Home / বিশেষ সংবাদ / আলহাজ্ব আহমাদ আলী পাটোয়ারী রহ.’র জীবন, সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডে অবদান
আহমদ আলী পাটওয়ারী রহ---

আলহাজ্ব আহমাদ আলী পাটোয়ারী রহ.’র জীবন, সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডে অবদান

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ও জেলার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত দেশের সেরা হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা,ওয়াকিফ ও মোতওয়াল্লী আলহাজ¦ আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ.। তিনি ছিলেন একজন সৎ,আদর্শবান, দুরদর্শিসম্পন্ন,পরমার্ধসহিষ্ণু ও ধর্মভীরু হৃদয়বান মানুষ। তিনি সপরিবারে বর্তমান হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মেহরাব সংলগ্ন স্থানে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসতি স্থাপন করেন। তাঁরই পূর্ব পুরুষ হযরত মনিরুদ্দীন হাজী ওরফে মনাই হাজীর রহ.এর দৌহিত্র আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ.।

জন্ম ,পারিবারিক পরিচিতি ও জীবন যাপন

ক্ষণজন্মা, মানব হিতৈষী ও মোতাওয়াল্লী আলহাজ্ব আহমদ আলী পাটোয়ারী রহ. আনুমানিক বারো শ’ বঙ্গাব্দের শেষের দিকে হাজীগঞ্জের মকিমাবাদ গ্রামের সম্ভ্যান্ত মুসলীম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল-মৌলভী আহসান উল্লা পাটওয়ারী এবং মাতার নাম ছিল-জয়নব বানু। তাঁর মাতামহের নাম ছিল-মনাই হাজী। স্বল্পবয়সেই তিনি পিতৃহীন হন। তাঁর প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু হলে পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তাঁর নাম ছিল-ফজর বানু। তাঁর ঘরে ছিল ২ ছেলে ও ১ মেয়ে। তাঁরা হলেন: মো.আবদুল বারেক পাটওয়ারী, মো. আবদুল মতীন পাটওয়ারী ও আনোয়ারা বেগম। দ্বিতীয় স্ত্রীও মৃত্যবরণ করলে তিনি ফজিলাতুন নেছাকে বিয়ে করেন। তাঁর ঘরে ছিলেন ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে । তাঁরা হলেন : মো.মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী, মো. গোলাম রহমান পাটওয়ারী মো. সোলায়মান পাটওয়ারী, মো. শাহজাহান পাটওয়ারী, মো.ফকরুল ইসলাম পাটওয়ারী, জাহানারা বেগম ও হোসনে আরা বেগম। আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) উত্তরাধিকারী হিসেবে পূর্ব পুরুষের জমি-জমা,সম্পদ-সম্পত্তি,ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে আলহাজ্ব আহমদ আলী পাটোয়ারী রহ. ছিলেন চিন্তাশীল,দূরদর্শী, স্বল্পভাষী,নিরঅহংকারী ব্যাক্তিত্বের অধিকারী।ব্যবহারে ছিলেন অমায়িক । পোশাক-পরিচ্ছদে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাদাসিদে একজন অসাধারণ ব্যাক্তিত্বের মানুয়। পারিবারিক জীবনে ছিলেন স্নেহবৎসল ও সহানূভূতিশীল। বিশাল কর্মময় জীবনে তিনি হাজীগঞ্জের ইতিহাস-ঐতিহ্য গড়ার সৃষ্ঠিশীল প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।

