চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী জনপদ হাজীগঞ্জ। এখানে রয়েছে- দেশের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম ‘ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স।’ অসংখ্য যুক্তি ও নানাবিধ কারণ সমূহের জন্যেই হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ কমপ্লেক্সর সাথে ‘ ঐতিহাসিক ’ শব্দটি সংযোজন করা হয়েছে। মসজিদটির নির্মাণের পূর্ব প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতার নিরিখে বিচার-বিশ্লেষণ , আলোচনা-পর্যালোচনা,বাস্তবতা ও প্রতিষ্ঠাতার প্রজ্ঞা,চিন্তা-চেতনা, কর্মকুশলতা,গবেষণা, দুরদর্শিতা, বিরড়ল অলংকারিতায়, মেধা-ঘামের সফলতা, মসজিদ কেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ধীরে ধীরে প্রসারতাই ‘ঐতিহাসিক ’ শব্দটি হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের নামের সাথে সংযোজিত হয়েছে- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
জেলার হাজারো মসজিদেরও চেয়ে এর আকারে ,আয়তনে , প্রসারতায়,বেশ কটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হওয়ায়, এবাদত বন্দেগির জন্যে বিশাল ব্যবস্থাপনা ও ওয়াকফ এস্টেটে পরিণত,কর্মসংস্খাপনের সুযোগ থাকার কারণেও এটির নামের সাথে ‘বড় ” শব্দটি সংযোজন হয়েছে ।
মসজিদটির ‘ ঐতিহাসিক ’ ও ‘ বড় ” প্রেক্ষাপট খূুঁজতে আহমদ আলী পাটওয়ারী রহ. ওয়াকফ এস্টেট এর ‘ স্মারকগ্রন্থ ’ পাঠ করতে গিয়ে হালসন পর্যন্ত যতদূর জানা গেছে -এক সময়ে বড় মসজিদ তথা বাজার এলাকাসহ পুরো এলাকাই ছিল হাজা-মজা ডোবা-নালা, খাল- বিল নিয়ে পরিবেষ্টিত নিম্নভূমি। সেকালে বর্তমান বড় মসজিদের মেহরাব সংলগ্ন একটু উঁচু ভূমিতে, পবিত্র আরব ভূমি থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আগত হযরত মকিম উদ্দিন (রহ.) পরিবার-পরিজন নিয়ে আস্তানা বা বসতি স্থাপন করেন।
পর্যায়ক্রমে দু বা চার জন নব্য মুসলমান নিয়ে ‘চৌধুরী ঘাটে’ নামাজ আদায় করতেন। তিনি অত্র অঞ্চলে ইসলামের আবাদ করায় তাঁর স্মৃতির সম্মানে এ গ্রামের নামকরণ হয় ‘ মকিমাবাদ’। হযরত মকিম উদ্দিন (রহ.)’র নাতি, হযরত মনিরুদ্দিন মনাই হাজী (রহ.) সুন্নাতে বাসূল (সা.) হিসেবে ব্যবসায়ী গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান গড়ে তোলেন। মুরিদান ভক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চৌধুরী ঘাটের পরিবর্তে ‘হোগলা হাটে’ নামাজ আদায় করতেন। ‘মনাই হাজী’ সাহেবের হাজী দোকানের সুখ্যাতিতে পর্যায়ক্রমিকভাবে হাজীর হাট, হাজীর বাজার থেকে আজকের হাজীগঞ্জ। হাজীগঞ্জ বাজার।
আল্লাহর অলিগণের সুযোগ্য উত্তরাধিকারী হযরত মনিরুদ্দিন মনাই হাজী (রহ.)-এর দৌহিত্র আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) হযরত মকিমউদ্দিন (রহ.)-এর আস্তানা তথা নিজ মালিকানাধীন বাগান বাড়িতে প্রথমে একচালা খড়, অতঃপর ছন ও গোলপাতা দিয়ে দোচালা মসজিদ নির্মাণ করেন। এক পর্যায়ে আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) তাঁর দেখা স্বপ্ন বাস্তবায়নে বড় আকারে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মকবুলিয়াত লাভের আশায় হজ্বব্রত পালন করতে গিয়ে আল্লাহর মেহেরবানিতে অকবরী হজ্ব লাভ করেন। হুজুর পাক (সা.)-এর পবিত্র রওজা শরীফ জিয়ারতসহ মদিনা, কুফা, বাগদাদ ইত্যাদি স্থানে বুজুর্গানে দ্বীনের মাজার জিয়ারত করেন। আল্লাহর মেহেরবানিতে দৃঢ় মনোবল এবং স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। মসজিদ নির্মাণের জন্যে তিনি নিজ উদ্যোগে ইট ভাটা তৈরি করেন। উৎসাহ-উদ্দীপনা এটিনিয়ে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) হযরত মাও. আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.)