ফরিদগঞ্জ ওয়াপদা মাঠে ২২ শর্তে ২৫ নভেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলার কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয় প্রশাসন। গত ২৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। কিন্তু মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের বেঁধে দেয়া জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ শর্তকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের নির্দেশে অবৈধভাবে লটারির টিকেট বিক্রি শুরুর ২ ঘন্টার মধ্য পুলিশ প্রশাসন তা বন্ধ করে দেয়।
এসর্ম্পকে ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ-আলম সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে লটারির টিকেট বিক্রির দুটি আটো বাইক আটক জব্দ তরা হয়। পরে লটারি বন্ধের শর্তে আটককৃত সেই আটোবাইক গুলো ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, পূনরায় লটারির নামে এ জুয়া চালু করার জন্য মেলা আয়োজকদের মধ্য একটি পক্ষে উঠেপড়ে লেগেছে। ভুক্তোভোগীরা জানায়, এ লটারির নামে জুয়া চালু হলে শিশু থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা পলোভনে পড়ে পুরস্কৃত হওয়ার আশায় মেলার মধ্য অবস্থান করে।
এতে করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হওয়া ছাড়া এলাকায় চুরি ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
মেলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধুলিসাৎ করে না দেয়, সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন।
বিজয় মেলার মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন বিকাল ৩টার মধ্য মেলার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা শর্ত থাকলেও সকাল ১০টার মধ্যেই মেলার দোকানদাররা তাদের দোকান খুলে কার্যক্রম শুরু করে। যার ফলে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ক্লাস বাদ দিয়ে দল বেঁধে মেলায় ভিড় জমায়। মেলার অনুমোদন পত্রে নাগরদোলা চালানোর অনুমতি না থাকলেও মেলায় নাগরদোলা চলছেই।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় স্থাপিত স্টলগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত নির্দশন সমূহের সমাহার থাকতে হবে এমন শর্ত থাকা সত্বেও স্বাধীনতরা নেতৃত্বধানকারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বোব্ধ হবে এমন কোন উপকরণ মেলার স্টলগুলোতে দেখা যায়নি।
মেলার প্রবেশ পথ ও আশপাশের এলাকাতে নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার নির্দেশ থাকলেও তা স্থাপন করা হয়নি।
মেলার আশপাশের এলাকাতে জনগণের চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হলেও মেলার সামনে জনগণের হাটার রাস্তা প্রধান সড়ক দখল করে সেই স্থানেই বেশ কয়েকটি স্টল নির্মাণ করা পথচারী চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।
এছাড়া মেলাতে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা সৌচাগারের ব্যবস্থা করার নির্দেশ থাকলেও নামে মাত্র একটি শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। মেলাতে আয়োজক কর্তৃপক্ষের একটি কন্টোলরুম থাকার নিদের্শনা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন কন্টোলরুমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
কয়েকজন দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেলায় আশানুরুপ দশনার্থীর সমাগম না হওয়ায় তারা মারাত্বক ক্ষতির মূখে রয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে আসা আচারের দোকানদার জানান, তিনি ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে এখানে স্টল নিয়েছেন। কিন্তু আশানুরুপ কোন বিক্রি নেই।
এসর্ম্পকে সহকারী কমশিনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াছিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, মেলার শর্ত ভঙ্গ হয় এমন কিছু পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এক্ষেত্রে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব শহীদ উল্ল্যাহ তপাদার এ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এখন পর্যন্ত মেলা জমে উঠে নাই। অনেক দোকানদাররা চলে যেতে চাইছেন। আর সব নিয়ম মেনে মেলা চালানো কি সম্ভব? অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেলা জমানোর স্বার্থে লটারি চালানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
প্রতিবেদক : আতাউর রহমান সোহাগ, ফরিদগঞ্জ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭ : ০০ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