সামাজিক ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে অবদান

তাঁরই প্রতিষ্ঠিত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আজ অন্যতম। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ওয়াকিফ আহমদ আলী রহ.র কর্মকুশলতায় বাংলাদেশ, ভারত তথা এ উপমহাদেশের অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত ঐতিহাসিক এ মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মিত হয়। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করার কারণে উত্তরাধিকার হিসেবে পূর্ব পুরুষের জমি-জমা,সম্পদ-সম্পত্তি, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বত্বাধিকারী মালিক ছিলেন। তিনি বার্মা থেকে আমদানিকৃত তেলের এজেন্সি ও আমদানিকৃত কাঠের আড়ত, চেরাগ বাতির যুগে মোমবাতি ফ্যাক্টরী, সাবানের ফ্যাক্টরী ইত্যাদির ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় স্বনামধন্য ও সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এর পাশাপাশি হাজীগঞ্জ বাজারে বেশ কিছু জায়গায় তিনি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। বাজারের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্যে মানুষের আগমনের চাহিদা বাড়াতে গ্রহণ করেন নানামুখী পদক্ষেপ। সে লক্ষ্যে বাজারের দোকান পাঠ ও অন্যান্য চাহিদা বৃদ্ধির জন্যে গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি অন্যান্য দোকান, আড়ত,গদি ঘরের সম্মানিত ব্যবসায়ীগণের পাশাপাশি তৎকালীন চিকিৎসা সেবার অংশ হিসেবে প্রথমে হোমিওপ্যাথিক ডা.মো.সুলতান আহমদ,অ্যালোপ্যাথিক ডা.মো.ফজলুল হক এবং ইউনানী চিকিৎসায় হাকিম আলী আক্রাম খাঁকে নিজ উদ্যোগে চেম্বার বা দোকান দিয়ে বসার ব্যবস্থা করে তাঁদেরকে উৎসাহিত করেন। তাছাড়াও পবিত্র কোরআন শরীফসহ ধর্মীয় বই-পুস্তক বিক্রয়ের জন্যে আবদুল হালিম মৌলভীকে চাঁদপুরে তাঁর আদর্শ লাইব্রেরি ছেড়ে হাজীগঞ্জে প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি নামে ব্যবসা চালাতে দহায়তা করেন। পাশাপাশি নানা স্বল্প বিনিয়োগকারীকে মাটির কলস, হাঁড়ি-পাতিল এবং ঘরের চালে টালি বা চাঁড়ার দোকান নিয়ে ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেন। স্কুল-মাদ্রসার বই-পুস্তকের জন্যে মৌলভী রফি উদ্দিন আহমেদকে ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরি এবং মুদ্রণ বা প্রিন্টিং কাজের জন্যে হাফিজ আর্ট প্রেস নামে ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেন। এভাবে বাজারের পরিধি ও পরিসর বাড়াতে ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বড় করতে ও ব্যবসায়ীকে লাভবান হতে তিনি নানামুখী উদ্যোগ নেন। যা এ যুগে বিরল উদাহরণ । নিবেদিত প্রাণ এর অধিকারী ওয়াকিফের একমাত্র চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা ছিল স্বপ্নে দেখা মোতাবেক স্বপ্নের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মসজিদ বানানো, মুসল্লীদের আরাম আয়াশ প্রদানে চেষ্টা চারিযেছেন। দেশের অনেক প্রখ্যাত-অলির- আলেম তাঁর কর্মকান্ড পরিদর্শনে মসজিদে এসে মুগ্ধ হতেন।

আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ. মানুষের চাহিদা বিবেচনায় বাজারে সর্বসাধারণের আগমন ঘটানোর লক্ষ্যেই বিভিন্নমুখী ব্যবসায়ী বসিয়ে, তাদেরকে সহযোগিতা দিয়ে, উৎসাহিত করে হাজীগঞ্জ বাজারকে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করেন সারাজীবন। ফলে দিনের পর দিন হাজীগঞ্জ তথা বাজারের গুরুত্ব বাড়তে থাকে।এতে করে সর্বস্তরের ব্যবসায় পূর্বাপর সকলের সহযোগিতায় বিভিন্নমুখী বিনিয়োগের কারণে উক্ত বাজারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে কর্মসংস্থানের গতিও বাড়ে। আজকে সুরম্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোই এর প্রমাণ বহন করে। আরো বিস্ময়কর বিষয় যে, তিান সে সময়ে বিদেশ থেকে জেনারেটর আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে মসজিদ, দোকান সমূহ এবং নিজ বাড়ি আলোকিত করেন। এতে তিনি ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হন। সে সময়ে এসব বিষয়গুলো ছিলো দৃষ্ঠি জাগানো পদক্ষেপ । ফলে উৎসাহিত হয়ে পর্যায়ক্রমে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়। তিনি মসজিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের মোমবাতি হারিকেনের যুগে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত জেনারেটরের মাধ্যমে সন্ধ্যায় দোকানপাট ও বাসা- বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলোর বাতি ব্যবস্থা করায় এ বিশাল অঞ্চলের সৃষ্টি হয় । পাকা মসজিদের জন্য তিনি ইটের ভাটা প্রস্তুত করেন এবং ঐ ইট দিয়ে মসজিদের নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করেন। মোট কথা- তিনি ছিলেন হাজীগঞ্জ বাজারের একজন স্বনামধন্য মুসলীম ব্যবসায়ী। তিনি হাজীগঞ্জ বাজারের বিশাল এলাকায় মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এভাবে তিনি কাজ করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে -মানুষ মসজিদে আসার পাশাপাশি হাজীগঞ্জ বাজারে চলে আসেন ।

