Home / শিল্প-সাহিত্য / ‘৭১ গণহত্যা নির্যাতন নির্ঘণ্ট’ গ্রন্থমালায় চাঁদপুরের প্রথম গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
‘৭১ গণহত্যা নির্যাতন নির্ঘণ্ট’ গ্রন্থমালায় চাঁদপুরের প্রথম গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

‘৭১ গণহত্যা নির্যাতন নির্ঘণ্ট’ গ্রন্থমালায় চাঁদপুরের প্রথম গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

লেখক ও গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন রচিত ‘৭১ গণহত্যা নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালায়’ চাঁদপুরের প্রথম গ্রন্থ ‘বড় রেল স্টেশন গণহত্যা’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত ১২ মার্চ শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমীর কবি শামসুর রহমান মিলনায়তনে ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আকাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট আয়োজিত ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালার তৃতীয় সিরিজের দশটি বইয়ের প্রকাশনা ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, শিক্ষাবিদ ড. বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।

বিশিষ্ট লেখক মামুন সিদ্দিকের পরিচালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক শাহরিয়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক তাজুল মোহাম্মদ ও ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আকাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কবি তারিক সুজাত।

সভাপতির বক্তব্যে বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা দুঃখ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে গড়ে তুলিনি। আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যারা টেকনিক্যাল কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আমৃত্যু লড়ে যাব। তিনি বলেন, আমরা ভয় পাই না। আমরা ভয়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। যারা আমাদের ভয় দেখায় তাদেরও আমরা ছাড়ব না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার এবং অবমাননার বিরুদ্ধে আইন করার দাবি জানিয়ে অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের গবেষণার মধ্য দিয়ে বহুমাত্রিকতার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি আমরা। এসব বই চলমান বিচার প্রক্রিয়াতে ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, আমাদের বিচারকদের কথা শুনে মনে হয়, তারা নিরপেক্ষ। একজন বিচারক কি করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে থাকেন? বিচারকদের সত্যের পক্ষে গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। নইলে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না। তাদের প্রত্যেককে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকতে হবে। তিনি বলেন গণহত্যার বিচার মানে সাধারণ হত্যার বিচার নয়, গণহত্যাকারীদের সর্বনিম্ন শাস্তি হতে হবে মৃত্যুদ-।

২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা এবং মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকৃতি অপরাধ আইনের দাবি জানিয়ে মুনতাসীর মামুন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নানা মাত্রা আছে। এখানে শুরু থেকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিজয়কে নিয়ে। এর মাঝে গণহত্যার বিষয়টি আড়াল হয়ে গেছে। বলা ভালো গণহত্যার বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে চাপা দেয়া হয়েছে।

এর আগে বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন রচিত চাঁদপুরের প্রথম গ্রন্থ ‘বড় রেল স্টেশন গণহত্যা’সহ ‘৭১ গণহত্যা নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালায়’ তৃতীয় সিরিজের ১০টি বইয়ের লেখকদের উপস্থিতিতে গ্রন্থগুলো মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং লেখকদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে অনুষ্ঠানের সভাপতি চাঁদপুরের কৃতী সন্তান ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ১৯৭১-এর গণহত্যার ওপর চাঁদপুরের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘বড় রেল স্টেশন গণহত্যা’র লেখক প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেনের হাতে বইটি তুলে দেন।

বইটি সম্পর্কে প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বইটিতে চাঁদপুরের বড় রেল স্টেশনের গণহত্যা ও নির্যাতনের কথা প্রমানিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, চাঁদপুর জেলায় সংগঠিত সকল গণহত্যার ওপর গবেষণা ও গ্রন্থ রচনা চালু রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, তৃতীয় সিরিজের অন্যান্য গন্থগুলোর লেখকরা হলেন, মুনিরা জাহান সুমি, ড. মুনতাসির মামুন, চৌধুরী শহিদ কাদের, বিষ্ণপদ বাগচি, মামুন তরফদার, শহিদ আলম, মোতাহের হোসেন মাহাবুব, সত্যজিৎ রায় মজুমদার, আহমদ শরীফ, আজহারুল আজাদ, মামুর সিদ্দিকি। অনুষ্ঠানে ড. মুনতাসির মামুন বইগুলো ইংরেজীতে অনুবাদ করে আন্তার্জাতিকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার হবে বলে জানান। যাতে করে বিশ্ববাসী একাত্তরের গণহত্যা ও নির্যাতনের কথা জানতে পারে।

‘৭১ গণহত্যা নির্যাতন নির্ঘণ্ট’ গ্রন্থমালায় চাঁদপুরের প্রথম গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

About The Author

আশিক বিন রহিম, চীফ করেসপন্ডেন্ট

 

||আপডেট: ০৯:০৪ অপরাহ্ন, ১৪ মার্চ ২০১৬, সোমবার

এমআরআর