অপরাধীদের ক্ষমা নয় বিচার করতে হবে: রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সেই হত্যাকারীদের ক্ষমা করলে নিহতদের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। ট্রাইব্যুনাল করে প্রতিটি হত্যা ও অপরাধের বিচার করতে হবে।

৪ সেপ্টেম্বর বুধবার শাহবাগে পিজি হাসপাতালের পাশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত গোলাম রাব্বানীর বাবার হাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে অনুদান তুলে দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারা বলছেন- আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। গণহত্যাকারীদের কিসের ক্ষমা করতে বলছেন তারা। যদি শেখ হাসিনাসহ অপরাধীদের বিচার না করা হয় তাহলে বাংলাদেশ কবরস্থানে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি- নিরপরাধ কেউ যেন মামলার শিকার না হয়। কিন্তু যারা অপরাধী তাদের ক্ষমা করা যাবে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের কাজ করতে দিন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।

এ সময় বিএনপির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, ডা. জাহিদুল কবির, মেহেবুব মাসুম শান্ত, আরিফুর রহমান তুষার উপস্থিত ছিলেন।

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Share

সর্বশেষ সংবাদ

  • সারাদেশ

ভারতের ৭টি অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত সেভেনথে ১ হাজার ৫ শ ৯৬ কি .মি বা ৯৯২ মাইল আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। এ সাতটি রাজ্যে জাতিগত এবং ধর্মীয় বৈচিত্র্য বিদ্যমান থাকলেও রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের মিল রয়েছে। ভূরাজনৈতিকভাবে এদের অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বৈচিত্র্যময় সামাজিক কাঠামোর কারণে সারা বিশ্বে অতুলনীয়। আসলে এ সাতটি রাজ্য একে অপরের উপর নির্ভরশীল এবং একই সময়ে এ রাজ্যগুলি সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থাও একই বলে মনে করা হয়। তাই এ সমস্ত রাজ্যগুলিকে একত্রে সেভেন সিস্টার বলা হয়েছে। ত্রিপুরার সাংবাদিক জ্যোতি প্রসাদ সাইকিয়া সর্বপ্রথম রাজ্যগুলোকে একত্রে ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে উল্লেখ করেন। স্থানীয় আদিবাসী রাজারা দীর্ঘদিন এসব অঞ্চল শাসন করেন। গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা, বোরো, মিজো আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যগুলোর অধিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল, মিজোরাম, আসাম রাজ্য নিয়ে নাগা স্বাধীন ভূমি গড়ার দাবি তুলছে। সম্প্রতি ভারতের স্বাধীনতা দিবসে মণিপুর রাজ্যে কয়েক হাজার লোক নাগা পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন ভূমির পক্ষে সমর্থন দেয়। একনজরে সেভেন সিস্টার্সের বর্ণনা করা হলো। অরুণাচল প্রদেশ : উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য অরুণাচল রাজ্য। এর দক্ষিণে ভারতের অঙ্গরাজ্য আসাম, পশ্চিমে ভুটান, উত্তর ও উত্তর-পূর্বে চীন এবং পূর্বে মিয়ানমার। অরুণাচল প্রদেশের আয়তন ৮৩ হাজার ৭শ ৪৩ বর্গকি.মি. এবং এর রাজধানী ইটানগর। চীনের তিব্বতের সাথে অরুণাচল প্রদেশের ১ হাজার ১শ ২৯ কি.মি দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। অঙ্গরাজ্যটির উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজীবনে এর বিচিত্র ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ুর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। প্রাণীর মধ্যে বাঘ, চিতা বাঘ, তুষার চিতা, হাতি, লাল পান্ডা এবং হরিণ উল্লেখযোগ্য। এ প্রদেশের উঁচুনিচু, এলোমেলোভাবে বিস্তৃত ঢালযুক্ত ভ-ূ-খণ্ড প্রদেশটিকে দিয়েছে আলাদা মাত্রা। তাছাড়াও এর রয়েছে বিশাল হিমালয়ের উচ্চশৃঙ্গ। আসাম : ১৮২৬ সালে ইয়াণ্ডাব চুক্তির মাধ্যমে আসাম প্রথম ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে স্বাধীনতার পর আসাম রাজ্যের পুনর্গঠন হয়। ভূমি অসমতল হওয়ায় রাজ্যটি অসম। পরবর্তীতে আসাম নামে অভিহিত করা হয়। একে ঘিরে রয়েছে ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর ও অরুণাচল প্রদেশ। এর আয়তন ৭৮ হাজার ৪শ ৩৮ বর্গকি.