আন্তর্জাতিক

অনবরত ধূমপান করছিলেন ইউএস-বাংলার পাইলট!

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে মার্চে দুর্ঘটনায় পড়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস২১১ ফ্লাইটের পাইলট আবিদ সুলতান ককপিটে অনবরত ধূমপান করছিলেন। দুর্ঘটনা নিয়ে নেপাল সরকারের একটি তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার দাবি করে এ খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট। দুর্ঘটনায় পাইলট সুলতানও নিহত হয়েছিলেন।

নেপালের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ঘণ্টার ওই ফ্লাইটে সুলতান ক্রমাগত ধূমপান করেছিলেন। তবে তিনি তার ধূমপানের অভ্যাস থাকার তথ্য বিমান সংস্থাকে জানাননি। এ থেকে তদন্তকারীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, ককপিটে থাকার সময়ে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।

২০১৫ সালে ইউএস-বাংলায় যোগ দেন সুলতান। বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালানোর আগে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পাইলট ছিলেন তিনি। এই পাইলটের সাড়ে ৫ হাজার ঘণ্টার উড্ডয়নের রেকর্ড ছিল।

তবে তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাইলটের মানসিক চাপে থাকার ইতিহাস রয়েছে। মানসিক মূল্যায়নের পর ১৯৯৩ সালে তাকে বিমানবাহিনীর সক্রিয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে ২০০২ সালের ৯ জানুয়ারিতে তার মানসিক পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়নের পর তাকে ফ্লাইট চালানোর উপযোগী বলে ঘোষণা করা হয়।

পাইলট সুলতানের মেডিক্যাল রিপোর্টের কথা তুলে ধরে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের ধূমপানের অভ্যাস নিয়ে অসত্য তথ্য দিয়েছেন সুলতান। ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত নিজের দেওয়া ঘোষণায় তিনি বলেছেন, কখনোই ধূমপান করেননি। ২০১৫ সালে তিনি লিখেছেন, ধূমপান করতেন কিন্তু ২০১০ সালে ছেড়ে দিয়েছেন। এরপর সর্বশেষ ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের মেডিক্যাল মূল্যায়নে তিনি লিখেছেন, কখনো ধূমপান করেননি তিনি।

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, বিমানটির পাইলট আবিদ সুলতান প্রচণ্ড ব্যক্তিগত মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। আর তার ধারাবাহিক কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বিএস২১১ ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়। এতে আরও দাবি করা হয়েছে, সুলতানকে নিয়োগের সময়ে তার মেডিক্যাল ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখেনি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

নেপালের এই তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাপ্টেনের কোনও প্রবলেম আমরা খুঁজে পাইনি। তার কোনও মানসিক ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল না।’

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ কিউ 8০০ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে চারজন ক্রু ও ৬৭ যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে চারজন ক্রুসহ ২৭ জন বাংলাদেশি, ২৩ জন নেপালি ও একজন চীনা যাত্রী নিহত হন। আহত হন নয়জন বাংলাদেশি, ১০ জন নেপালি ও একজন মালদ্বীপের নাগরিক। (বাংলা ট্রিবিউন)

বার্তা কক্ষ

Share