চাঁদপুর

অনিয়মে ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীদের চাঁদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ভাংচুর

পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট চাঁদপুর ষোলঘর ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে আন্দোলন করেছে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে তারা আন্দোলন করেছে শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে।

জানা যায়, ২০১০ সালে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট চাঁদপুর ষোলঘর ক্যাম্পাসের যাত্রা শুরু হয়। বেসরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির ৬ বছর পার হয়ে গেলেও এতে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত আসবাবপত্র।

শুধু নামে চলছে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। এখানে সিভিল, ম্যরিন, কম্পিউটার ও ইলেক্টিনিকসহ ৪টি বিভাগ আছে সাইনবোর্ডে দেখানো হয়েছে।

এসব বিভাগের জন্য যেসব শিক্ষা সামগ্রীসহ ম্যাকানিক্যাল আসবাবপত্র দরকার তার কিছুই নেই এই প্রতিষ্ঠানে।

অথচ প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বাড়তি টাকা নিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিপন্ন হওয়ার পথে। কোন আন্দোলন বা সংগ্রাম মানছে না প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম।

এদিকে সিভিল বিভাগের শিক্ষক মোর্শেদকে ঠুনকো অজুহাতে মারধরের ঘটনায় ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষক মোর্শেদ আলম জানায়, ‘প্রতিদিন ন্যায় মঙ্গলবারও ক্লাস চলছিলো। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম তিনি কম্পিউটার সম্পর্কে জানতে আমার এ সম্পর্কে আমরা ধারণা নেই বলি। এতে অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম তিনি উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে মারধর করে। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু আসবাবপত্র ভাংচুৃর করে।’

অন্যদিকে অধ্যক্ষ মো. শাহ আলমের পদত্যাগ শিক্ষার্থীরা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছে দরখাস্ত করেছে।

সেখানে তারা উল্লেখ করেছে, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট চাঁদপুর ষোলঘর ক্যাম্পাসের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অধ্যক্ষ মো. শাহ আলমের অনিয়ম আর দুর্নীতিসহ শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ, অন্যায়ভাবে শিক্ষকদের উপর নির্যাতন করে আসছে। যার কারনে কোনো শিক্ষক এ প্রতিষ্ঠানে থাকতে চায় না।

শিক্ষর্থীদের অন্যান্য সমস্যাবলির মধ্যে রয়েছে : শিক্ষক সংকট, বিভাগের ব্যবহারীক সন্ত্রপাতি সংকট, ক্লাসরুম সংকট, কম্পিউটার শিক্ষক নেই, কম্পিউটার সমস্যা, ক্লাসরুমের মধ্যে হোস্টেল, ব্যবহারিক কোন পরীক্ষা হয় না, ক্লাসে একটি হোয়াইট বোর্ডও নেই, কম্পিউটার র‌্যাব নেই, সিভিল ল্যাব নেই, মেরিন ল্যাব নেই, প্রতিষ্ঠানে যেসব যন্ত্রাপতি রয়েছে, তা দিয়ে কাজ করা যায় না, হোস্টেলে নোংরা পানি, টয়লেটের পাইপের কাছে ক্লাসরুম থাকায় পড়া লেখার কোন পরিস্থিতি নেই, হোস্টেলে শিক্ষকের সাথে ছাত্রের থাকাসহ আরো বিভিন্ন সমস্যা ও অনিয়ম দেখিয়ে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা।

ক’জন শিক্ষর্থী জানায়, এখন মোট শিক্ষার্থী আছে ১শ জনের অধিক। মাত্র ৪জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। যার কারনে এসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুর্খীন হয়ে লেখা পড়া করতে হয়। বার বার বলার পরও প্রতিষ্ঠতা অধ্যক্ষ এসবের কোন ব্যবস্থা নেননি।’

এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম জানান, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব সম্যার সমাধান করা হবে। তবে শিক্ষকরা ইন্ধন দিয়ে শিক্ষার্থীদের দিয়ে যা তান্ডব চালিয়েছে তা খুবই দু:খজনক।’

শিক্ষককের উপর মারধর করার কথা বললে তিনি জানান, ‘যেটা হয়েছে তা সামান্য কারণে হয়েছে। কথা বলার মধ্যে একটু ত্রুটি ছিলো তাই এমনটা হয়েছে।’

অপর শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিভিল শিক্ষক মোর্শেদ আলমকে মারধর করায় মূলত শিক্ষার্থীরা এসব আন্দোলন করে। এখানে শিক্ষকদের কোনো হাত নেই।

এদিকে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট চাঁদপুর ষোলঘর ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা দিনভর আন্দোলন করলেও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শাহ আলম বলেন, প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম। তিনি ব্যবসার কাজে ঢাকা থাকেন। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে খলিলুর রহমান সাজ্জাদ পুরো ঘটনাটি মিমাংসা করে দেয়ার দায়িত্ব নেন।

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:১০ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share