Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জর মৈশামূড়ায় সরকারি ভূমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ
সরকারি ভূমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ

হাজীগঞ্জর মৈশামূড়ায় সরকারি ভূমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মৈশামূড়া বাজারে ৩০ বছর ধরে প্রায় ৩০ অবৈধ দোকান ঘর নির্মাণ ব্যবসা চালিয়ে আসছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীমহল। সরকারের পরিবর্তন দেখা গেলেও এসব অনিয়মের চিত্র যেন দেখার কেউ নেই।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের মৈশামূড়া বাজারের স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলী আকবর শেখ নতুন একটি অবৈধ দোকান ঘর নির্মানের বিষয়ে বাধা আসার পর জানা যায় ওই বাজারের পূর্বের গড়ে উঠা সকল দোকানেই সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে।

এক সময় মৈশামূড়া বাজারে সরকারি খাস সম্পত্তি ওই এলাকার মানুষ নিজ নিজ প্রয়োজনে ধানের খলা হিসেবে ব্যবহার করতো। কালের বিবর্তনে ওই স্থানে এক জন দুই জনের দেখায় পরবর্তীতে হরি লুটের মত সরকারি সম্পত্তি দখল করে একাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। দীর্ঘ সময় সরকারের পরিবর্তনের সাথে সাথে পূর্বের দখলদারদের হেটিয়ে নতুন সরকার দলীয় লোকজন তাদের কিছু অংশ দখল বাণিজ্যে মেতে উঠে। আর এসব দখলবাজী উপজেলা ভূমি অফিস কিংবা জেলা পরিষদের নজরের বাহিরে ছিল বলে জানা যায়।

আবার মাঝে মধ্যে এক শ্রেণির অসাধু কিচু চক্র অবৈধ কাগজপত্র দোহাই দিয়ে অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে কিছু টাকা উত্তলোন করে পকেট ভারি করেছে।

ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, মৈশামুড়া বাজারটিতে সরকারি জমি রয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে বাজারটির যে ৩০ টি দোকান অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এতে দখল রয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ। বাকি যায়গা পাশ্ববর্তী বিল-খালের উপর রয়েছে। তাছাড়া কিছু অংশ দেখা যায় ধান মৌসুমে খলার জন্য ব্যবহার করে আসছে সেই আদিকাল থেকে।

বর্তমানে বাজারের সড়কের ওপর দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করে থাকেন । ওই চলাচলের সড়কের জায়গা দখল করে বাঁশ, টিন, দিয়ে স্থায়ীভাবে জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলী আকব শেখ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই যায়গাটি ছিল তার বাড়ীর অন্য এক লোক । তার যায়গা জোর করে দখল করেছেন এই সাবেক জনপ্রতিনিধি। নির্মাণ কাজে অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন এসে বাধাঁ দিলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর শেখের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বেলায় এতো বাধা কেন? এখানে যতো দোকান আছে সবই সরকারি খাস সম্পত্তির উপর। আমার মতো এখানকার সকল দোকানদারেরই কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। তবে বর্তমানে সরকারি লিজ নেয়ার জন্য কাজ চলছে।’

চেয়াম্যানের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সাথে যোগাযোগ করে এর সত্যতা পাওয়া যায়। তার পরেই আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যায় মৈশামূড়া বাজারের ৩০টি দোকান রয়েছে যা কিনা গত ৩০ বছর ধরে অবৈধভাবে দখলে রয়েছে।

বর্তমানে মৈশামূড়া বাজারে অবৈধ দোকানের মালিকরা হলেন, মিজান ভূইয়া,সবুজ মিয়া,তাজুল ইসলাম,নজরুল ইসলাম,আলী হোসেন,আলী আজ্জম মিয়া,আইয়ুব আলী সর্দার,বিল্লাল হোসেন,সলিম উদ্দিন,বাবুল শেখ,আলী আকবর শেখ ,সেলিম শেখ, রুহুল আমিনসহ এসব স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
এখানকার ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা গত ৩০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছি।কখনো কোন ভাবে বাধাঁ পাইনি। এখন কেন বৈধ অবৈধ প্রশ্ন আসে। তবে ইতিমধ্যে আমরা সরকারি ভাবে লিজ নেওয়ার জন্য কাগজপত্র জেলা পরিষদে জমা দিয়েছি। গত ২০১০-১১ সালে ততকালীন ইউনিয়ন তফসিলদার শাহাজান শেখের মাধ্যমে সলিম উদ্দিন নামের এখানকার এক ব্যবসায়ীর নামে ইজারা নেওয়ার পক্রিয়া করে যা আর বাস্তবায়ন হয়নি।

এদিকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কিছু নেতা বর্তমানে টোপ পেতে আছে সরকারি লীজ নিয়ে মৈশামূড়া বাজার দখল নিয়ে পূর্বের এসব দোকানদারদের উচ্ছেদ করে সেই স্থান তাদের দখলে নেওয়া। আর এতে করে বড় ধরনের ষংঘর্ষের আশংখ্যা করছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা মো. শেখ সাদেক বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি । সেখানে সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকব সরকারি সম্পত্তির উপর দোকান ঘর উঠার চেষ্টা করে।বর্তমানে কাজটি বন্ধ রয়েছে। তবে পুরো জায়গাটি সরকারি সম্পত্তি কিনা তা ক্ষতি দেখতে আমার ইউনিয়ন তফসিলদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:০০ পিএম, ২০ নভেম্বর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

সরকারি ভূমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ

About The Author

প্রতিবেদক- জহিরুল ইসলাম জয়, হাজীগঞ্জ

Leave a Reply