মোশাররফ করিম-বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি ১৯৯৯ সালে এক পর্বের নাটক অতিথি-এ অভিনয়ের মাধ্যমে ছোট পর্দায় আগমন করেন।
ক্যারাম
মোশাররফ করিম অভিনীত জনপ্রিয় একটি নাটক ‘ক্যারাম’। নাটকটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারের পর থেকেই বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়ায়। এর পরপরই আলোচনায় চলে আসেন এই অভিনেতা। নাটকটি নির্মাণ করেছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। কিন্তু মোশাররফ করিমের অভিনয়জীবনে মাইলফলক হয়ে থাকা নাটকটিতে প্রস্তাব পাওয়ার পরও নাকি তিনি অভিনয় করতে চাননি। এ সম্পর্কে মোশাররফ বলেন, ‘ক্যারাম নাটকে যখন অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, তখন আমার অন্য একটি নাটকের শুটিংয়ে থাইল্যান্ডে যাওয়ার কথা। প্রথমবার দেশের বাইরে গিয়ে শুটিং করব, সে সময় সেটাই আমার কাছে অনেক বড় কিছু ছিল। তাই ক্যারাম-এ অভিনয়ের ইচ্ছা ছিল না। পরে আমার স্ত্রী জুঁই বলল, “তুমি ক্যারাম নাটকটি করো। নাটকটি ভালো হবে।” তারপরই মত পরিবর্তন করি। পরের ঘটনা তো সবারই জানা।’
ছাইয়া ছাইয়া
মোশাররফ করিম এই নাটকে একজন হিজড়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এটি পরিচালনা করেছিলেন ইফতেখার আহমেদ ফাহমি। নাটকটি প্রচারের পরপরই সাড়া ফেলে দর্শকদের মধ্যে। কিন্তু অভিনেতা মোশাররফের অভিনয়জীবনের সবচেয়ে অপছন্দের নাটক এই ছাইয়া ছাইয়া। তিনি প্রথম থেকেই এই নাটকে অভিনয় করতে চাননি। কারণ হিসেবে এই অভিনেতা বলেন, ‘নাটকটি এখনো আমার অপছন্দের। হিজড়াদের নিয়ে রসিকতা করার ব্যাপারটা আমার ভালো লাগেনি। অন্য সব দেশে হিজড়াদের যতটা সম্মান দেওয়া হয়, আমাদের এখানে তারা ততটাই উপেক্ষিত। আগেই পরিচালককে বলেছিলাম এই নাটকটি না করলে কি কোনো ক্ষতি হবে? পরিচালক বলেছিলেন, হ্যাঁ হবে। তাই নাটকটি করি। প্রচারের অনেক পরে নির্মাতা ফাহমিও বলেছিলেন নাটকটি তৈরি করা আসলেই ঠিক হয়নি।’
সিকান্দার বক্স
‘সিকান্দার বক্স’ চরিত্রটি মোশাররফ করিমের জনপ্রিয় কয়েকটি চরিত্রের একটি। এর প্রায় সব কটি সিরিজই পেয়েছে কাঙ্ক্ষিত দর্শক সাড়া। এর পর্বগুলো প্রচারের পরপরই নাটকের কিছু সংলাপ দর্শকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। ‘সিকান্দার বক্স’ সিরিজের নাটকগুলো পরিচালনা করেছেন সাগর জাহান। কিন্তু শুরুতে এই চরিত্রেও মোশাররফ করিম অভিনয় করতে চাননি। তাঁর ভাষায়, ‘নাটকটির নাম শুনেই প্রথমে আমার কাছে কেমন যেন একটা নকল নকল গন্ধ লাগে। নাটকটিতে অভিনয় করার কোনো ইচ্ছাই ছিল না আমার। কিন্তু নির্মাতা আমাকে চাইছিলেন। পরে নির্মাতাকে বলি নাটকের নাম পরিবর্তন করতে। কারণ, কোনো নির্দিষ্ট মানুষের নামের নাটকের নাম হবে, বিষয়টি আমার পছন্দ নয়। নাটকের নাম পরিবর্তনের সাপেক্ষে আমি অভিনয়ে রাজি হই। কিন্তু প্রচারের পর জানতে পারি চ্যানেল থেকে নাটকটির নাম সিকান্দার বক্স-ই রেখেছে।’
সেই রকম চা-খোর
একজন ব্যক্তির চা পানের আসক্তি নিয়েই এই নাটকের গল্প। নাটকে মোশাররফ করিমের অভিনয় বেশ সাড়া ফেলে প্রচারের পর। কিন্তু সেই রকম চা-খোর নিয়ে মোশাররফ করিমের মন্তব্য হলো, ‘প্রথমে যখন এই নাটকের গল্প শুনি, তখন মনে হয়েছে এ ধরনের গল্পের কোনো মানে নেই! গল্পে নৈতিকতার কোনো জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলাম না, কোনো বিশেষ বার্তা নেই। পরে আমাকে চিত্রনাট্য দেখতে দেওয়া হলো। চিত্রনাট্য পড়ে মনে হলো, খুব গভীরে না গিয়ে বরং একজন চায়ে আসক্ত মানুষ চা পানের জন্য কী করতে পারে, সেইটাই মুখ্য। ভিন্ন ধরনের কাজ তো হতেই পারে। তাই পরে রাজি হই।’
যমজ
যমজ নাটকে মোশাররফ করিমকে একই সঙ্গে বাবা ও যমজ ভাই—তিনটি চরিত্রে একসঙ্গে অভিনয় করতে দেখা গেছে। নাটকটি রচনা করেছেন অনিমেষ আইচ। একই নাটকে তিনটি আলাদা চরিত্রে মোশাররফকে দেখে দর্শক বেশ বিনোদিত হয়েছে। কিন্তু মোশাররফ নিজেই শুরুতে যমজ নাটকে অভিনয়ের তাগিদ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। মোশাররফ করিম বলেন, ‘তখন প্রচণ্ড গরমের সময়। একটি চরিত্রে দাড়ি লাগাতে হবে, গরমে দাড়ি লাগালে প্রচুর অস্বস্তি লাগে। তা ছাড়া আমি ভয়ই পেয়েছিলাম একসঙ্গে তিনটি চরিত্রে অভিনয়ের কথা শুনে। আমার কাছে মনে হয়েছিল একসঙ্গে তিনটি চরিত্র ফুটিয়ে তোলা খুবই কষ্টের। তাই যমজ নাটকটি আমি করতে চাইনি।’ (প্রথম আলো)
নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১০ : ০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ সোমবার
এইউ