চাঁদপুরের রামপুর ইউনিয়নে জঙ্গলে সন্ধানকৃত প্রায় ৫শ বছরের পুরোনো সুলতানি আমলের সমজিদটি দেখতে সেখানে ছুটে চলেছেন উৎসুক দর্শনার্থীরা।
গত কয়েকদিনে এমন একটি পুরনো মসজিদ নিয়ে স্থানীয় এবং জাতীয় পত্র পত্রিকায় স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে এবং দুরদুরান্ত থেকে
ওই মসজিদটি এক নজর দেখার জন্য দর্শনার্থীরা সেখানে ভিড় করছেন। শনিবার ১ সেপ্টোম্বর দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখাযায় মসজিদটির কথা শুনে রাজধানী ঢাকা থেকে ও ক,জন দর্শনার্থী এসেছেন।
শুধু স্থানীয় নয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছে। গত ২৪ আগস্ট স্থানীয় সাংসদ ডা. দীপু মনির নির্দেশে মসজিদটি দৃশ্যমান করার জন্য উদ্যোগ নেয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তারপর মসজিদকে ঘিরে থাকা বাঁশ ঝাড় কাটা হলে মসজিদের বেশিরভাগ অংশ দৃশ্যমান হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ির সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট এবং চিরাচরিতভাবে পূর্বমুখী অবস্থায় আছে। এটির দেয়ালঘেঁষে চারপাশে ৪টি ছোট মিম্বার রয়েছে।
মিম্বারসহ উত্তর-দক্ষিণে বাইরের দৈর্ঘ্য ১৬ ফুট এবং পূর্ব পশ্চিমে বাইরে প্রস্থ ১৫ ফুট। মসজিদটির ভেতরের দের্ঘ্য ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৭ ফুট ৩ ইঞ্চি। মসজিদটিতে ১টি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোঁপ রয়েছে। ধারণা করা যাচ্ছে, পুরো মসজিদটি পোড়া ইট, বালু, চুনা এবং সুরকি দিয়ে নির্মিত হয়েছে।
স্থানীয় বেশ ক,জন বাসিন্দা জানায়, ১৯৯২ সালে এই মসজিদটির গম্বুজের ওপর থাকা একটি জিনগাছ কাটা হয়। আর ওই গাছটি কাটেন আমজাদ হোসেন তালুকদারের স্ত্রী আয়শা বেগম। কাছটি কাটার পর থেকেই আয়শা বেগম কবিরাজি শুরু করেন। তার দ্বারায় অনেক মানুষ বিভিন্ন ভাবে উপকৃত হয়েছে বলেও তারা জানান। গাছ কাটার সাড়ে চার বছর পর তিনি মারা যান। তার পর থেকেই মসজিদটি ওই গাছের শিকরে পুনরায় ঢাকা পড়ে যায়।
আমজাদ হোসেন তালুকদার জানান, পুরো মসজিদটি গাছ, লতাপাতা ও জঙ্গলে ঢাকা পড়ে ছিল। এছাড়া একটি জিনগাছ পুরো মসজিদটি ঢেকে রেখেছিলো। অনেকদিন আগে স্থানীয়রা এই জিন গাছটি কেটে প্রায় ১২/১৩শ মণ লাকড়ি পায়।
মূলত এ গাছটি কাটার পরই এখানে যে বহু পুরোনো ইটের দেয়াল জাতীয় কিছু একটা আছে তা স্পষ্ট হয়। পরবর্তীতে ভেতরের মিম্বর ও গম্বুজ দেখে সবাই নিশ্চিত হয়ে এটি মসজিদ।
দৃশ্যমান হওয়ার পর এটি দেখতে উৎসুক জনতা প্রতিদিন ভিড় করছে। বর্তমানে মসজিদটি সংরক্ষণের দাবি জানান অন্যান্য দর্শনার্থীরাও।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি