Home / চাঁদপুর / হত্যা মামলা তুলে নিতে অসহায় পরিবারকে হুমকি
হত্যা মামলা তুলে নিতে অসহায় পরিবারকে হুমকি

হত্যা মামলা তুলে নিতে অসহায় পরিবারকে হুমকি

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ঘাসিপুর গ্রামে দিনমজুর তাফাজ্জল হোসেন মিজি হত্যার আসামীরা এখনো আটক হয়নি। উল্টো তার অসহার পরিবারকে মামলা উঠিয়ে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

বর্তমানে তাফাজ্জল মিজির অসহার পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি হত্যাকান্ডের ঘটনায় দিনমজুর তাফাজ্জলের কলেজ পড়ুয়া একমাত্র ছেলে মো. রুবেল মিজি (২১) বাদি হয়ে পিতা হত্যার বিচার চেয়ে তার চাচাতো ভাই সাইফুল ইসরামকে ১নং ও দূর-সম্পর্কের মামা জমির হোসেনকে ২নং সহ ৫ জনকে আসামীকে করে ৯ জানুয়ারি চাঁদপুর মডেল থানার মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনার বিবরণ ও মামলা এজহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘাসিপুর গ্রামের মৃত জয়নাল মিজির ৭ পুত্রের মধ্যে দিনমজুর তাফাজ্জল হোসেন মিজি ও তার ছোট ভাই খলিলুর রহমান মিজির (কুয়েত প্রবাসী) সাথে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।

এর জের ধরে খলিলুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও তার দূর-সম্পর্কেল শ্যালক জমির হোসেন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাফুজ্জল হোসেন এবং তার পরিবারের উপর বিভিন্ন সময়ে হামলা চালিয়েছে এবং নানান ভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিলো। ঘটনার কিছুদিন আগে তাফাজ্জল হোসেন তার নিজ জমির একটি ডোবায় পানি সেচতে গেলে ছোট ভাইয়ের বৌ বিলকিছ বেগম তাতে বাঁধা দেয়।এতে দু’জনের মাধে কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় খলিলুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও দূর-সম্পর্কের ভাই জমির হোসেন, স্থানীয় সোহাগ গাজী, শাহাদাত হোসেন ও স্ত্রী বিলকিছ বেগমসহ অজ্ঞাত আরো ক’জন মিলে ল তাফাজ্জলের বসত ঘরে হামলা চালায় এবং তাকে ব্যাপক মারধর করে। এই ঘটনায় তাফাজ্জল হোসেন গাজী বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ০৬, দ্রঃ বিঃ ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩০৭/৩২৩/৩৮০/৩৭৯/৪২৭/৫০৬।

মামলা তদন্তে আদালত চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করে।

এদিকে আদালতে মামলা করা আসামী আরো বেপোরোয়াভাবে তাদের হুমকি প্রদান করতে থাকে।

২৭ ডিসেম্বর ঘটনার দিন আনুমানিক দুপুর ৩টায় একটি অপরিচিত মোবাইল থেকে তাফাজ্জলকে ফোন করে বলা হয় ‘চেয়ারম্যান সাহের বিচারের দিন তারিখ ঠিক করবে আপনি বাগাদী চৌরাস্তা চলে আসুন’। তাফাজ্জল মিজি বিষয়টি তার স্ত্রী রঞ্জন বেগম ও বড় ভাই দেলোয়ার মিজিকে অবহিত করে চৌরাস্তা চলে যায়। পরে উল্লেখিত আসামীরা তাফাজ্জল বেধম পিটিয়ে আহত করে অবস্থা আসংখ্য জনক অবস্থায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সিএনজি দুর্ঘটনায় তাপাজ্জল আহত হয়েছে বলে আসামীরা জরুরী বিভাগে তারে রেখে পালিয়ে যায়।

এদিকে বাগাদী ঘাসিপুর গ্রামে গিয়ে এ বিষয়ে মৃত তাফাজ্জলের স্ত্রী রঞ্জন বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই ঘটনার কয়েকদিন আগেও বিলকিস বেগম তার স্বামীকে আদালতে মামলরা করার অপরাধে হত্যা করবে বলেন হুমকি দিয়েছিলো। ‘জমির হোসেন আমার স্বামীতে ফোনে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলছে। আমি এর সু-বিচার চাই’।
পিতার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামীদের কঠিন শাস্তি চেয়ে তাফাজ্জলের ছেলে কলেজ পড়–য়া মো. রুবেল হোসেন ও মেয়ে ফাতেমা বেগম জানায়, ‘আমার বাবা গরিব মানুষ, এজন্য আমার চাচি বিলকিছ বেগম, তার ফুফাতো ভাই জমির হোসেন ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের নিয়ে অনেকবার মারধর করেছে। সর্বশেষ তারা আমার বাবাকে ফোনে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে এই বিচার দাবি করছি’।

একই কথা দাবি জানিয়ে তাফাজ্জলের বড় ভাই আবুল মিজি ও রফিক মিঝি বলেন, আমরা ৭ভাই। বাবা মরার আগে আমাদের জমি নিয়ে কোনো বিরোধ না করতে এবং সব ভাই সকল সম্পত্তি সমান ভোগ করতে বলে গেছেন। বাবা মরে যাওয়ার পরে আমাদের সমস্ত সম্পত্তি সমান ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বিলকিছ বেগম মাত্র সোয়া দুই শতক জমি নিয়ে তাফাজ্জলের সাথে ঝগড়া করতো। সে আমাদের বাঁধা অমান্য করে বাহিরাগত মানুষ এনে আমার ভাইকে মারধর করেছে। আমরা এই হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত ও দোষিদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

তারা আরো বলেন, বর্তমানে আমার মৃত ভাইয়ের পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। উল্লেখিত আসামীরা আমাদেরও নানানভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।

এদিকে হত্যাকান্ডের পর থেকে অভিযুক্ত বিলকিছ বেগম ও তার ছেলে সাইফুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:৫৯ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply