Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা : স্বামী আটক
হাজীগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা : স্বামী আটক

হাজীগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা : স্বামী আটক

চাঁদপুর হাজীগঞ্জ উপজেলার ৪নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাজনাখাল চাঁদপুর গ্রামে স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মিতুকে রোববার (২৩ জুলাই) রাতে গলা কেটে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। এঘটনায়, স্বামী হযরত আলী (২৬) কে আটক করেছে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।

নিহতের মা রাবেয়া বেগমের অভিযোগ বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার করেছে।

স্বামী হযরত আলী চাঁদপুর হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের কীর্ত্তনখোলা গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।

সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে নিহত মিতুর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং ১২। মামলায় অজ্ঞাত আরো ক’জনকে আসামী করা হয়েছে। ওইদিন বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন ও উপ-পরিদর্শক (এস আই) রনিসহ সঙ্গীয় ফোর্স হাজীগঞ্জ উপজেলার চেঙ্গাতলী বাজার থেকে তাকে আটক করে।

হাজীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাবেদুল ইসলাম আটকের বিষয়টি চাঁদপুর টাইমসকে নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত হযরত আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিকে নিহত মিতুর মৃতদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।

নিহত মিতুর মা রাবেয়া বেগম জানান, ২০১৩ সালে আমার মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনের রং নাম্বারে পরিচয় হয় হযরত আলীর। পরিচয় সূত্রধরেই তারা হাজীগঞ্জ কাজী অফিসের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে। বিয়ের পর আমার মেয়ে জানতে পারে কুমিল্লায় তার আরেকটা স্ত্রী আছে এবং তার সাথে যৌতুকের মামলা চলমান।

মিথ্যা কথা বলে মিতুকে বিয়ে করায় শাশুড়ী ও ছেলের বড় বোনের সাথে মিতুর ঝগড়া হতো সব সময়। এক পর্যায়ে সেখানে ৬-৭ মাস সংসার করার পর মিতুকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপদেয় মিতুর শাশুড়ী ও হযরত আলীর বড় বোন এবং সাথে যোগ হয় স্বামী। বিভিন্ন সময় তাকে মারধর করতো।

একপর্যায়ে কুমিল্লার যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলায় হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই সাহেদ হযরত আলীকে আটক করে কোর্টে চালান করে। সেখান থেকে জামিনে এসে এখন গত ২৫ জুন/২০১৬ তারিখে নোটরী পাবলিকের মাধ্যমে দিয়ে বিদেশ চলে যায় হযরত আলী। বিদেশ থেকে আবারো আমার মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতো এবং তার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতো।

গত ৫-৭ দিন পূর্বে হযরত আলী বাহরাইন থেকে দেশে আসে এবং ২২ জুলাই শনিবার মিতুকে নিয়ে চাঁদপুর ঘুরতে যায়। সেখানে সে মিতুকে জানায়, ২৩ জুলাই রোববার রাতে তারা কয়েজন আমাদের বাড়ীতে আসবে। সে অনুযায়ী মিতু আমাকে ঘটনাটি জানালে আমি ঘরে থাকা একটি হাঁস জবাই করে মেহমানদের জন্য অপেক্ষ করতে থাকে।

রাত ৯টায় হযরত আলী মিতুর ফোনে জানায়, তারা তাদের বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়ানো আছে তাদেরকে বাড়ীতে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তখনই মিতু বিষয়টি আমাকে জানায়। মিতু তাদেরকে আনতে রাস্তায় যায়। আমি এশার নামাজ পড়তে ছিলাম। অনেক্ষণ ধরে মিতু ঘরে না ফেরায় আমি মিতুকে ডাকার জন্য ঘর থেকে রাস্তায় যাওয়ার পথে দেখি আমাদরে ঘরের কোনায় মিতুর গলাকাটা মৃত দেহ পড়ে রয়েছে। আমার চিৎকার দিলে আশ-পাশের মানুষ এসে এবং স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের খবর দেয়।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদুল ইসলাম, বলেন রোববার (২৩ জুলাই) রাতে খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবদুল মান্নান ও উপ-পরিদর্শক জসিম উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাত পৌনে ১টার সময় ঘটনাস্থল থেকে গলাকাটা মিতুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদরে জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।

নিহত মিতুর ভাই সুজন বলেন, ‘আমার বাবা নাই। আমরা গরীব। আমার বোনের হত্যাকারী হযরত আলী আমার বোনকে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯ : ২০ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৭, সোমবার
এইউ

Leave a Reply