চাঁদপুর

অধ্যক্ষ ফেন্সি হত্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে যা বললেন এসপি শামসুন্নাহার

চাঁদপুরে আলোচিত অধ্যক্ষ শাহিন সুলতানা ফেন্সী হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংকরেছেন পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার পিপিএম।

বুধবার (২৭ জুন) বিকেল সোয়া ৪টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেসব্রিফিং এ পুলিশ সুপার বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড ঘটার পর আমরা লক্ষ্য করেছি আপনারা (সাংবাদিকরা) বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে তথ্য চেয়েছেন। কিন্তু তদন্ত স্বার্থে আমরা তথ্য দেয়া থেকে বিরত ছিলাম। আমাদের প্রতি আপনাদের কিছুটা হয়তো বা অনুযোগ ছিল। যাইহোক এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে আপনাদের সহযোগিতা চাই। এরইপূর্বে আপনারা জেনেছেন হত্যাকা-ের সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডে নিহত শাহীন সুলতানা ফেন্সীর স্বামী এড. জহিরুল ইসলাম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখা বেগম খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে আমাদের কাছে তথ্য উপাত্ত রয়েছে। এ বিষয়ে আরো তদন্ত হবে। এতে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

পুলিশ সুপার বলেন এ রকম একটি নিষ্ঠুর হত্যাকা-ের সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার হোক। আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই।

জহিরুল ইসলাম আদালতে জানিয়েছেন “স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্যে পুলিশ তাকে বলপ্রয়োগ ও নানা হুমকি দমকি দিচ্ছেন” সাংবাদিকদের এ ধরনের এক প্রশ্নে পুলিশ সুপার জানান, ‘এটি মিথ্যা, আমরা তাকে আইনগতভাবেই জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তিনি হয়তোবা আতংকবোধ করতে পারেন’।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর হোসেন মামুন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, শরীফ চৌধুরী, বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, জিএম শাহীন, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুর রহমান, এটিএন টিভির জেলা প্রতিনিধি পার্থনাথ চক্রবর্তী, ইন্ডিপেন্ডেড টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল রুবেল, সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি ফারুক হোসেন, প্রথম আলেয়ার জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ, বাংলা নিউজের জেলা প্রতিনিধি মাসুদ আলম, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, ফটোর্জানালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তালহা জুবায়ের, দৈনিক মতলবের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কেএম মাসুদ, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বার্তা সম্পাদক আহসান উল্যাহ, দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিনের বার্তা সম্পাদক ইব্রাহিম রণি, নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর জেলা প্রতিনিধি খোকন কর্মকার, আলোকিত চাঁদপুরের বার্তা সম্পাদক মিজান লিটন, চাঁদপুর টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইন, সাংবাদিক কেএম সালাউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম মিয়াজী, , মানিক দাস, শেখ আল মামুন, আশিক বিন রহিম, মাজহারুল ইসলাম অনিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী ও গল্লাক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সি খুনের পর পরই পুলিশ তার স্বামী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখা বেগমকে আটক করে।

গত ৪ জুন নিজ বাসায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে । তার মাথায় মারাত্মক যখম ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিলো।
এ ঘটনায় পরদিন অধ্যক্ষ ফেন্সির ছোট ভাই ফোরকান থান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন । এর পর থেকেই জেল হাজতে রয়েছে অ্যাড জহিরুল ইসলাম ও জুলেখা জহির ।

জহিরুল ইসলাম আনুমানিক চার বছর আগে সবার অগোচরে জুলেখা বেগমকে বিয়ে করেন। জুলেখার আগেও বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে তাঁর দুই সন্তান রয়েছে। অ্যাড. জহিরুল ইসলামের সাথে জুলেখা বেগমের বিয়ে পরবর্তী কন্যা সন্তানের জন্ম হয় ।

অন্যদিকে খুন হওয়া অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সির তিন কন্যা । তিন জনেরই বিবাহ হয়েছে। দুই মেয়ে দেশের বাইরে থাকেন।

এক মেয়ে চিকিৎসক । তিনি দেশে থাকেন।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দুই মেয়েসহ অধ্যক্ষ ফেন্সির পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করে খুনের বিচার দাবি করেন এবং হত্যাকান্ডের সাথে অ্যাড. জহির ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জড়িত বলে দাবি করেন।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদন পড়ুন-

**অধ্যক্ষ ফেন্সি হত্যায় ব্যবহৃত হয় ‘তালা ও ফল কাটার চাকু’

**অধ্যক্ষ ফেন্সি হত্যায় স্বামী ও সতিনকে অভিযুক্ত করে যা বললেন সন্তানরা

** চাঁদপুরে আ’লীগ নেত্রী ফেন্সি খুনের ঘটনায় মামলা : স্বামী ও সতিন আটক    

**চাঁদপুরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী মহিলা লীগ নেত্রী খুন! স্বামী আটক

 

Share