আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, অনলাইনে টিকিট বিক্রির ১০ মিনিটের মধ্যেই সব টিকিট শেষ হয়ে গেছে। ফলে যাত্রীরা স্টেশনের কাউন্টারেই টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন।
কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট কাটতে গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন। ফলে যাত্রীদের ভরসা স্টেশনের কাউন্টার। তবে স্টেশনের কাউন্টারে সব যাত্রীর চাহিদা অনুযায়ী সব গন্তব্যে টিকিট মিলছে না।
শনিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়। স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে একযোগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। ঢাকার আরও চারটি স্টেশন থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তবে টিকিট কাটতে আসা যাত্রীরা কেউ কেউ শুক্রবার রাত থেকে, কেউ কেউ আবার শনিবার সাহরি খেয়েই স্টেশনে চলে আসেন। এতে তাঁদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। তা ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া টিকিট দেওয়া হচ্ছে না।
টিকিট কাটতে লাইনে দাঁড়ানো আমির হামজা নামের এক যাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য ভোর ৩টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে এসেছি। এসে দেখি আমার আগেই প্রায় ২০০-৩০০ জন লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখে সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট কাটার চেষ্টা করি। কোনোভাবেই ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারিনি। ফলে দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনটা টিকিট কাটতে পেরেছি।’
রিয়াদ হাওলাদার নামের আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘অনলাইনে তো টিকিট পাওয়াই যাচ্ছে না। সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি চেয়ার কেনার জন্য এসেছিলাম। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট পাইনি। অনলাইনে সকাল ৮টার দিকে কোনোভাবে ঢুকতে পারলেও ৮টা ১০ মিনিটের দিকে দেখায় সব টিকিট শেষ হয়ে গেছে। টিকিট না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’
কমলাপুর স্টেশনের ১০ নম্বর কাউন্টারের লাইনে চেয়ার নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সকাল রায়কে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ভেবে বসার জন্য তিনি চেয়ার এনেছিলেন।
এদিকে বেশির ভাগ যাত্রী বলছেন, যেহেতু সবাই টিকিটের জন্য রাত থেকেই অপেক্ষা করছেন, তাই সকাল ৮টা থেকে টিকিট না দিয়ে সকাল ৬টা থেকে টিকিট দিলে যাত্রীদের ভোগান্তি কিছুটা কম হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট কাটতে পারছে না, এটা আমরাও শুনেছি। আমরা সহজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের বলেছে, সবাই একসঙ্গে সকালে টিকিট কাটার জন্য ঢুকেছে, ফলে একটা চাপ পড়েছিল। তবে অনলাইনে এবং কাউন্টারের বাইরে কোনোভাবেই টিকিট কাটার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। দেখা যাচ্ছে ৩০০ টিকিটের জন্য ৩ হাজার লোক লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, তাহলে সবাইকে তো টিকিট দিতে পারবে না। এটাই স্বাভাবিক।’
মাসুদ সারওয়ার জানান, আজ ২৭ হাজার ৮৫৩টি টিকিট দেওয়া হবে। এর অর্ধেক কাউন্টারে এবং অর্ধেক অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।