মি.। আসামের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে। দেশের উত্তর-পূর্ব দিকের প্রবেশদ্বার আসাম ঘন সবুজ বন, উর্বর সমভূমি, বিশালাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ, সুন্দর পাহাড়, নীলাভ পর্বত, বিস্ময়কর চা চাষের উপত্যকা এবং প্রসিদ্ধ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল দ্বারা সমৃদ্ধ। মেঘালয় : মেঘালয়ের রাজধানী শিলং। এটি ভারতের ২১তম রাজ্য। এর আয়তন ২২ হাজার ৪ শ ২৯ বর্গকি.মি.। গারো পাহাড়, খাসি পাহাড়, জয়ন্তিয়া পাহাড়ের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এ রাজ্যটি। ১৯৭০ সালে আসামের দুটি জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মেঘালয়ের জন্ম হয়েছিল। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর বাংলা ভাগ হওয়াকালীন মেঘালয় পূর্ব বাংলা ও আসামের এক নতুন প্রাদেশিক অংশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ছবির মতো সুন্দর একটি রাজ্য মেঘালয়। সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এ মেঘালয়কে বলা হয় ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’। মিজোরাম : মিজোরামের রাজধানী আইজল। এটি উত্তর ও দক্ষিণ লুসাই পার্বত্য জেলাগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। এর আয়তন ২১ হাজার ৮৭ বর্গকি.মি.। এটি দেশের ২৩তম রাজ্য। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের প্রায় ৭শ ২২ কি.মি. এলাকা নিয়ে মিজোরামের সীমানা অবস্থিত। এ রাজ্যের বিশাল পাইনের গুচ্ছ, নান্দনিক প্রাকৃতিক দৃশ্য, বাঁশের ওপর নির্মিত ঘরের গ্রাম দেয় অপূর্ব সৌন্দর্য। খ্রিস্টীয় ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে মিজো উপজাতিরা নিকটস্থ চীন পর্বত থেকে এসে এখানকার স্থানীয় আদিবাসীদের পরাজিত করে বসতি স্থাপন শুরু করে এবং নিজস্ব একটি সমাজব্যবস্থার সূচনা করে। নাগাল্যান্ড : রাজ্যের রাজধানী কোহিমা এবং বৃহত্তম শহর ডিমাপুর। এ রাজ্যের আয়তন ১৬ হাজার ৫ শ ৭৯ বর্গকি.মি।ে এটি ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। ভারতের স্বাধীনতার ঠিক আগের দিন ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট নাগারা নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেও সুফল পায়নি। ১৯৫১ সালের মে মাসে নাগাল্যান্ডে একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে নাগাদের স্বাধীনতার পক্ষে পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ পায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাদের পক্ষ সমর্থন করেনি। অবশ্য ১৯৬৩ সালে আসাম থেকে আলাদা করে ভারতের ১৬তম রাজ্য হিসেবে গঠন করা হয় নাগাল্যান্ড। ত্রিপুরা : ভারতের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য হল ত্রিপুরা। যার আয়তন ১০ হাজার ৪ শ ৯১ কি.মি। এ রাজ্যের রাজধানী হল আগরতলা। রাজ্যটি প্রায় ৩৬ লাখ জনসংখ্যাসহ সপ্তম সর্বনিম্ন জনবহুল রাজ্যের অবস্থানে রয়েছে। এটি পূর্বে আসাম এবং মিজোরাম রাজ্য এবং উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে বাংলাদেশ দ্বারা বেষ্টিত। ত্রিপুরায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির সাথে ১৯টি ভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায় রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী- ত্রিপুরা হল ভারতের অন্যতম শিক্ষিত রাজ্য। যেখানে সাক্ষরতার হার ৮৭ %। ত্রিপুরা ১৯৪৯ সাল থেকে স্বাধীন ভারতের একটি অংশ হয়। ১৯৫৬ সালে রাজ্যটি কেন্দ্রশাসিত একটি অঞ্চলে রূপ নেয়। মণিপুর : মণিপুরের রাজধানী হলো ইম্ফল। এর আয়তন প্রায় ২২ হাজার ৩ শ ২৭ কি.মি । ১৯৯৭ সালে রাজধানীটি পূর্ব ইম্ফল ও পশ্চিম ইম্ফল নামে দুই ভাগে বিভক্ত হয়। ভারতের স্বাধীনতার পর মণিপুর সংবিধান আইন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭২ সালের ২১ জানুয়ারি মণিপুর পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা অর্জন করে। ১৯৪৭ সালে মনিপুর স্বাধীন রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করে। পার্শবর্তী বার্মার আগ্রাসী মনোভাবে ১৯৪৯ সালে রাজা বোধচন্দ্র সিং ভারত অন্তর্ভুক্তির সম্মতিপত্রে সই করেন। ১৯৫৬ সালে এটি কেন্দ্র শাসিত রাজ্য হয়। ১৯৭২ সালে তা পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়। মণিপুরে তিন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বাস: বিষ্ণুপ্রিয়া, মৈতৈ ও পাঙান। বিরল প্রজাতির হরিণ ‘সাংগাই’-এর বসবাসস্থলও এখানে। জওহরলাল নেহেরু মণিপুরকে ‘ভারতের রত্ন’ হিসেবে বর্ণনা করেন। সংকলন সূত্র: ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া ।সম্পাদনা: আবদুল গনি,শিক্ষক,প্রাবন্ধিক ও গণমাধ্যমকর্মী ,চাঁদপুর । Editপ্রেক্ষাপট