তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেছেন,‘আইন অনুযায়ী সংবাদপত্রের অনলাইন ভার্সন ও সংবাদপোর্টালগুলো টক-শো ও সংবাদ বুলেটিন প্রচার করতে পারে না।’
১২ জুন দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নীতিমালার গেজেটটি তুলে ধরে বলেন,‘সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স নেতৃবৃন্দ আমাদের নজরে এনেছেন যে, কিছু পত্রিকার অনলাইন ভার্সন ও সংবাদপোর্টাল অনলাইনে টক শো,এমন কি কেউ কেউ নিউজ বুলেটিনও প্রচার করছে যার কোনও অনুমতি নেই।
আমরা আইনকানুন ঘেঁটে দেখেছি-অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের দু,চার ও ছয় উপ-ধারার বিধান অনুসারে তারা এ ধরণের কিছু প্রচার করতে পারে না।’
‘ডিজিটাল যুগে সংবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ক্লিপ দিলে আমি মনে করি সেটিতে নিয়মনীতির ব্যত্যয় হয় না,কিন্তু একেবারে টক শো কিংবা নিউজ বুলেটিন প্রচার করা নীতিমালা অনুমোদন করে না’ বলেন ড.হাছান।
তিনি বলেন,‘আমরা কোনও তদন্ত ছাড়াই পত্র-পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোর নিবন্ধন দিয়েছিলাম এ শর্তে যে,পত্রিকায় যে সংবাদ প্রকাশ পায় সেটিই অনলাইনে প্রকাশ পাবে, সেটিও ভিন্ন হওয়ার কথা নয়।’
এটকো এ বিষয়ে তাদের উত্থাপিত মৌখিক আপত্তি লিখিত আকারে দিলে আমরা আইনের ধারা-উপধারা উল্লেখ করে আমরা সংশ্লিষ্টদের জানাবো বলেন সম্প্রচারমন্ত্রী।
প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে বিএনপি ও কিছু সংস্থার নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন,‘এটি আমাদের সরকারের একনাগাড়ে চতুর্দশ বাজেট পেশ,এর আগে আরও ১৩টি বাজেট পেশ হয়েছে।
গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে যখনই বাজেট পেশ করা হয়েছে, তখনই দেখা গেছে কিছু চেনা মুখ, চেনা সংগঠন সবসময় এ বাজেট নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে।’
তিনি আরও বলেন,‘আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে যে বাজেট পেয়েছিলাম সেটি ৮০ হাজার কোটি টাকার কম ছিল। এখন সেই বাজেট আট থেকে নয়গুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকায়।
মানুষের মাথাপিছু আয় ৬শ’ ডলার থেকে প্রায় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ১৩ বছরে ২৮শ’ ২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ২০ শতাংশের নিচে নেমে এবং অতিদারিদ্র্যের হার প্রায় ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। এটি বাস্তবতা।
কিন্তু প্রতিবার বাজেটের পর চিহ্নিত কিছু ব্যক্তিবিশেষ, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা কখনই প্রশংসা করেনি। তাহলে এ সাড়ে ১৩ বছরে দেশটা এতো এগিয়ে গেল কিভাবে—প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।’
এই বাজেট গরিববান্ধব বাজেট উল্লেখ করে ড.হাছান বলেন,‘ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, কৃষিতে, বিদ্যুতে, গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়া, এসবই আপামর সাধারণ মানুষের জন্যে। শুধু তাই নয়, করোনা মহামারি এবং ইউরোপে যুদ্ধের কারণে সেখানকার দেশগুলোর যে মূল্যস্ফীতি, সেই তুলনায় বাংলাদেশে যে কম,সেটি সহজে গুগলেই দেখা যায়, এরপরও মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা বক্তব্য দেয়।
গত ১৩ বছরে একটিবারও সিপিডি বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি আর বিএনপি তো আগের দিনই বিবৃতি লিখে রাখে, বাজেট ঠিকমতো না পড়েই বিবৃতি দেয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংক, আইএফএম, জাতিসংঘ আমাদের প্রশংসা করে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাধারণ মানুষের জন্যই বাজেট করে এবং সে কারণেই দেশটা এগিয়ে গেছে,দারিদ্র্য কমে গেছে।
এসময় বেগম জিয়াকে বিদেশে নেয়ার জন্য বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন,‘বিএনপি নেতারা যখন প্রতিদিন সকাল, বিকাল,সন্ধ্যাবেলা সমাবেশ করে বলতো, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে তিনি বাঁচবেন কিনা সন্দেহ। তখনও বেগম জিয়া দেশে চিকিৎসাতেই সুস্থ হয়েছেন,এবারও তাই।
এ বিদেশ নেয়ার দাবি রাজনৈতিক। রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি থেকেই এ দাবি তারা উপস্থাপন করেন,আগেও তারা এ অপচেষ্টা করেছেন। বেগম জিয়াকে এভাবে তাদের বলির পাঁঠা বানানো উচিত নয়।’
মতবিনিময় শেষে উন্নয়ন গবেষক শামীম আহমেদ সংকলিত ‘শেখ হাসিনা ও ঘুরে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গ্রন্থকার এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাঞ্চন কুমার দে ও মোতাহার হোসেন মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
১৩ জুন ২০২২
এজি