চাঁদপুর মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নে খিরাই নদীর ওপর প্রায় সাড়ে ৩শ’ ৫০ ফুট লম্বা কাঠের তৈরি সাঁকো নির্মাণ করেছে স্থানীয়রা। এতে করে কুমিল্লার দাউদকান্দি-মতলবের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সেতু বন্ধন হলো।
আর এলাকাবাসী এ ব্রিজটির নামকরণ করেন ‘লাল ব্রিজ’।
দু’উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক লক্ষ মানুষের যাতায়াতের পথ সুদৃঢ় হলো। তন্মধ্যে মতলব দক্ষিণ উপজেলার চরশিলিন্দা-নারায়নদিয়া, বকচর, পিতাম্বর্দী, কাচিয়ারা, বিশ্বাসপুরসহ আশপাশের প্রায় ১৫ থেকে ২০ গ্রামের মানুষজন এবং কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার প্রায় ১০ থেকে ১৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এ সাঁকো দিয়ে যাতায়াতের সুবিধা ভোগ করবে।
এ কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ হওয়ায় এবং এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হওয়ায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর মাঝে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। সাঁকোটি হওয়ায় এখন থেকে এ অঞ্চলের মানুষ মাত্র দুই ঘন্টায় দাউদকান্দি হয়ে ঢাকা পৌঁছতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) দুপুরে চরশিলিন্দা গ্রামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাঁকোটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ সদস্য মো. আল আমিন ফরাজী।
চরশিলিন্দা গ্রামের চার-পাঁচজন বাসিন্দা বলেন, খিরাই নদীর কারণে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ও দক্ষিণ এবং দাউদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ও আশপাশের আরও দু’একটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যাতায়াতের কষ্ট ছিল। নদী পারাপারের একমাত্র বাহন ছিল নৌকা। ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতেন এলাকার লোকজন। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীর।
তারা আরও জানান, চরশিলিন্দা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নেন ওই নদের ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করার। ওই গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী তরুণ মো. আলম প্রধানকে সাঁকোটি নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এ কাজে এগিয়ে আসেন খোকন প্রধান, মো. জসিম উদ্দিন, আবুল কালাম ও ইদ্রিস মিয়াসহ ওই গ্রামের আরও ২০-২৫ জন তরুণ।
গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটি স্থাপনের কাজ শুরু হয়। মো. আনোয়ার হোসেন নামে ওই গ্রামের একজন কাঠমিস্ত্রির নেতৃত্বে ১০-১২ জন কাঠমিস্ত্রি সেতুর কাজ করেন। সেতু নির্মাণের আনুষঙ্গিক কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দেন অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী।
গত মঙ্গলবার ৩৫০ ফুট দীর্ঘ ও ৮ ফুট চওড়া সাঁকোটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় ১২ লাখ টাকা।
সাঁকোর উদ্যোক্তা প্রবাসী আলম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এ এলাকার লোকজন অনেক কষ্ট করে দীর্ঘদিন নৌকা ও বিভিন্ন উপায়ে এ নদী দিয়ে যাতায়াত করতো। দু’ উপজেলার মাঝখান হওয়াতে কেউই এ নদীর উপর যাতায়াত ব্যবস্থা নির্মাণ করেনি। আমিও আমার এলাকার লোকজন অনেক কষ্ট করে এখান দিয়ে বহু বছর যাতায়াত করতাম। তাই বিদেশ থেকে এসে খোকন প্রধান, জসিম উদ্দিন, আবুল কালাম, ইদ্রিছ মিয়া ও মিস্ত্রি মোঃ আনোয়ার হোসেনসহ গ্রামবাসীর সহযোগিতায় দীর্ঘ ৩মাসে ১২শ’ শ্রমিকের স্বেচ্ছাশ্রমে এ ব্রিজটি নির্মাণ করি। এ ব্রিজ নির্মাণে প্রায় ১২লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
প্রতিবেদক : মাহফুজ মল্লিক, মতলব
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ০৯ : ৩০ এএম, ১ জুলাই ২০১৭,শনিবার
এইউ