-এর পবিত্র হাতে ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন। হযরত মাও. আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.)-এর পবিত্র হাতে মসজিদের উত্তর-দক্ষিণ এবং পশ্চিমের ওয়ালে ‘সূরা ইয়াসিন’ ও ‘সূরা জুময়া’ সন্নিবেশিত করে সকলের হৃদয় মন কেড়েছেন। আলো-বাতির জন্য দৃষ্টিনন্দন ঝাড় বাতির গুচ্ছ ঝুলিয়ে দেন। কারুককার্য খচিত দৃষ্টি নন্দন বড় মসজিদটি জনমনে ব্যাপক সাড়া জাগায়।
মসজিদের ১ম অংশের কাজ শেষে ১৩৪৪ বঙ্গাব্দে উক্ত মসজিদের প্রথম জুমার আজান এবং জুময়ার জামাতের উদ্বোধনী দিবসে প্রখ্যাত ৪ জন মন্ত্রী শুভাগমন করেন। তাঁরা হলেন সর্বজনাব- ১। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ. কে. এম. ফজলুল হক, ২। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ৩। নওয়াব মোশারফ হোসেন, ৪। নওয়াবজাদা খাজা নসরুল্লাহ প্রমুখ।
তাদের আগমনে প্রত্যন্ত এ অঞ্চল ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। ইতিপূর্বে নির্মিত মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব দিকের বিশাল ডোবা-পুকুর ভরাটের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ভরাট কাজ শুরু করে তা শেষ করেন। আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) বাগদাদ শরিফে তাঁর দেখা হযরত বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) মসজিদের খুঁটির আদলে অভ্যন্তরীণভাবে ৭৭ টি আকর্ষণীয় পিলারের উপর মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পিলারের উপর ঝিনুকের মোজাইক বেষ্টিত করেন মসজিদের ভেতর এবং বাইরের ওয়ালে নিখুঁত নক্সার কারুকার্য সম্পাদন করে মসজিদের ২য় অংশের নির্মাণ কাজ শেষ করেন। মসজিদের প্রথম ও দ্বিতীয় অংশ নির্মাণের অংশ হিসেবে, মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব দিকের স-ুউচ্চ মিনার গম্বুজসহ প্রবেশের প্রধান ফটকে বিশাল ‘ শাহী গেইট’ নির্মাণ করে আকর্ষণীয় কারুকার্য সম্পাদন করেন। ৩য় অংশের কাজ শেষ করার মধ্য দিয়ে পুরো মসজিদ নির্মাণের কাজ শেষ করেন।
আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) ধর্ম-কর্ম বিষয়ক কার্যক্রমে মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষার লক্ষ্যে, শিক্ষিত দ্বীনদার মুসুল্লি গড়ে তোলার জন্যে মসজিদের দক্ষিণাংশে ‘মক্তব’ স্থাপন করেন। পরবর্তীতে তা সরিয়ে মসজিদ সংলগ্ন পূর্বাংশে দা. উ. ‘ সিনিয়র মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠা করেন। অতঃপর ভরাট মাঠের উত্তরে মাদ্রাসাটি পুনরায় স্থানান্তরিত হয়। উক্ত মাদ্রাসা উন্নয়নে নতুনভাবে আরো জায়গা ওয়াক্ফ করে বর্তমানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর দ্বীনি শিক্ষার বিদ্যাপীঠ হিসাবে আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ।
মসজিদের পাশাপাশি বাজারের গুরুত্ব না বাড়লে মানুষের আগমনের গতি তেমন একটা বাড়াবে না। সে লক্ষ্যে বাজারের গতি বৃদ্ধির জন্যে মানুষের চাহিদার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেন। স্কুলের বই পুস্তকের জন্যে মৌলভী রফি উদ্দিন আহমেদ সাহেবকে ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরী এবং মুদ্রণ বা প্রিন্টিং কাজের জন্যে হাফিজ আর্ট প্রেস নামে ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেন।
আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) মানুষের চাহিদা বিবেচনায় বাজারে সর্বসাধারণের আগমন ঘটানোর লক্ষ্যে বিভিন্নমুখী ব্যবসায়ী বসিয়ে, তাদেরকে সহযোগিতা দিয়ে, উৎসাহিত করে হাজীগঞ্জ বাজারকে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করেন।
দিনের পর দিন হাজীগঞ্জ তথা বাজারের গুরুত্ব বাড়তে থাকে। এতে করে সর্বস্তরের ব্যবসায় পূর্বাপর সকলের সহযোগিতায় বিভিন্নমুখী বিনিয়োগের কারণে উক্ত বাজারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে কর্মসংস্থানের গতিও বাড়ে। বিস্ময়কর বিষয় যে, আহমাদ আলী পাটওয়ারী সে সময়ে বিদেশ থেকে ‘ জেনারেটর ’ আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে মসজিদ, দোকান সমূহ এবং নিজ বাড়ি আলোকিত করেন। এতে তিনি ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হন।
আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) ধর্ম-কর্ম, শিক্ষা-দীক্ষা, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অত্র এলাকায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগিয়েছেন। সে সময়ে অত্র এলাকায় ইট ভাটা না থাকায় তিনি পাকা মসজিদ নির্মাণের জন্য ‘জাগ দেয়া পদ্ধতিতে’ স্বনির্মিত ইট ভাটায় ইট তৈরি করেন। কারুকার্য খচিত অনন্য অসাধারণ দৃষ্টিনন্দন নিখুঁত কর্ম দিয়ে মসজিদের ‘মেহরাব’ তৈরি করেন। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত দৃষ্টিনন্দন বড় বড় ঝাড় ঝুলিয়ে অর্থাৎ এক এক ঝাড়ে বহু সংখ্যক মোমবাতি বসিয়ে, আলোর গুচ্ছ বাতির ঝাড় দিয়ে নান্দনিক আলোর ব্যবস্থা করেন।
পবিত্র জুময়ার খুতবায় ব্যবহারের জন্যে ‘ কারুকার্য খচিত লাঠিটি ’ হজ্ব থেকে ফেরার সময় নিয়ে আসেন। সে সময় অজপাড়াগাঁয়ের উক্ত মসজিদের প্রথম অংশের ফ্লোরে মার্বেল পাথর বা শ্বেত পাথর ব্যবহার করেন। মদিনা শরীফে মসজিদে নববীর ন্যায় খুতবার আজানের জন্যে নিখুত কর্মকুশলতায় কাঠের উঁচু মঞ্চ মসজিদের দ্বিতীয় অংশে স্থাপন করেন। অত্র অঞ্চলে প্রথম মাইকের ব্যবহার, চেরাগ বাতি এবং হারিক্যানের যুগে বিদ্যুতের জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা করেন। বৈদ্যুতিক আলো, বৈদ্যুতিক পাখা, রমজান উপলক্ষে ‘ সাইরেন ’ প্রভৃতি ওই সময়ের জন্যে ছিলো অত্যাধুনিক। তিনি সে সময়কার অত্যাধুনিক দ্রব্যসামগ্রীর সংযোজন ঘটিয়ে বড় মসজিদ তথা হাজীগঞ্জকে আধুনিকায়নের অনন্য উচ্চতায় উপনীত করেন এবং ঐতিহাসিক পটভূমি রচনা করেন।
বড় মসজিদের ঐতিহাসিক উপাদান
১। বড় মসজিদটি যে গ্রামে অবস্থিত সেই গ্রামের নাম মকিমাবাদ। গ্রামের নামকরণের ইতিহাসের সাথে বড় মসজিদের ইতিহাস স¤পৃক্ত
২। বড় মসজিদটি যে উপজেলায় অবস্থিত সে উপজেলার নাম হাজীগঞ্জ। হাজীগঞ্জ-এর নামের ইতিহাসের সাথে বড় মসজিদের ইতিহাস সম্পৃক্ত
৩। উক্ত মসজিদে তৎকালীন পূর্ব পশ্চিম উভয় পাকিস্তানে, ইসলামী হুকুমতের দাবিতে ৭ দিনব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ওলামা মাশায়েখগণকে নিয়ে ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
৪। সে সময়ে পাক ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘জুমাতুল বিদা’ নামাজের প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাজীগঞ্জ মসজিদ খ্যাতি অর্জন করে।
৫। ইতিহাস প্রসিদ্ধ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীসহ ৪জন মন্ত্রী প্রথম জুমার আজান, একামত ও নামাজ আদায়ের উদ্বোধনী দিবসে উপস্থিত থেকে দোয়া মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে ইতিহাসে স্থান করে দিয়েছেন।
৬। বিশ্ব বরেণ্য ঐতিহাসিক ব্যক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মসজিদে নামাজ আদায় করেন। মসজিদের ‘মুসাফেরখানা কাম হুজরাখানায়’ অবস্থান করে, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করে এলাকাকে ধন্য এবং গৌরবান্বিত করেন।
৭। ঐতিহাসিক ব্যক্তি মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীসহ বহু রাজনৈতিক ব্যক্তি উক্ত মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেন। মসজিদের ‘মুছাফেরখানা কাম হুজরাখানায়’ বসে এলাকার মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন।
৮। ইতিহাস প্রসিদ্ধ ধর্মীয় বুজুর্গানে দ্বীনগণ বড় মসজিদে তশরিফ আনেন। সে সময়ে কারামত আলী জৈনপুরী (রহ.)-এর এবং তাঁর বংশধরগণ বড় মসজিদকে কেন্দ্র করে আসা যাওয়া করায় ইসলাম প্রচারে অত্র এলাকা ধন্য হয়েছে। তাঁরা নামাজ আদায়পূর্বক ইসলাম ধর্মের অমিয় বাণী প্রচার করেন। তাছাড়াও যাঁরা এসেছেন : মাওলানা জাফর আহমাদ ওসমানী থানভী (রহ.), মাওলানা আব্দুল হাই কোরাইশী (রহ.)-ছারছীনা, মাওলানা আবু জাফর ছিদ্দিকী (রহ.) আল-কোরাইশী-ফুরফুরা শরীফ, মাও. হাতেম (রহ.) সাহেব-নোয়াখালী, আল্লামা মাও. হাকিম মো. আব্দুর রউফ দানাপুরী (রহ.), হযরত মাও. আবু বকর ছিদ্দিকী আল-কুরাইশী, মোজাদ্দেদে জামান, মাও. রুহুল আমিন (রহ.), মাও. হোসায়েন আহমাদ মাদানী (রহ.), শায়খুল হিন্দ মাওলানা হামেদ (রহ.) ইবনে মাও. আব্দুল লতিফ (রহ.) সন্দ্বীপী প্রমুখ।
৯। পাক ভারত উপমহাদেশের মধ্যে মসজিদকেন্দ্রিক সুউচ্চ মিনারসহ মফস্বল পর্যায়ে এত বিশাল আকৃতির কারুকার্য খচিত মসজিদটি ঐতিহাসিক হিসেবে সমাদৃত হয়।
১০। ঐতিহাসিক ব্যক্তি কারামত আলী জৈনপুরী (রহ.)-এর উত্তরসূরি হযরত মাওঃ আবুল ফারাহ্ জৈনপুরী (রহ.)-এর পবিত্র হাতে উক্ত মসজিদের পাকা ভিত্তি স্থাপিত হয়। তাঁর পবিত্র হাতে সুরা ইয়াছিন এবং সুরা জুময়া উক্ত মসজিদের পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ দেয়ালে অত্যন্ত কষ্ট করে মুসল্লা কেটে কেটে মনোরম ও আকর্ষণীয়ভাবে লিখা হয়।
১১। বছরে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষের নামাজ এবং নামাজের প্রাসঙ্গিক সেবাসহ বিভিন্নমুখী জনকল্যাণমূলক সেবা কার্যক্রমের জন্যে নিজস্ব উদ্যোগে আয়ের উৎস সৃষ্টি করে, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানমুখী কার্যক্রমে মসজিদটি অনুকরণীয় অবদান রেখে যাচ্ছে।
১২। শতাব্দীকাল ধরে সরকারি অর্থায়ন ছাড়া সেবা সংক্রান্ত বিশাল কার্যক্রম আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেটের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে। সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতায় ধর্ম-কর্ম, শিক্ষা-দীক্ষা, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানসহ বিভিন্নমুখী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং সেবার প্রেক্ষিতে হাজীগঞ্জ আজ এক সমৃদ্ধ জনপদ। হাজীগঞ্জ ধন্য–হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের জন্য।
তথ্য সূত্র : অধ্যক্ষ ড.মো.আলমগীর কবির পাটওয়ারীর রচিত আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ.ওয়াকফ এস্টেট এবং হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স এর ‘ স্মারক গ্রন্থ ’ও নিজস্ব ওয়েবসাইড থেকে ছবি সংকলিত।
সম্পাদনায়-
আবদুল গনি, পর্ব ৪, মার্চ ৪, ২০২৫,
চাঁদপুর।
এজি