অন্য জায়গায় হলে ২-৪ জনকে গ্রেফতার করতে পারতাম

তিনি বলেন, সন্দেহভাজন ওই তিন পুরুষের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ওপর মহলের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। অন্য জায়গায় ঘটনাটি ঘটলে আদালতের অনুমতি নিয়ে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ পরীক্ষা করা যেতো। কিন্তু, সীমাবদ্ধতা আমাদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্য জায়গায় ঘটনাটি হলে এতোদিনে ২-৪ জনকে গ্রেফতার করতে পারতাম। গ্রেফতারের মতো সেই সুযোগ এবং আলামত আমাদের হাতে রয়েছে।

সন্দেহভাজনদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক কিছুই আছে বলার মতো, কিন্তু মামলার তদন্তের স্বার্থে সেগুলো বলা যাবে না। আমরা আমাদের মতো করে কাজ করছি। একটা লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।

এ সময় তিনি ময়নামতি সেনানিবাসের নাম উল্লেখ না করলেও ঘটনাস্থলটি সেনানিবাসের ভেতরে হওয়ায় সেখানে অবাধে প্রবেশাধিকার না থাকা ও সেনা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে অসহায়ত্বের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করেন।

এসময় তিনি সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে হাস্যকর উল্লেখ করে বলেন, প্রথম ময়নাতদন্তের সময় তনুর গোটা শরীরে অসংখ্য কাটা-ছেঁড়া করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ উত্তোলনের পর এসব কাটা-ছেঁড়া দেখা গেছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকলে তনুর শরীরে কেন কাটা-ছেঁড়া করা হলো? আঘাত ছিল বলেই প্রথম ময়নাতদন্তের সময় তার শরীর কাটা-ছেঁড়া করে দেখা হয়।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী বোর্ড প্রধান বলেছেন- দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের সময় মৃতদেহ পচে গেছে বলে তিনি শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা অন্যকিছু দেখতে পাননি। তাহলে তিনি তনুর সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স দেখলেন কিভাবে?

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়ে হত্যাকাণ্ডের এতোদিন পরেও খুনিরা শনাক্ত না হওয়ায় আমরা হতাশ। সিআইডির ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মিথা তথ্য দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী ডাক্তারদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান ইয়ার হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা। গত ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ জেলার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত ৪ এপ্রিল দেওয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।

ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।

১৬ মে তনুর কাপড়ে ৩ পুরুষের শুক্রানু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডি থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আবারও আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। ১২ জুন দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এতেও তনুর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করতে পুলিশকে অধিকতর তদন্তসহ পারিপার্শ্বিক তদন্ত করতে পরামর্শ দিয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড।

এছাড়া মৃত্যুর আগে তনুর সঙ্গে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স বা যৌন সংযোগ হয়েছিল বলা হলেও ধর্ষণের কথা বলা হয়নি। (বাংলাট্রিবিউন)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:০০ এএম, ১৭ জুন ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ

Share