মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া গ্রামের মূত্যু আবু তালেব বিশ্বাসের বড় ছেলে আবুল বাশার(৩৫) তিন বছর বয়স থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। পৃথিবীর অপরুপ প্রাকৃতিক সৌদর্য্য দেখতে পায় না সে। এমনকি ছোট বেলার দেখা কোনো স্মৃতিও মনে নেই তার। কিন্তু গ্রামের পাঁচজন সাধারণ ব্যাক্তির থেকে পিছিয়ে নেই এই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবুল বাশার।
তার পরিবার সুত্রে জানা যায়, তিন বছর বয়সে পানিতে পড়ে আবুল বাশরের দু’চোখ অন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কাজ করার আগ্রহ তার ছোট বেলা থেকে। সে প্রথমে অন্যের সাহাস্য নিয়ে কাজ করতেন পরবর্তিতে একাই সেসব কাজ অনায়াসে করতে পারেন। শ্যালো ইঞ্জিন,নলকূপ মেরামত, তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ, গাছ থেকে নারকেল পাড়া এবং যাবতীয় কৃষি কাজও দ্রুততার সাথে করতে পারেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবুল বাশার।
আবুল বাশারের বাড়ী যেয়ে দেখে যায়, ৫/৭ মাটির হাড়ী মাজায় বেধে তালগাছে ওঠে এবং সর সংগ্রহ করে নেমে আসেন। দুচোখ না থাকলে কি হয়েছে সে গ্রামের সাধারণ ব্যাক্তিদের মতই যাবতীয় কাজকর্ম করে নিজে উপার্জন করে সংসারের চাহিদা মেটাচ্ছেন।
বর্তমানে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি কর্মট আবুল বাশার।
স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, ২৫ বছর আগে অন্ধ বাশারের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। প্রথমে আমি ওকে মেনে নিতে পারিনি তবে পরিবারের চাপে স্বামীর সংসারে আসি। কিন্তু এখন আমার স্বামীকে নিয়ে গর্ব হয়। সে কোনো দিন কারো কাছে হাত পাতেনি কারো সাহায্য নেননি। অন্ধ হয়ে আছে বলে সে করো উপর নির্ভশীল হতে চায়নি। নিজের উপার্জন দিয়েই আমাদের দু ছেলে এক মেয়ের সংসার ভালোভাবেই চলে যায়।’
এলাকাবাসী জানান, ‘আবুল বাশার একটি বিস্ময়কর নাম, কারণ সে যা পারে আমরা তা পারিনা। তার দু চোখ আন্ধ হলেও কারো সাহায্য ছাড়া যাবতীয় কাজ কর্ম করে তার সংসার চালান। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করি।’
মাগুরা থেকে মো. ইমাম হোসাইন : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৫:০০ পিএম, ৬ জুন ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