েছিলো লঞ্চ যাত্রাকে। লঞ্চে যাতায়াতের নামে শহর ও গ্রাম থেকে আসা কপোত-কপোতীরা তাদের অবৈধ কাজের ইচ্ছা হাসিল করতে লঞ্চের কেবিনকে নিরাপদ স্থান হিসেবে দেখছে।
কিছুদিন আগে এসব একাধিক ঘটনার মধ্য থেকে কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। ৭ জুন ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে হাইমচর রুটে চলাচল যাত্রীবাহী এমভি আব-এ জম জম-১ এর কেবিন থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অজ্ঞাত অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধারের ১৬-১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। এমন কি পাওয়া যায়নি কোনো স্বজনের খোঁজ। পরে উদ্ধারকৃত লাশটি ময়নাতদন্ত শেষে চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে আঞ্জুমানের মাধ্যমে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। চাঁদপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের নির্দেশে মডেল থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের এক যৌথবাহিনী চাঁদপুর হয়ে চলাচল কারি যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে অব্যাহত অভিযান শুরু করে।
গত ৮ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ১২ দিনে ধরে পরিচালিত এ অভিযানে কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক তরুণ-তরুণী ও প্রবাসীর স্ত্রীদের আটক করে পুলিশের এ বিশেষ টিম। পরে আটককৃতদের চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা স্বীকার করে, কেউ কেউ মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক, আবার কারো পরকীয়া সম্পর্ক এবং কারো স্বামী প্রবাসে রয়েছে।
পরবর্তীতে এদের অভিভাবকদের ডেকে এনে চাঁদপুর মডেল থানায় ও নৌ-আ। ফাঁড়িতে মুচলেকার মাধ্যমে জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
যাদের অভিভাবক আসেনি এমন অন্তত ২/৩ জোড়া তরুণ-তরুণীকে ২৯০ ধারায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে এএসআই জসীম উদ্দিন ও এএসআই মুনসুর আহমেদ সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে রাত ১০টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সকল যাত্রীবাহী লঞ্চে এ অভিযান পরিচালনা করে থাকেন।
এ অভিযানটি চাঁদপুরের সচেতন মহল প্রশংসার চোখে দেখছেন এবং এ অসামাজিক কার্যকলাপ বিরোধী অভিযান মাঝে মধ্যে পরিচালনা করে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে নদীপথের নিরাপদ যাত্রার মান আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছে সচেতন মহল। দেশের দ্বিতীয় নদীবন্দর হিসেবে চাঁদপুরের সুনামও অক্ষুন্ন থাকবে।
প্রতিবেদক- এম এ শাকূর
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur