চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। উপজেলা সদরে লোডশেডিং তুলনামূলক কম হলেও গ্রামাঞ্চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম কষ্টে আছে মানুষ। বিদ্যুৎ-সংশ্লিষ্টদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
তীব্র গরম আর বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বাসিন্দারা। রাতের বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মতলব দক্ষিণ জোনাল অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৮ মেগাওয়াট। রাতের তুলনায় দিনের বেলায় ভয়াবহ লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এতে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে বিদ্যুত্ না থাকায় চরম কষ্টে আছেন উপজেলার বাসিন্দারা।
উপজেলার মধ্যম দিঘলদী গ্রামের বাসিন্দা মহসিন রেজা জানান, আমার মা ভীষন অসুস্থ । প্রতিদিন উচ্চ রক্তচাপসহ ঘুমের ওষুধ সেবন করে ঘুমাতে হয়। কিন্তু গত কয়েক দিন হলো একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে রাতের বেশি সময় বিদ্যুত্ না থাকায় ঠিকমতো ঘুমাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
প্রতিদিন অন্তত ১৮ ঘণ্টা এলাকাবাসীকে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি তীব্র তাপদাহেও মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় বাসাবাড়ির জিনিসপত্র নষ্ট হওয়াসহ মানুষজনকে তীব্র কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। রাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকার ফলে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। ফলে চলমান এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় চরম বিঘ্ন ঘটছে।
তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে উপজেলার পৌর সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটবাজারগুলোতে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। করাত কল, ধান, আটাসহ মসলা ভাঙার মিলগুলো বন্ধ রয়েছে। নিয়মিত বিদ্যুত্ না থাকায় বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে রক্ষিত ফ্রিজের মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন।
মতলব পৌসভার ঢাকিরগাঁও গ্রামের বিদ্যুত্ গ্রাহক রুহুল কুদ্দুস রানা বলেন, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুত্ না থাকায় বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে মানুষজন রাতে ঘুমাতে পারছে না। এসএসসি পরীক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে পড়ার জন্য টেবিলে বসতে কষ্ট হয়। বিদ্যুত্ না থাকার কারণে রাতে ঘুমাতেও পারি না।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, হঠাৎ করে একটি পাওয়ার স্টেশন বিকল হওয়ায় চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে গেছে।যার ফলে এ উপজেলায় লোডশেডিং বেড়ে গেছে। এ উপজেলায় চাহিদা হচ্ছে ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিন্তু সরবরাহ হচ্ছে ৮ মেগাওয়াট। তাই মতলব দক্ষিণ উপজেলার ছয়টি ফিটারের মধ্যে দেড় ঘন্টা অন্তর বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া পাওয়ার স্টেশনটি চালু হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
প্রতিবেদক: মাহফুজ মল্লিক,২৭ এপ্রিল ২০২৫