Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / প্রথম আলোর হাজীগঞ্জ প্রতিনিধিসহ দুজনের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা
ICT Act
প্রতীকী ছবি

প্রথম আলোর হাজীগঞ্জ প্রতিনিধিসহ দুজনের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা

প্রথম আলোর হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাহজাহান ও মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হায়দার চৌধুরীর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে (সংশোধীত /২০১৩) এর ৫৭(২) তৎসহ ৫০১/৩৪ ধারায় পর পর দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর মধ্যে একটি গত রোববার চাঁদপুরের শাহরাস্তি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শাহরাস্তি নিজমেহার এলাকার আনোয়ার হোসেন এবং গত ২২ মে হাজীগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ সেন্দ্রা এলাকার প্রফেসর মো.ফরহাদ হোসেন অপর মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার বাদী পক্ষ শাহরাস্তি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শাহরাস্তি নিজমেহার এলাকার আনোয়ার হোসেন ও হাজীগঞ্জ থানায় হাজীগঞ্জ সেন্দ্রা এলাকার প্রফেসর মো.ফরহাদ হোসেন তাদের অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৬ মে প্রথম আলোর ৯ এর পাতায় হাজীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত শিরোনামে সংবাদে হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি চাঁদপুর-৫ আসনের সাংসদ সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলমের অবহেলায় হাজীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি উল্লেখ করে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন। যা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা,সচেতন নাগরিক ও জনগণ মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ হয়েছে বলে উল্লেখ করে সংবাদি মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে ৫৭ ধারায় পৃথক দুজন বাদী একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে পৃথক ২টি মামলা করেন।

হাজীগঞ্জের মো.ফরহাদ হোসেন বলেন, সংসদ সদস্যের পক্ষে এই মামলা করা হয়। কারণ এই সংবাদে আমাদের সাংসদকে হেও প্রতিপন্ন করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে মোবাইলে শাহরাস্তির আনোয়ার হোসেন কোনো কথা বলতে বলেননি।

প্রথম আলোর হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সংবাদে আমার কোনো ব্যক্তিগত মতামত ছিলনা। কাউকে হেও করারও উদ্দেশ্য ছিলো না। আমি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হায়দার চৌধুরীর হাইকোর্টে রিটকৃত মামলার সংবাদ প্রকাশ করার সময় মোজাম্মেল হায়দার চৌধুরীর বরাত দিয়ে প্রথম আলোতে সংসদ সদস্য মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলমের বিষয়টি তুলে ধরি।

‘কিন্তু সংসদ সদস্য মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম এ বিষয়ে পত্রিকায় কোনো প্রকার প্রতিবাদ জানাননি। আমি মনে করি আমাকে অযথা হয়রানি করার জন্য এই মামলা গুলো করা হয়।’

শাহরাস্তি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি আমলে নিয়ে শাহরাস্তি থানা পুলিশকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

শাহরাস্তি থানার ওসি তদন্ত নুর হোসেন মামুন বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো আদালত থেকে আমরা কিছু পাইনি।’

‘হাজীগঞ্জ থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মামলাটি নিয়েছি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের চাপে পড়ে। অন্যকোনো কারণে নয়।’

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে ওসির সাথে কথা বলবো। যাতে করে অযথা সাংবাদিককে কোনো হয়রানি না করা হয়।’

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘একই ধারায় একই অভিযোগে একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরপর দুটি মামলা হওয়া সাংর্ঘষিক।’

‘চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. সেলিম আকবর বলেন, ‘৫৭ ধারা নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ক্ষেত্রে এই আইনে মামলা নেয়ার আগে পুলিশের বিষয়টি যাচাই বাছাই করা প্রয়োজন ছিল।’

এদিকে হাজীগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলায় সাংবাদিক মোহাম্মদ শাহজাহান ও মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হায়দার চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে গত ২৮মে স্থায়ীভাবে জামিন লাভ করেন।

করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫: ০০ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply