চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারস্ত ট্রাক রোডে (সার্কেল অফিসের সম্মুখে) সাততলা ভবনের ছাদে কবুতরের খাঁচার পাশে ছোট্ট রুমটিতে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে সুনীল চন্দ্র দেবনাথ নামের এক বৃদ্ধ দারোয়ান আত্মহত্যা করেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বাদ আসর হাজীগঞ্জ বাজারের ট্রাক রোডে অবস্থিত সাততলা ভবনের ছাদে সুনীল চন্দ্র দেবনাথ (৫১) নামের এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার কিছুক্ষণ পর তার মেয়ে এসে দেখে তার বাবার নিথর দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। মেয়ের আত্মচিৎকারে চারদিক থেকে মানুষ ছুটে আসে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সাবেক কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলার ৫ নং সদর ইউনিয়নের বাড্ডা ছোট যুগি বাড়ির সুনীল চন্দ্র দেবনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন প্রধানিয়া সহ কয়েকজনে কিছুদিন পূর্বে বিক্রি করে যাওয়া বিল্ডিংয়ের দারোয়ানের দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি ভবনের ছাদের মধ্যে একটি রুম ছিল ওই রুমে বসবাস করতেন। দীর্ঘ এক যুগের বেশি এই ভবনে দারোয়ানের চাকরি করে আসছেন।
সুনীল চন্দ্র দেবনাথের জন্য বাড়ি থেকে স্ত্রী খাবার দিতেন। আবার মাঝেমধ্যে মেয়ের বাসা পার্শ্ববর্তী হওয়ার কারণে মেয়ের বাসা থেকে খাবার পাঠাতেন। নিজের ছেলে অন্তর দেবনাথ অথবা মাঝেমধ্যে অটোর ড্রাইভার এনে খাবার দিয়ে যেতেন। আজ নিজের মেয়ে বাবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখে ছুটে এসে দেখেন পাখার সাথে জুলে আছে বাবার নিথর দেহ।
বাবার নিথর দেহ দেখে মেয়ের আত্মচিৎকারে চারদিক থেকে ছুটে আসে পাড়া মহল্লার সকল মানুষ। এরই মাঝে ভগ্নিপতিকে নিহতের মেয়ে ফোন দিয়ে জানায় বাবা না ফেরার দেশে চলে গেছে। তাৎক্ষণিক ছুটে আসে আত্মীয়-স্বজন ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।
স্ত্রী সবিতা রানী বলেন, আমার স্বামী হাজীগঞ্জ ট্রাক রোডের এই সাততলা ভবনের দারোয়ানের চাকরি করতো আজ দুপুর থেকে উনাকে ফোন দিয়ে বারবার উনাকে পাওয়া যায়নি। কি কারনে ওনার মোবাইল বন্ধ ছিল তা আমরা জানিনা। আমি হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সুহিলপুর বাজার ব্রাক অফিসে কর্মরত। আমার এক ছেলে তিন মেয়ে। মেয়েগুলো বিয়ে দিলেও ছেলে ছোট।
একমাত্র ছেলে অন্তর দেবনাথ বলে, আমার বাবার কোন শত্রু নেই। তবে কি কারনে আমার বাবা আত্মহত্যা করেছে আমরা তা জানি না। আমার বাবা বয়স্ক মানুষ। আমার বাবা কখনো কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করতো না। তিনি সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। আমার বাবা এভাবে চলে যাবে আমরা তা মেনে নিতে পারছি না।
এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ইতিমধ্যে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরিবারের স্বজনদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ১৫ মে ২০২৫