ধর্মীয় কর্মকান্ডে মসজিদ ও মাদ্রসা নির্মাণে অবদান

দেশের সেরা হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা,ওয়াকিফ ও মোতওয়াল্লী আলহাজ¦ আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ.্। তিনিই এর প্রতিষ্ঠাতা, প্রথম ওয়াকিফ ও মোতওয়াল্লী । ইচ্ছে করলেই যে কেই প্রতিষ্ঠাতা, মোতওয়াল্লী ও ওয়াকিফ হতে পারেন না। এর পেছনে খাচ-নিয়ত,কর্তব্য পালন,ধৈর্য্য,অর্থ ব্যয় ,শ্রম ,মেধা, সাধনা, মনভাসনা, দানের মানসিকতা ও পরোপকারী নিয়ত থাকা অপরিহার্য। এ সবই ছিল-তাঁর। আনুমানিক তেরশ’ বঙ্গাব্দে তিনিই হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের মেহরাব বা তৎসংলগ্ন স্থান জুড়ে প্রথমে একচালা খড়ের ইবাদতখানা, পরে খড় ও গোলপাতা দিয়ে তৈরি দো-চালা মসজিদ নির্মাণ করেন। এ অবস্থাই হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদটির ভিত্তি সূচনা করেন তিনি। কলকাতা আলিয়া মাদরাসার তৎকালীন হেড মাও.শামসুল উলামা ছফি উল্লাহ’র নিকট হতে পূর্ণাঙ্গ একটি মসজিদ নির্মাণে দোয়া লাভ করেন। অত:পর মাও.আবুল ফারাহ জৈনপুরী রহ. ১৭ আশ্বিন ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে পাকা মসজিদ নির্মাণে যা আজকের হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ এর ভিত্তিস্থাপন করেন। সেই থেকেই হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ। এ ঐতিহাসিক বড় মসজিদর কারণেই আজকের হাজীগঞ্জ বাজারের বিস্তৃতি ও প্রসার এবং জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। হাজীগঞ্জের ‘ আইকন ’ নামে খ্যাত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের কারণে হাজীগঞ্জ ইাতহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ, শিক্ষা,ব্যবসা-বাণিজ্য,ধর্মকর্ম, যাতায়ত -যোগাযোগ, রেল পথ , সড়ক পথ, রাজনীতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,নতুন নতুন অবকাঠামো, সরকারি-বেসরকারি অফিস-মার্কেট, রেস্তোরা,ব্যাংক-বীমা ,শপিংমল -হাসপাতাল, নানামুখী ছোট ছোট ব্যবস্া প্রতিষ্ঠান, শিল্প-সাহিত্য -সংস্কৃতি, কৃষি ও মৎস্য প্রভৃতির উন্নয়ন বেড়েই চলছে। ১৯৩৬ সালের ২১ জানুয়ারি আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ. তৎকালীন বঙ্গীয় ওয়াকফ এস্টেটকে ১.০৯ একর জমি রেজিস্ট্রিকৃত করে দেন এবং আবেদনের পরিপেক্ষিতে ৭ মাঘ ১৩৪২ বঙ্গাব্দে। ইহা বঙ্গীয় ১৯৩৪ সালের ওয়াকফ আইনের ৪৪ ধারায় নথিভূক্ত হয়। এ কাজটি তখন তাঁকে বর্তমান ভারতের কলিকাতা গিয়ে করতে হয়েছে । সে মোতাবেক ওয়াকফ প্রশাসন তাঁেক ওয়াকিফ বা মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগ করেন। এক কথায় এটি আজ মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ।

