চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর ফ্যাসিবাদের সময়ের ভোটার তালিকা দিয়ে কমিটি না করে নতুন সদস্য সংযুক্ত করে পরবর্তীতে নির্বাচন দেওয়ার জন্য সাহিত্য একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মানববন্ধন করেছে চাঁদপুর বৈষম্যবিরোধী লেখক সমাজ।
১৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন দৈনিক চাঁদপুর সময় পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও লেখক-সাহিত্রিক এম ফরিদুল ইসলাম, চর্যাপদ একাডেমীর মহাপরিচালক অ্যাড. রফিকুজ্জামান রনি, হিলশা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, সহকারি পরিচালক সুলতান মাহমুদুল হাসান, কবি মিজানুর রহমান, মোহনা সাহিত্য শিল্পিগোষ্ঠির পরিচালক আব্দুল মাজেদ প্রমূখ।
এসময় বক্তরা বলেন, ‘চাঁদপুরের সাহিত্যিকরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বঞ্চনার শিকার হয়েছে। তাদেরকে চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর সদস্য হিসেবেও রাখা হয়নি। ফ্যাসিবাদের দোসররা সাহিত্য একামেডী দখল করে আছে। আর সেই ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ের করা ভোটার তালিকা দিয়ে সাহিত্য একামেডীর নির্বাচন করা হলে ফ্যাসিবাদকেই পুনর্বাসন করা হবে। তাই অনতিবিলম্বে নতুন করে সদস্য আহ্বান করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পর নির্বাচন দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানাই।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তৈরি করা চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমীর সদস্য ভোটার তালিকায় চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদ মানিক সাহেবের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ মামলা, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার মামলার পলাতক ও জেলখানায় আটক আসামি রয়েছে। এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে এবং গণহত্যার পক্ষে অবস্থানকারী বিতর্কিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে।
বিগত ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তৈরি করা সাধারণ সদস্যদের ভোটার তালিকায় ব্যক্তি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ এবং হিংসাত্মক কর্মকান্ডের কারণে অনেক সাহিত্যকর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিগত দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের মধ্যে ভিন্ন মতের কাউকে সাহিত্য একাডেমীতে সদস্য পদ দেওয়া তো দূরের কথা সাহিত্য একাডেমীতে কোন আচার অনুষ্ঠানেও যেতে দেয়নি। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য থেকে শুরু করে অনেক সাধারণ সদস্যকে কোন কারণ দর্শানো ছাড়া সদস্য পদ থেকে বাদ দিয়েছে। এমনকি বাদ দেওয়ার সদস্যদের নথিপত্র এবং প্রমানাদিও মুছে ফেলেছে। তারা সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত থেকে সাহিত্য একাডেমীকে একচ্ছত্রভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরা দুর্বৃত্ত দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিবাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
এছাড়াও দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার পতনে ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান করে আন্দোলনের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে। এসব অবৈধ বিতর্কিত সদস্যদের বাদ দেওয়ার জন্য নির্দেশিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রমাণাদিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে আবেদন ও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাকরি জেলাপ্রশাসক মহোদয় সেই অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করে সাহিত্য একাডেমির কোন নির্বাচন দিবেন না।’
উক্ত মানবন্ধনে চাঁদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক, কবি ও সাহিত্যিকগণ উপস্থি ছিলেন। এর আগে গত ১৩ মে এ ব্যাপারে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন চাঁদপুরের অবহেলিত সাহিত্যিকগণ।
স্টাফ রিপোর্টার, ১৫ মে ২০২৫