ঐতিহাসিক মসজিদটির প্রথম মোতওয়াল্লি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রতিষ্ঠাতা আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ.। তাঁর মৃত্যুর পর দায়িত্ব পান তাঁর তৃতীয় ছেলে মো. মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী। তাঁর মৃত্যুর পর তৃতীয় পর্যায়ে মোতওয়াল্লির দায়িত্ব নেন বড় ছেলে ড. মো.আলমগীর কবির পাটওয়ারী। বর্তমানে ড. মো.আলমগীর কবির পাটওয়ারীর বড় ছেলে বিশিষ্ঠ সমাজ বিজ্ঞানী,ঢাবি’র এককালের মেধাবী ছাত্র ও আইনবিদ প্রিন্স শাকিল আহমেদ মোতয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করছেন। সম্ভবত: মসজিদের জন্য যোগ্য খাদেম ও মুসল্লী তৈরি করার লক্ষ্যে তিনি হাজীগঞ্জ দারুল উলুম সিনিয়র মাদরাসা নামের প্রতিষ্ঠানপি নির্মাণ করেন। দ্বীনের খেদমতের কথা ভেবে, মসজিদের নামাজীর সংখ্যা বাড়াতে, মসজিদের কদর সৃষ্টিতে ১৯৩১ সালে আহমদিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। আজকে এটি হাজীগঞ্জ তথা জেলার একটি কামিল মাদ্রাসায় রূপলাভ করেছে। পর্যায়ক্রমে এটি দাখিল,আলিম ও ফাজিল ও কামিলে উন্নীত হয়। প্রায় ২শ জন শিক্ষক -শিক্ষিকা, কর্মচারীর জীবন-জীবিকা পথ সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজার ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে। শুধু তাই নয়- প্রতিবছর এ প্রতিষ্ঠান থেকে আলিম,ফাজিল ও কামিল পাশ করে জীবনকে সাফল্যমন্ডিত করেছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ১৯৪১ সালে ফাজিল, ১৯৯৫ সনে প্রতিষ্ঠাতার দৈহিত্র অধ্যক্ষ ড.আলমগীর কবির পাটোয়ারীর প্রচেষ্টায় কামিল পর্যায়ে উন্নীত হয় এবং তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টায় মাদরাসাটি বর্তমান স্থানে ভৌতিক অবয়বে পুন:স্থাপিত হয়। এটি জেলা তথা হাজীগঞ্জের ধর্মীয় বা ইসলামী শিক্ষার আলোকর্তিকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মানব সম্পদ বির্নিমাণে দেশ ও জাতির উন্নয়নেও অবদান রেখে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তাই যুগের পর যুগ ঐ ক্ষণজন্মা, মানব হিতৈষী ও মোতাওয়াল্লী আলহাজ্ব আহমদ আলী পাটোয়ারী রহ.’র প্রতিষ্ঠানটি তাঁর উত্তসূরিগণ পৃষ্টপোষকতা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখে চলছেন । সম্ভবত : ধর্ম-কর্ম বাড়ানোর চিন্তা করে মসজিদের পাশে আহমদিয়া দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করা বর্তমান হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের। এর অধীনে আরো রয়েছে : আবাসিক ও অনাবাসিক মাদরাসা ও এতিমখানা। মুনিরিয়া নুরানি মাদরাসা, ফোরকানিয়া মাদরাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং। মসজিদের অর্থ জোগানের জন্য স্থায়ী আয়ের উৎস হিসেবে রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মচারী মিলিয়ে কর্মরত আছেন ২শ জন। প্রতিষ্ঠাতা মোতওয়াল্লী আলহাজ্ব আহমদ আলী পাটোয়ারী রহ.এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁরই দৌহিত্র অধ্যক্ষ ড.আলমগীর কবির পাটোয়ারীসহ গভর্নিং বডি নিরলস পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন । সম্পূর্ণ দ্বীনি পরিবেশে বালক-বালিকাদের পৃথক শাখায় পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আলিম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগ চালু আছে।

কর্মময় জীবনের অবসান

সততার অন্যন্য প্রতীক, বিরল ব্যক্তিত্ব, নিরলস কর্মবীর ও নিবেদিত প্রাণ ওয়াকিফ ও মোতওয়াল্লী হাজী আহমদ আলী পাটোয়ারী রহ.একজন কালজয়ী পুরুষ ও হাজীগঞ্জের কিংবদন্তি ও প্রতিষ্ঠাতা আহমদ আলী পাটওয়ারী রহ., ১৩৭৫ বঙ্গাব্দের ১৭ বৈশাখ, ৩০ এপ্রিল ১৯৬৮ সালে রোজ সোমবার মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্য সূত্র : অধ্যক্ষ ড.মো.আলমগীর কবির পাটওয়ারীর সম্পাদনায় আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ. ওয়াকফ এস্টেট এবং হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স এর‘ ‘স্মারক গ্রন্থ ’। সম্পাদনা-সাপ্তাহিক হাজীগঞ্জ এর ভার-প্রাপ্ত সম্পাদক আবদুল গনি। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, চাঁদপুর।

চাঁদপুর টাইমস
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
এজি